Balurghat: SFI ছাড়তে চাওয়ায় নগ্ন করে ছবি তুলে ভাইরাল করার হুমকির অভিযোগ, থানায় ছাত্র
Balurghat: ছাত্র সংগঠন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলায় ওই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল এসএফআই ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই ছাত্রকে নগ্ন করে সেই ছবি মোবাইলে তোলা হয় বলেও অভিযোগ। অন্য কোথাও গেলে পরে সেই ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হবে ওই ছাত্রকে হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল করা হয় বলে অভিযোগ৷
বালুরঘাট: উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্র সংগঠন এসএফআই ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বালুরঘাটের এক ছাত্র। ছাত্র সংগঠন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলায় ওই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল এসএফআই ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই ছাত্রকে নগ্ন করে সেই ছবি মোবাইলে তোলা হয় বলেও অভিযোগ। অন্য কোথাও গেলে পরে সেই ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হবে ওই ছাত্রকে হুমকি ও ব্ল্যাকমেইল করা হয় বলে অভিযোগ৷ এই ঘটনা জানাজানি হতেই বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই ছাত্র। অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। যদিও পুরো বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে এসএফআইয়ের জেলা নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, ওই নির্যাতিত ও আক্রান্ত ছাত্রের বয়স ১৮ বছর। বাড়ি বালুরঘাট শহরেই। তিনি সদ্য কলেজে ভর্তি হবেন। বছর দুয়েক ধরে এসএফআই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তিনি এবছর উচ্চমাধ্যমিকে ৮১ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চান। এনিয়ে বেশ কিছুদিন আগে জেলা নেতৃত্বকেও জানিয়েছিলেন।
অভিযোগ, এরপর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ছাত্রকে তাঁদের সংগঠনের এক ছাত্র নেতা বাড়িতে ডাকেন। সেখানেই ওই ছাত্রকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ৷ তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ ও নগ্ন করে ছবি তোলা হয় বলে অভিযোগ। বলা হয় এসএফআই ছাড়লে তাঁর ছবি ভাইরাল করে দেবেন তাঁরা। ভয় নিয়েই ওই ছাত্র বাড়ি ফেরেন।
শুক্রবার এনিয়ে বালুরঘাট থানায় মোট তিন জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্র। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সেই ছবি বা ভিডিয়ো কোন মোবাইলে তোলা রয়েছে, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে এই বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
এবিষয়ে আক্রান্ত তথা অভিযোগকারী ওই ছাত্র বলেন, “আমি দীর্ঘদিন এসএফআই ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি বাইরে পড়াশোনা করতে যেতে চাই। তাই আমি এসএফআই ছেড়ে দেওয়ার জন্য সিনিয়র কয়েকজনকে জানিয়েছিলাম। আমাকে ওঁদের একজন বাড়িতে ডেকেছিলেন। সেখানে প্রথমে কয়েকজন মিলে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আমাকে মারধর করেন। এরপর আমার জামা কাপড় খুলে নগ্ন ভিডিয়ো তোলে। আমাকে ওরা হুমকি দেয়, আমি যদি এসএফআই-ছেড়ে দেয়, তাহলে আমার নগ্ন ভিডিয়ো ভাইরাল করে দেবে। আমি মামলা করায় এখনও লাগাতর হুমকি দিচ্ছেন।”
এবিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অমরনাথ ঘোষ বলেন, “একটা ছেলে যার মাত্র ১৮ বছর বয়স, তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো তুলে ব্ল্যাকমেইল করার ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানাই। বিগত দিনেও আমরা এসএফআই-এর এমন ঘৃণ্য কাজ করতে দেখেছি। ওই ছাত্রকে বর্তমানে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যে দলই সে করুক না কেন, আমরা তার পাশে রয়েছি।”
এবিষয়ে এবিভিপির বালুরঘাট নগর সভাপতি সব্যসাচী রায় বলেন, “এটি অন্য রাজনৈতিক দলের বিষয়। তবে এটা সামাজিক বিষয়। এই ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
যদিও অভিযুক্তদের মধ্যে অভিজিৎ মণ্ডল নামে এসএফআইয়ের এক ছাত্র নেতা বলেন, “এই অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওই ছাত্র এসএফআই করতেন। তিনি এসএফআইয়ের এক ছাত্রনেতাকে মিথ্যা নেশার কেসে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন। তার প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু ও এখন তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছে।”
অন্যদিকে এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, “একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।”