Brick Industry: জিএসটি বৃদ্ধির প্রতিবাদ, আগামী মরসুমে ইটভাটা বন্ধের ডাক
আগামী ২০২২ -২৩ অর্থবর্ষে দেশ জুড়ে ইট ভাটা বন্ধের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ব্রিকস্ অ্যান্ড টাইলস্ ম্যানুফ্যাকচারার্স ফেডারেশন। ইটভাটা বন্ধের ডাককে সমর্থন করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর ব্রিকস্ ফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বালুরঘাট: ইট ভাটায় অতিরিক্ত জিএসটি লাগু করা হয়েছে। শ্রমিক মজুরিতেও ১২ শতাংশ জিএসটি লাগু করা হয়েছে। এছাড়াও একাধিক ক্ষেত্রে জিএসটি লাগু এবং তা বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে আগামী ২০২২ -২৩ অর্থবর্ষে দেশ জুড়ে ইট ভাটা বন্ধের ডাক দিয়েছে অল ইন্ডিয়া ব্রিকস্ অ্যান্ড টাইলস্ ম্যানুফ্যাকচারার্স ফেডারেশন। ইটভাটা বন্ধের ডাককে সমর্থন করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর ব্রিকস্ ফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। রবিবার বিকেলে বালুরঘাট স্টেডিয়াম একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে ইটভাটা বন্ধের ডাকে সব রকম ভাবে সামিল হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ইটভাটার মালিকরা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ইটভাটা মালিকদেরও সাফ বক্তব্য, তাঁদের দাবি পূরণ না হলে আগামী মরশুমে তারাও জেলায় ইটভাটা বন্ধ করে দেবেন।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ৬৫টি ইটভাটা রয়েছে। এই ভাটাগুলির সাথে লক্ষাধিক পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন। মূলত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় নভেম্বর মাস থেকে ইট তৈরির কাজ শুরু হয়। যা আগামী মে জুন মাস পর্যন্ত চলে। এই ইটভাটা থেকে সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ১২ কোটি ইট উৎপাদন হয়। এই মরশুমে প্রত্যেকটি ভাটায় হাজার হাজার শ্রমিক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছে। তারা কার্যত এই কাজ করেই সারা বছর রোজগার করে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিকল্প কোন শিল্প বা কাজ নেই। যার ফলে ওই শ্রমিকরা একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে ইটভাটার মালিকরা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইটভাটার ক্ষেত্রে জিএসটি ৫ থেকে লাফিয়ে ১২ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। এ ছাড়াও ভাটায় যে সমস্ত শ্রমিক কাজ করে তাতেও জিএসটি বসানো হয়েছে। শ্রমিক চুক্তির উপরে ১২ শতাংশ জিএসটি ধার্য করা হয়েছে। কয়লা নিয়েও আগে থেকেই ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। জেলার মূলত অসমের কয়লা আনা হয়। কিন্তু দুই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় সেই কয়লা আসা বন্ধ হয়েছে। যার ফলে বিকল্প হিসেবে অন্য জায়গার কয়লা আনতে হচ্ছে। যার দাম প্রায় তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে জিএসটি, ইনকাম ট্যাক্স, রোয়ালটি, মুজুরি, সহ নানা খরচ মেটাতে হিসসিম খাচ্ছে ভাটার মালিকরা। এই অবস্থায় ভাটা বন্ধ করতে হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছে।
এ দিকে জেলায় ইটভাটা বন্ধ হলে ইটের দাব বেশি হবে। পাশাপাশি জেলার সমস্ত উন্নয়ণমূলক কাজ থমকে যাবে বলে জানা গিয়েছে। জেলার রাস্তাঘাট, ভবন, সহ নানা ধরনের কাজ চলছে। যা ইটের অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর ব্রিকস্ ফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পবন কুমার গোয়েঙ্কা বলেন, “কেন্দ্র সরকার তরফে আমাদের ইট তৈরির কাজে জিএসটি ৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ করেছে। এদিকে আসাম থেকে কয়লা আসত। সেই কয়লা আসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে তিনগুন বেশি দামে কয়লা কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও শ্রমিক চুক্তির উপরে নতুন করে অতিরিক্ত ১২ শতাংশ জিএসটি বসানো হয়েছে। যার ফলে আমরা ইটভাটার খরচ মেটাতে পারছি না। এমতাবস্থায় দাঁড়িয়ে আমরা বাধ্য হচ্ছি আগামী মরশুমে ইটভাটার কাজ বন্ধ করে দিতে। এছাড়াও সারা ভারতেও ইটভাটা সংগঠন একই সমস্যায় ভাঁটা বন্ধের ডাক দিয়েছে, সেই দাবিকেও আমরা সমর্থন করেছি।”
এবিষয়ে সংগঠনের সহ সভাপতি স্বপন সরকার বলেন, “আমরা যদি নিজেদের খরচ মেটাতেই না পারি তাহলে শ্রমিকদের খরচ কিভাবে মেটাব। আমাদের জেলায় প্রায় এক লক্ষ পরিবার এই ইটভাটার কাজের উপর নির্ভর করে। এই ভাটা বন্ধ হয়ে গেলে তারা কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়বে। এছাড়াও অনেকভাবে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়বে। তাই কেন্দ্র সরকার এই সমস্যাগুলি না দেখলে আগামীদিনে আমাদের পক্ষে ভাটা চালানো সম্ভব না।”