Nayabazar Doi: নয়াবাজারের ক্ষীর দইয়ের খ্যাতি সর্বত্র, তবু ব্যবসায়ীদের চিন্তা ঘোচে না

South Dinajpur: এক দই বিক্রেতা জানান, বাংলাদেশের বগুড়ার পর পশ্চিমবঙ্গের নয়াবাজারেই একমাত্র ধাপে ঢাকা পদ্ধতিতে দই তৈরি করা হয়।

Nayabazar Doi: নয়াবাজারের ক্ষীর দইয়ের খ্যাতি সর্বত্র, তবু ব্যবসায়ীদের চিন্তা ঘোচে না
নয়াবাজারের ক্ষীর দই।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 18, 2023 | 7:00 AM

দক্ষিণ দিনাজপুর: কথায় বলে দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) গিয়ে কেউ যদি নয়াবাজারের দই (Nayabazar Doi) না চেখে দেখেন, তা হলে তাঁর জেলা সফরই বৃথা। আর ক্ষীর দইয়ের প্রসঙ্গ উঠলে তো কথাই নেই। দেশ-বিদেশেও এ দইয়ের সুখ্যাতি রয়েছে। এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা বলেন ক্ষীরদই ছাড়া নয়াবাজার এলাকার কোনও অনুষ্ঠানই সম্পূর্ণ হয় না। সে বিয়ে বাড়ি হোক বা অন্নপ্রাশন। শুধু দক্ষিণ দিনাজপুরই নয়, উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই নয়াবাজারের দইয়ের ব্যাপক চাহিদা। করোনার জন্য গত দু’বছর সেভাবে ব্যবসা হয়নি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে এখানকার ব্যবসায়ীদের একটাই আফশোস, এখানে এই দই বিক্রি করার জন্য কোনওরকম সরকারি বাজার নেই। এ নিয়ে টিভি নাইন বাংলা যোগাযোগ করেছিল জেলারই মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের কাছে। রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী তথা হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্র। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

বরাবরই খাদ্য রসিক বাঙালি। তাই যে কোনও ছুতোয় খাওয়ার অজুহাত খোঁজে। ইদানিং শহুরে অনুষ্ঠান বাড়িতে শেষ পাতে ‘ডেজার্ট’-এ আইসক্রিম পড়ে ঠিকই। তবে দইয়ের বিকল্প হয় না। মাছ, মাংস, চাটনির পর পাতে দই না পড়লে বাঙালির ভোজবাড়ি আর জমে কই? আর দইয়ের কথা উঠলে দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষের কাছে প্রথম এবং শেষ পছন্দ নয়াবাজারের দই।

এখানকার সাধারণ দই থেকে ক্ষীর দই সবই লোভনীয়। রাজ্যের তাবড় রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী এখানকার দইয়ের সুখ্যাতি করেছেন। সুনাম করেছেন বাইরে থেকে আসা অতিথি, পর্যটকরাও। গঙ্গারামপুর ব্লকের নয়াবাজার এলাকার বহু পরিবার এই দই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বংশানুক্রমে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন অনেকেই। এলাকার ব্যবসায়ীরা গ্রামের বাড়ি থেকে দুধ সংগ্রহ করে নয়াবাজারে নিয়ে আসেন।

শাক সবজির মতো এলাকায় দুধের হাট বসে। দূর দূরান্ত থেকে শতাধিক ব্যবসায়ী দুধ নিয়ে আসেন এই হাটে। প্রত্যেক দিন চার থেকে পাঁচ হাজার লিটার দুধ বেচা কেনা হয়। নয়াবাজার এলাকারই প্রায় ২০ – ৩০ জন দই ব্যবসায়ী আছেন। দই ব্যবসায়ীরা সাধারণত তিন রকমের দই বিক্রি করেন। ক্ষীর দই, খাসা দই ও সাধারণ দই। ক্ষীর দইয়ের বর্তমান বাজার মূল্য ২০০ টাকা প্রতি কেজি। খাসা দই ১২০ টাকা প্রতি কেজি ও সাধারণ দই ৯০-১০০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে দই কিনতে আসা ক্রেতা মানিক সরকার বলেন, নয়াবাজারের দইয়ের রাজ্যজুড়ে নাম ডাক রয়েছে। তাই এই দইয়ের চাহিদা বেশি। দই ব্যবসায়ী শক্তি ঘোষ জানান, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে নয়াবাজারের দই সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ এর তৈরি করার পদ্ধতিটাই সম্পূর্ণ আলাদা। বাংলাদেশের বগুড়ার পর পশ্চিমবঙ্গের নয়াবাজারেই একমাত্র ধাপে ঢাকা পদ্ধতিতে দই তৈরি করা হয়। অর্থাৎ দই হাড়িতে রাখার পর ঢেকে রাখা হয়। বাঁশ পাতার বিশাল ঢাকনায় তা ঢাকা থাকে। শক্তি ঘোষের কথায়, এখানে দই তৈরির প্রক্রিয়াই নজরকাড়া। স্বাদের কথা সকলেই জানেন। কিন্তু এখনও জেলায় সরকারিভাবে দই বিক্রির জন্য কোনওরকম ব্যবস্থা করা হয়নি। সরকারিভাবে দই বিক্রির ব্যবস্থা করা হলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

এ বিষয়ে নয়াবাজারের আরেক দই বিক্রেতা শিবা ঘোষ বলেন, আগের তুলনায় এখন লাভের পরিমাণ কমেছে। সরকারি তাদের ব্যবসায়ীদের নাম নথিবদ্ধ করেছিল। তারপর আর কোনও কিছু প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হয়নি। যদিও রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের কথায়, কীভাবে এই ব্যবসার আরও শ্রীবৃদ্ধি করা যায় তা নিয়ে প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।