ইয়াসের আগেই হালিশহরে টর্নেডোর তাণ্ডব, উড়ে গেল ২০০ টি ঘরের চাল, আহত ২৫
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্য়েই দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে এলাকার বিদ্যালয়গুলি। সেখানেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী শিবির। বিপদজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের ওই অস্থায়ী শিবিরেই থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
উত্তর ২৪ পরগনা: আসন্ন ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’কে (Cyclone Yaas) নিয়ে রীতিমতো প্রমাদ গুনছে বাংলা। ঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্য়েই সমস্ত প্রস্তুতি সেরেছে রাজ্য। কিন্তু ইয়াস আছড়ে পড়ার আগেই টর্নেডোর (Tornedo) দাপট দেখল বঙ্গ। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ হালিশহরের প্রসাদ নগর ও বীজপুর থানার বালিভাড়া ইটখোলা এলাকায় আচমকাই ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় এলাকা। উড়ে যায় ২০০ টি বাড়ির টিনের চাল। ভেঙে যায় দরজার জানলার কাচও। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুরে, আচমকা হেলিকপ্টারের ভেঙে পড়ার মতো প্রচণ্ড শব্দে ভরে যায় এলাকা। ভয় পেয়ে অনেকেই বাড়ির বাইরে এসে দেখেন কালো ধোয়ার কুণ্ডলি যেন দলা পাকিয়ে ক্রমশ উপর দিকে উঠছে। কিছু বোঝার আগেই সেই ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ভেঙে যায় ঘরবাড়ি। উড়ে যায় প্রায় ২০০ বাড়ির টিনের চাল। কারো মাথায় টিন পড়ে, কেউ বা রাস্তায় পড়ে গিয়ে, কারোর মাথায় টালি পড়ে মাথা ফাটে। কারোর পা কেটে যায়, কেউ হাওয়ার দাপটে মাটিতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পান। মাত্র কয়েক মিনিট! চোখের নিমেষে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সবকিছু। টর্নেডোর (Tornedo) দাপট কমতেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন পুলিশ ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। এসে পৌঁছন পঞ্চায়েত প্রধানও। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্য়েই দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে এলাকার বিদ্যালয়গুলি। সেখানেই তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী শিবির। বিপদজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের ওই অস্থায়ী শিবিরেই থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। ব্য়বস্থা করা হয়েছে ত্রাণের। এলাকাজুড়ে মাইকিং করে সতর্কতাও জারি করা হচ্ছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার সকালেই ওড়িশা উপকূলের ধামড়া ও চাঁদবালিতে পৌঁছে যাবে ইয়াস। সেখানেই ল্যান্ডফল। বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে চলা ঘূর্ণিঝড় সেদিন বিকেলেই তাণ্ডব চালাবে পারাদ্বীপ এবং সাগরের মাঝ বরাবর বালেশ্বরে। এরপর তা ক্রমশ এগিয়ে যাবে ঝাড়খণ্ডের দিকে। মৌসম ভবনের আশঙ্কা, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাংলার দুই জেলা। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বুধবার পূর্ণিমা এবং ভরা কোটালের কারণে স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে জলের স্তর তুলনায় বেশি থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেখা দিতে পারে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসও।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যে একটা অন্যধরনের প্রশাসন চলছে, আমফান থেকে শিক্ষা নিয়েছি’, ইয়াস মোকাবিলায় তোড়জোড় শুভেন্দুর