Hili: হোমের মধ্যেই চলত ছোট শিশুদের যৌন নিগ্রহ, সাত বছর পর কর্ণাধার পেলেন চরম শাস্তি

South Dinajpur: হোমের আড়ালে চলা এই ঘটনায় সুবিচার পেয়ে অভিযোগকারিণী ভক্তিদেবী বলেন, 'বিষয়টি নজরে আসতেই মেয়েদের বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছিলাম। যে অন্যায় তাদের সঙ্গে হচ্ছিল তা প্রকাশ্যে এনেছিলাম।'

Hili: হোমের মধ্যেই চলত ছোট শিশুদের যৌন নিগ্রহ, সাত বছর পর কর্ণাধার পেলেন চরম শাস্তি
অভিযুক্ত কর্ণধার (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 09, 2022 | 7:35 PM

হিলি: দীর্ঘ সাত বছরের অপেক্ষার অবসান। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিওর হোম কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মূল অভিযুক্ত সহ তিনজন। হোমের নাবালিকা আবাসিকদের যৌন নির্যাতন করার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার সেই মামলার রায়েই অভিযুক্ত দিলীপ মোহনত্ব তার দুই সহযোগীর সাজা ঘোষণা করে বালুরঘাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত(দ্বিতীয়) ও বিশেষ পকসো আদালত। যদিও, ঘটনায় অন্য দুই অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে আদালত। দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে সুবিচার মেলায় খুশি ‘নারকীয়’ এই ঘটনা জনসম্মুখে আনা তৎকালীন হোম সুপার ভক্তি সরকার লাহা।

২০১৫ সালে তিওর হোমের নাবালিকা আবাসিকদের যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন হোম সুপার। অভিযোগ ওঠে, হোমের কর্ণধার দিলীপ মোহন্ত দিনের পর দিন ধরে আবাসিকদের উপর যৌন নিগ্রহ করছেন। ওই হোমের বিভিন্ন পদস্থ কর্মীদের সহযোহিতায় শিশু-কিশোরদের পালা করে গাড়িতে চাপিয়ে দিলীপ বালুরঘাটের নিজের বাড়িতে নিয়ে যেত। সেখানেই তাদের অচৈতন্য করে যৌন নির্যাতন চালানো হতো। শতাধিক আবাসিকের ওই হোমে দীর্ঘদিন চলা এই নারকীয় ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আনেন তৎকালীন সুপার ভক্তি সরকার লাহা। এরপরেই কার্যত তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি।

তৎকালীন কংগ্রেস-বিজেপি সহ প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দল এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে। সেই চাপে গ্রেফতার হন কর্ণধার দিলীপ এবং তার চার সহযোগী। মামলা বিচারাধীন থাকায় এতদিন তারা জেল হেফাজতের ছিলেন। মঙ্গলবার সেই মামলার রায়ে দিলীপ সহ তার দুই সহযোগীকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বুধবার ছিল সেই মামলার সাজা ঘোষণার দিন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘বালুরঘাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত (দ্বিতীয়) ও বিশেষ পকসো আদলয়ের বিচারক সুজাতা খর্গ মোট তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত দিলীপ মহন্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিন লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়। জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত দু’বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার সহযোগী দুই মহিলা আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা যা অনাদায়ে অতিরিক্ত এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক।’

অন্যদিকে, হোমের আড়ালে চলা এই ঘটনায় সুবিচার পেয়ে অভিযোগকারিণী ভক্তিদেবী বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসতেই মেয়েদের বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছিলাম। যে অন্যায় তাদের সঙ্গে হচ্ছিল তা প্রকাশ্যে এনেছিলাম। যদিও অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় আমাকেও অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। শেষমেষ অভিযুক্তরা শাস্তি পেয়েছে এটাই সব থেকে বড় পাওনা।’ অন্যদিকে, সাজাপ্রাপ্ত আসামী খুশি মণ্ডলের মা কাঞ্চন মণ্ডল বলেন, ‘আমার মেয়ে কোনও অন্যায় করেনি। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন: West Medinipur: ঝড়ের গতিতে ছুটছে সরকারি স্টিকার লাগানো ‘অন ডিউটি’ গাড়ি, ভিতর থেকে চিৎকার, কাছে যেতেই গ্রামবাসীর চোখ কপালে