দাঁতে ব্যথার ওষুধ খেতেই পেট ‘ফুলতে’ শুরু করল রোগিণীর! গ্রেফতার ‘হাতুড়ে’ চিকিৎসক

Medical: রোগিণীর স্বামী আওফার আলির অভিযোগ, দাঁতের যন্ত্রণার জন্য তাঁর স্ত্রী স্থানীয় ডাক্তারের থেকে কিছু ওষুধ নিয়ে আসেন। সেই ওষুধ খাওয়ার পর থেকেই পেট ফুলতে শুরু করে মকলেসানের।

দাঁতে ব্যথার ওষুধ খেতেই পেট 'ফুলতে' শুরু করল রোগিণীর! গ্রেফতার 'হাতুড়ে' চিকিৎসক
বাঁদিকে, মকলেসান বিবি, ডানদিকে ধৃত মনোজ পালিত, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 09, 2021 | 6:58 PM

হুগলি: ‘একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ, কাটাছেঁড়া ভাঙা-চোরা চটপট মেরামত।’ কবি এমন লিখেছিলেন বটে, তবে তেমনই হাতুড়ে ডাক্তারের অস্তিত্ব যে এত প্রকটভাবে  নিজে বুঝবেন এমনটা ভাবেননি মকলেসান বিবি। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দাঁতের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়েন ওই মহিলা। ব্যথার চিকিৎসা করাতে স্থানীয় চিকিৎসক (Doctor) মনোজ পালিতের কাছে যান তিনি। সেই চিকিৎসক দাঁতের পরীক্ষা করে বেশ কয়েকটি ওষুধ খেতে দেন। অভিযোগ, বাড়িতে ফিরে সেই ওষুধ খাওয়ার দশ মিনিটের মধ্যেই পেট ফুলতে শুরু করে মকলেসান বিবির। তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রোগিণীর স্বামী আওফার আলির অভিযোগ, দাঁতের যন্ত্রণার জন্য তাঁর স্ত্রী স্থানীয় ডাক্তারের থেকে কিছু ওষুধ নিয়ে আসেন। সেই ওষুধ খাওয়ার পর থেকেই পেট ফুলতে শুরু করে মকলেসানের। সঙ্গে যন্ত্রণা ও বমি। অবস্থার এত অবনতি হয় যে প্রায় জ্ঞান হারাতে বসেন মকলেসান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা (Doctor) জানান, শুধু ভুল ওষুধই পেটে পড়েছে মকলেসানের এমন নয়, বরং, এক্সপায়ার্ড হয়ে যাওয়া ওষুধ খাওয়ায় এই সাংঘাতিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আক্রান্ত মকলেসানের কথায়, “ডাক্তারবাবুর থেকে দাঁতে ব্যথার জন্য ১৭০ টাকার ওষুধ কিনে আনি। আমার প্রেশার বা অন্যকিছু না দেখেই ওষুধ দিয়ে দেন ডাক্তারবাবু। এমনকী ভাল করে দাঁতটাও দেখেননি। তার আগেই ওষুধ দিয়ে দেন। বলেন, এই সপ্তাহেই আমার বাড়ি এসে দাঁত তুলে দিয়ে যাবেন। বাড়িতে এসে তারপর ওষুধ খাই। ঠিক দশমিনিটের মধ্যে পেট ফুলতে শুরু করে। সঙ্গে অসম্ভব যন্ত্রণা। বমি করি অনেকবার। তাও কমেনি। এদিকে পেট ফোলা বেড়েই যাচ্ছে। মনে হচ্ছিল যেন মরে যাব।”

পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভুল এবং তারিখ পেরিয়ে যাওয়া ওষুধ খাওয়ার জন্যেই বিষক্রিয়া দেখা দেয় মকলেসান বিবির। যার জেরেই অস্বাভাবিকভাবে ফুলতে শুরু করে পেট। সঙ্গে ব্যথা, যন্ত্রণা ও বমি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাণ্ডুয়া বোসপাড়ায় গত ছয়মাস ধরে চেম্বার করছিলেন মনোজ পালিত। মকলেসান বিবির ঘটনার পরেই এদিন তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। পরে পাণ্ডুয়ার পুলিশ এসে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূ্ত্রে খবর, মাস ছয়েকের মধ্যেই বেশ পসার জমিয়েছিলেন মনোজ। সেইভাবে কোনও ডাক্তারি শংসাপত্র তাঁর নেই। রোগীদের যে ওষুধ দিতেন সেসব নিজে জোগাড় করতেন। এক্সপায়ার্ড সেইসব ওষুধের তারিখ মুছে দিয়ে নতুন করে স্ট্যাম্প মেরে দিতেন  মনোজ। এভাবেই চলছিল চিকিৎসা। শুক্রবারই হাতেনাতে ধরা পড়েন মনোজ পালিত। আপাতত, তাঁকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আরও পড়ুন: হুগলিতেও ‘সনাতনী’ জাল চক্র! মানবাধিকার রক্ষার নামে ভুয়ো সংস্থা, পত্রিকা চালানোর অভিযোগ