WB By-Poll 2021: ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে না! তৃণমূলের ‘হুমকি’ পেয়ে বিজেপি প্রার্থীর কাছে নালিশ গ্রামবাসীদের

Dinhata: বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল অভিযোগ করেন, শনিবার প্রচারে বেরনোর পর ভেটাগুড়ির সাধারণ মানুষ তাঁকে কাছে পেয়ে জানান, তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে না যান।

WB By-Poll 2021: ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে না! তৃণমূলের 'হুমকি' পেয়ে বিজেপি প্রার্থীর কাছে নালিশ গ্রামবাসীদের
প্রচারে বেরিয়ে অভিযোগ করেন বিজেপি প্রার্থী। (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 23, 2021 | 5:04 PM

কোচবিহার: বিজেপিকে (BJP) ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে না। এমনটাই হুমকি। তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের। ভেটাগুড়ির সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে না যেতে বলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির।

বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল অভিযোগ করেন, শনিবার প্রচারে বেরনোর পর ভেটাগুড়ির সাধারণ মানুষ তাঁকে কাছে পেয়ে জানান, তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে কেউ যেন ভোটকেন্দ্রে না যান। কিন্তু, এলাকার মানুষ ভোট দিতে চান। তৃণমূল নেতাদের হুমকির ভয়ে তাঁরা ভোট দিতে যেতে চাইছেন না। সেক্ষেত্রে উপযুক্ত নিরাপত্তা পেলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন অশোক মণ্ডল।

দিনহাটার বিজেপি প্রার্থীর কথায়, “সর্বত্র ভয় দেখানো হচ্ছে। ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। উদয়ন গুহ বিগত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই কোথাও জল বন্ধ করে কোথাও আলো বন্ধ করে হুমকি দেখানো চলছে। এইভাবে হুমকি দিয়ে কতদিন চলবে! উপনির্বাচনে জিততে ভয় দেখানো শুরু করেছে।” এদিনের প্রচারে, অশোকের সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক মিহির গোস্বামী। যদিও, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক শিবির।

এদিনই বিজেপির প্রচারকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দিনহাটা। সকালেই দলের প্রচারে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে। পদ্ম শিবিরের অভিযোগ, এদিন সকালে প্রচারে বেরতেই এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি ও তাঁর দলবল এসে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। ছিড়ে দেওয়া হয় বিজেপির ফ্লেক্স, ফেস্টুন, পতাকা। আরও অভিযোগ,  ওই তৃণমূল নেতা অকথ্য়ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তাঁর সঙ্গীরা ‘জয় বাংলা স্লোগান’ দিতে শুরু করে। সেইসময়ে বিধায়কের নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

খোদ বিজেপি বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে-র কথায়, “আমরা প্রচারে বেরলেই আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রথম নয়। আজ আমাদের ফেস্টুন পতাকা ছিড়ে দেওয়া হয়েছে। মারধর করার চেষ্টা করা হয়েছে। নেহাত, পুলিশ কর্মীরা ছিলেন বলে আমরা রক্ষা পেয়েছি। যা ফ্লেক্স পতাকা লাগিয়ে গিয়েছি, দেখা যাবে কাল সকালের মধ্যেই তা আর নেই। এইভাবে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। তাও সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করব আপনারা ভয় না পেয়ে  বেরিয়ে আসুন। নির্দিষ্ট দিনে ভোট দিন। গোটা রাজ্যেই আইনের শাসন নেই। আমরা চাই রাজ্যে আইনের শাসন ফিরুক।”

উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার প্রচারে বেরিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন খোদ বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল। যেখানেই অশোক মণ্ডল যাচ্ছিলেন, সেখানেই পিছু পিছু তৃণমূলের লোকজন গিয়ে হাজির হচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এক জায়গায় প্রার্থী অশোক মণ্ডল ও বিধায়ক মিহির গোস্বামী হেনস্তারও অভিযোগ ওঠে। ধাক্কাধাক্কি করার অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতারা। স্বভাবতই দিনহাটার উপনির্বাচনের প্রচার ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। যদিও বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে দলীয় কর্মীর সংখ্যা শাসকদলের কর্মীর সংখ্যায় কম থাকায় বিজেপির লোকজন কোনও প্রতিবাদ ঝামেলায় জড়াননি।

আগে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অশোক মণ্ডল। সেদিন দিনহাটার সদর দফতরে উপস্থিত ছিলেন, জেলা সভানেত্রী  মালতী রাভা, বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তাঁদের সামনেই বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, দিনহাটায় এই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়েই তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ অথবা তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। সম্প্রতি, দিনহাটায় রাজনীতি করলে উদয়ন গুহকে বাদ দিয়ে বা অমান্য করে রাজনীতি করা যাবে না এমন হুমকিই পরোক্ষে জারি করেছিল তৃণমূল।

উদয়ন গুহকে ঘিরে বিতর্কও কোনও নতুন ঘটনা নয়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাদের কথা রাজনৈতিক মহলে অবগত। একাধিকবার, সেই বিরোধ রাজ্য নেতৃত্ব চেয়েও থামাতে পারেনি। সম্প্রতি, দলের একাংশের বিরুদ্ধেই বিক্ষুব্ধ উদয়ন স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত হলেই দল থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন উদয়ন। প্রাক্তন বিধায়কের সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চরমে ওঠে সংঘর্ষের পারদ।

আরও পড়ুন: TMC Leader Murder Case: চঞ্চল-খুনে গ্রেফতার তৃণমূল নিয়োজিত আরও ২ শার্প শ্যুটার!