এদিক ওদিক চলে যান মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা, করোনাকালে বন্দি করা হল বাঁশের খাঁচায়

ছেলে জানান, চার বছর আগে তাঁর বাবা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে তাঁকে। ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারাতে শুরু করেন।

এদিক ওদিক চলে যান মানসিক ভারসাম্যহীন বাবা, করোনাকালে বন্দি করা হল বাঁশের খাঁচায়
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 14, 2021 | 8:33 PM

দক্ষিণ দিনাজপুর: বাবার মানসিক সমস্যা রয়েছে। যখন তখন এদিক ওদিক চলে যান। আগে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। সে কারণেই বৃদ্ধ বাবাকে বাড়িতেই ‘বাঁশের খাঁচা’য় বন্দি করে রেখেছিল পরিবার। এই মহামারীর (COVID-19) সময় বাড়ির কর্তাকে সুস্থ রাখতেই নাকি এমনটা ব্যবস্থা। তবে সে খবর পৌঁছয় পুলিশ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসনের কাছে। এরপরই তারা এসে হাজির হয় বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের পার্বতীপুরে। বাঁশের খাঁচা থেকে বের করে আনেন ষাটোর্ধ্ব সুশান্ত দাসকে। পরিবারকে বোঝান, এ ভাবে কাউকে বন্দি করে রাখা কোনও সমাধান নয়।

dakkhin dinajpur

খাসপুর থেকে বালুরঘাট যাওয়ার পথেই পার্বতীপুর গ্রাম। সেখানেই সুশান্ত দাসের বাড়ি। তিনি পেশায় ছিলেন কলের মিস্ত্রি। বছর চারেক হল মানসিক নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে বহরমপুরে। সুশান্তবাবুর স্ত্রী রেখা দাস, দুই ছেলে দেবব্রত ও খোকন। দেবব্রত পেশায় গাড়ির কনডাক্টর, খোকনের পিকআপ ভ্যান চালিয়ে সংসার চলে।

dakkhin dinajpur

দেবব্রত জানান, চার বছর আগে তাঁর বাবা হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে তাঁকে। ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারাতে শুরু করেন। একবার বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বহুদিন খোঁজ ছিল না। তারপর বোল্লা থেকে উদ্ধার করা হয়। এরইমধ্যে গত বছর করোনার প্রথম থাবা আতঙ্ক বাড়ায় দাস পরিবারে। এ ভাবে সুশান্তবাবুর বেরিয়ে পড়ায় যদি কোনও বিপদ হয়, সেই আশঙ্কা থেকে বাড়িতে বাবাকে আটকে রাখার নতুন পথ বের করেন বলে জানান দেবব্রত।

তাঁর কথায়, “যখন আমরা কাজে ব্যস্ত থাকি, সেই সময় বাবাকে বাঁশের বাতা দিয়ে ঘেরা এই জায়গায় বসিয়ে রাখি।” তবে শুক্রবার পুলিশ প্রশাসনের কানে তা পৌঁছতেই তারা এসে হাজির হয়। এ ভাবে একজনকে কোনও ভাবেই রাখা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় তারা। এরপরই খুলে ফেলা হয় বাতাগুলি। কারণ যাই হোক, এমন ভাবে কাউকে আটকে রাখা যন্ত্রণারই।