Fake Teachers: বেতন পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা; ডুয়ার্সের স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা

বিগত ৬-৭ মাস ধরে মায়ের বদলে ছেলে এবং দাদার বদলে বোন শিক্ষকতা করছেন। অন্ধকারে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান।

Fake Teachers: বেতন পাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা; ডুয়ার্সের স্কুলে ক্লাস নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা
জলপাইগুড়ি স্কুলে ভুয়ো শিক্ষক।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 11, 2023 | 10:06 PM

জলপাইগুড়ি: স্কুলে নিয়মিত আসেন না শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের জায়গায় ক্লাস নিচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। বলা যায়, ক্লাস নিচ্ছেন ভুয়ো শিক্ষক। ডুয়ার্সের গয়েরকাটা এলাকার সরকারি স্কুলে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিতর্কের মুখে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা, সার্কেল ইন্সপেক্টর থেকে শিক্ষা দফতরের ভূমিকাও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলার পূর্ব গয়েরকাটা এলাকার একটি সরকারি স্কুলে বেশ কয়েক মাস ধরে স্কুলে আসছেন না দুই শিক্ষক, মনি পাল এবং সুদীপ্ত কুমার দে। এঁদের জায়গায় পরিবারের সদস্যরা স্কুলে এসে শিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ। মনি পালের ছেলে প্রিতম বোস এবং সুদীপ্ত কুমার দে-র জায়গায় তাঁর বোন রূপা দে স্কুলে শিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ। দু-চারদিন নয়, প্রায় ৬-৭ মাস ধরে এঁরা শিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ। আর পুরো ঘটনাটি ঘটছে প্রধান শিক্ষিকার উপস্থিতিতেই। সম্প্রতি ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে এলাকায়।

ইতিমধ্যে মায়ের জায়গায় ক্লাস নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রিতম বোস। বিগত ৬-৭ মাস ধরে তিনি মায়ের বদলে শিক্ষকতা করে চলেছেন বলে জানিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, “মা অসুস্থ। বাড়িতে রয়েছেন। ক্লাস ফাঁকা থাকবে! তাই আমি ক্লাস নিচ্ছি। শুধু সাহায্য করছি।” তিনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র এবং মায়ের বদলে তাঁর শিক্ষকতা করার কথা লিখিতভাবে এসআই-কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলেও দাবি প্রিতমের।

কিন্তু, একজন শিক্ষকের জায়গায় কী ভাবে তাঁর পরিবারের লোকেরা মাসের পর মাস ক্লাস নিতে পারেন? আদৌ কী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনটা করা যায়? গোটা ঘটনায় শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। কী কারণে তাদের অনুপস্থিতির অনুমতি দিল স্কুল কতৃপক্ষ? প্রশ্ন উঠছে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা থেকে স্কুল পরিদর্শকের ভূমিকা নিয়েও। যদিও বিষয়টি জানতে শুক্রবার দুপুরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা স্কুলে পৌঁছেলে রীতিমতো তেড়ে আসেন প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চালি গঙ্গোপাধ্যায়। ভুয়ো শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার কথাও তিনি স্বীকার করেননি। বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, “এসআই-এর অনুমতি ছাড়া স্কুলের তথ্য বাইরে দিতে পারি না।” অন্যদিকে, এসআই-এর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।তবে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লক্ষ্য মোহন রায়কে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি কার্যত চমকে ওঠেন। এব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ অন্ধকারে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। গোটা ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে ধূপগুড়ি বিজেপির উত্তর -১ মণ্ডল সভাপতি কৌশিক নন্দী বলেন, “এই সরকারের আমলে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। অসাধু চক্রে ভরে গিয়েছে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা। এজন্যই আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রাইভেট স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করছে।” আবার এই ঘটনার দায় পাল্টা বিজেপির উপর চাপিয়েছেন এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মানস রঞ্জন ঠাকুর। তাঁর দাবি, “আমার বিষয়টি জানা নেই। ওখানকার যে কমিটি রয়েছেন তারা বলতে পারবে। এখানে তো বিজেপির পঞ্চায়েত। তাঁরাই বলতে পারবেন। সার্কেলের এসআই বলতে পারবেন।” তবে বিষয়টি কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনায় হতবাক এলাকার বুদ্ধিজীবীরাও।