কাঁদিয়েছে আয়লা, শিয়রে ইয়াস, দুয়ারে আবারও কান্তি

সাদা স্যান্ডো, সাদা লুঙ্গি, চোখে চশমা, পায়ে চপ্পল। কান্তির (Kanti Ganguly) কোনও বদল নেই।

কাঁদিয়েছে আয়লা, শিয়রে ইয়াস, দুয়ারে আবারও কান্তি
ছবি - TV9 বাংলা
Follow Us:
| Updated on: May 25, 2021 | 10:26 PM

রায়দিঘি: সুন্দরবনের বিপদ, পাশে সেই কান্তি। আরও একটা ঝড়, আবারও দুয়ারে কান্তি। ‘লজ্জা নেই’। মানুষ দূরে ঠেললেও মানুষের থেকে দূরে যেতে পারেন না কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।

সাদা স্যান্ডো, সাদা লুঙ্গি, চোখে চশমা, পায়ে চপ্পল। কান্তির কোনও বদল নেই। বিষের বিশ্বে সংযোজন শুধু মাস্ক। কাঁধে গামছা নিয়ে অবিরাম, অক্লান্ত, অবিশ্রান্ত – এদিক থেকে ওদিক হেঁটে চলেছেন ‘বুড়ো’। অনুমান করার চেষ্টা করছেন মহা প্রলয়ের। পূবের হাওয়া ঢুকছে না তো? সুন্দরবনের যম ওই পূবের হাওয়াই। তার উপর এবার দোসর পূর্ণিমা। মিশমিশে কালো অন্ধকার। ঝাউবনে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। আকাশে রাক্ষুসে মেঘের আড়ালে চাঁদের উঁকি। আরও যেন চিন্তা বাড়াচ্ছে।

বছর ১২ আগে, এমনই এক সন্ধ্যায়ই তো তছনছ হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবন। নুইয়ে পড়েছিল সবুজের অভয়ারণ্য। হারিয়ে গিয়েছিল ম্যানগ্রোভ। বিধ্বংসী আয়লার স্মৃতি ফেরাবে না তো এই ইয়াস? চিন্তা আরও বাড়ছে।

আরও পড়ুন: বাংলা থেকে মুখ ফেরাচ্ছে ইয়াস, বাঁক নিয়ে আরও দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল

আপনার কীসের এত চিন্তা? ফেসবুকে রটে গিয়েছে, ‘হেরেও লজ্জা নেই’। কান্তির জবাব, “কীসের লজ্জা? তুমি তো সাংবাদিক। এটা তোমার পেশা। আমি কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, এটা আমার নেশা। মানুষের পাশে থাকার নেশা। আমি চাই না, এই নেশা থেকে আমার মুক্তি হোক।” বর্ষীয়ান বাম নেতার পাল্টা প্রশ্ন, “আর কি জানতে চাও বল।” আপনি আয়লা দেখেছেন, আমফান দেখেছেন। এবার কী বুঝছেন? উত্তরে স্পষ্ট, ‘মাটির মানুষে’র মাথায় এখন স্রেফ মাটির চিন্তা। পূবের হাওয়া ঢুকলে মাটির বাঁধ ভাঙবে। সুন্দরবনের সেটাই বিপদ। আপনি কী সেই পূবের বিষাক্ত হাওয়া অনুভব করছেন? কান্তির জবাব, “এখনও হাওয়া তো বেশি নয়। ৮০ থেকে ১০০ (কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা) হলে বাঁধ ভাঙবে। জলোচ্ছ্বাস হবে। জল ঢুকবে উপকূলবর্তী এলাকায়।”

আরও পড়ুন: রেড ভলিন্টিয়ার্সদের পাশে বিজেপি বিধায়ক! করোনাকালে অন্য ছবি আলিপুরদুয়ারে

এই ঝড় বাদলের দিনে আপনি কোথায় আছেন? কীভাবে থাকছেন? কান্তির উত্তর, “রায়দিঘিতে। নদীর পাড়ে আমি যেখানে আছি সেখানে ২০০ লোকের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। থাকছে তাঁরা।”

মাসখানেকও তো হয়নি, ভোটে হেরেছেন… কথা থামিয়ে ‘কান্তি বুড়ো’র জবাব, “মানুষ ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আমরা মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। মানুষ ঠিক কাজ করেছে।” সঙ্গে সংযুক্ত করলেন, “মানুষই মানুষকে বাঁচাতে পারে। মানুষের পাশে থাকাই আমার নেশা। আমার এই নেশামুক্তি কোনও দিনই ঘুঁচবে না। এটাই আমার প্রাণশক্তি, এটাই আমার আদর্শ।”

 

♦♦♦ ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় নবান্নের তরফে প্রকাশ করা হল হেল্পলাইন নম্বর। ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে যে কোনও বিপদে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে ১০৭০ এবং ০৩৩-২২১৪৩৫২৬।