Trinamool Congress : ভোটের আগে ‘ভোট’ সিঙ্গুরে, পঞ্চায়েতে ‘কাছের মানুষ’ বাছতে ময়দানে জোড়াফুল

Trinamool Congress : সিঙ্গুর বিধানসভায় ১৬ টি পঞ্চায়েত ও হরিপাল বিধানসভায় মোট ১৫ টি পঞ্চায়েত রয়েছে। সূত্রের খবর, মোট ৩১ টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য সম্প্রতি বৈঠকে বসেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না।

Trinamool Congress : ভোটের আগে ‘ভোট’ সিঙ্গুরে, পঞ্চায়েতে ‘কাছের মানুষ’ বাছতে ময়দানে জোড়াফুল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 08, 2023 | 11:12 AM

সিঙ্গুর : এখনও ঘোষণা হয়নি দিনক্ষণ। তবে তার আগেই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections) হাওয়ায় তপ্ত হতে শুরু করেছে বাংলার মাটি। ফের গ্রামে গ্রামে জোড়াফুলই ফুটবে, দাবি তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতাদের। কিন্তু, ঘাসফুল শিবিরের হিসাবনিকেশ উল্টে দিতে এখন থেকেই জোরকদমে মাঠে নেমে পড়েছেন পদ্ম নেতারা। তবে ভোটের আগে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসা দলীয় কর্মীদের গোষ্ঠী কোন্দলের খবর। আবাস থেকে নিয়োগ, একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো এই গোষ্ঠী কোন্দলের আবহে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী পাবে তো শাসকদল? এই চাপানউতরের মধ্যে এবার প্রার্থী বাছাইয়ে অভিনব ছবি দেখতে পাওয়া গেল সিঙ্গুরে (Singur)। প্রার্থী বাছতে দলীয় কর্মীরাই নামলেন ভোটভুটিতে। তবে আক্রমণ করতে ছাড়ল না বিজেপি। “প্রতিটা নির্বাচনে এরা মানুষের কণ্ঠরোধ করেছে। এখন দলকে শুদ্ধিকরণ করতে নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।” কটাক্ষবাণ শানিয়েছেন এলাকার বিজেপি নেতা। 

প্রসঙ্গত, সিঙ্গুর বিধানসভায় ১৬ টি পঞ্চায়েত ও হরিপাল বিধানসভায় মোট ১৫ টি পঞ্চায়েত রয়েছে। সূত্রের খবর, মোট ৩১ টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য সম্প্রতি বৈঠকে বসেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে চলে আলাপ-আলোচনা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই ঠিক হয় যে সমস্ত তৃণমূল নেতাদের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ভাল, যাদের এলাকায় জনপ্রিয়তা রয়েছে তাদেরই দেওয়া হবে টিকিট। দবে এ ক্ষেত্রে দলের উপর মহল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও বাছাইয়ে ছাকনি হবেন দলের কর্মীরাই। হবে ভোটাভুটি। ঠিক হয় বুথ সদস্যরা ব্যালটের মাধ্যমে পছন্দের ক্রমানুসারে ৩ জন প্রার্থীর নাম লিখে নির্দিষ্ট বক্সে জমা দেবেন ‘ব্যালট’ বক্সে। শনিবারই হয় ভোটাভুটি। সিঙ্গুরের ১৬টি পঞ্চায়েতে ২৭৮ টি বুথে শনিবার সমস্ত বুথ সদস্যদের ক্রমানুসারে ১,২,৩ লেখা স্লিপ দেওয়া হয়। এই স্লিপেই প্রত্যেক সদস্য তাঁদের তিনজন পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে জমা দেন বক্সে। এই ভোটাভুটির ফলই পাঠিয়ে দেওয়া হবে দলের উপর মহলে। তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, এতদিনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। এতে ভোটে জেতার রাস্তা যেমন সহজ হবে, তেমনই মানুষের কাছে তাঁদেরই কাছের মানুষকে পৌঁছে দেওয়াও সম্ভব হবে। 

এলাকার তৃণমূল কর্মী সঞ্জয় মালিক বলছেন, “যিনি নিয়মটি বের করেছেন আমি তাঁকে স্যালুট জানাচ্ছি। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একজন কর্মী থেকে একজনকে নেতা বানানোর সবথেকে ভাল পদ্ধতি এটাই। আমার মনে হয় এই নয়া সিস্টেমের জন্য সমস্ত জায়গাতেই ভাল প্রার্থী পঞ্চায়েত ভোটের সময় আমরা পাব। এরফলে গোষ্ঠী কোন্দলও অনেকটাই কমবে। যাঁরা দলের কথা না ভেবে নিজের সুবিধার জন্য দল করতেন তাঁরা এবার বেকায়দায় পড়বেন।” তবে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির যুব মোর্চার মন্ডল সভাপতি সৌমিত্র পাকিরা বলেন, “তৃণমূলে কোনও গণতন্ত্র নেই। প্রতিটা নির্বাচনে এরা মানুষের কণ্ঠরোধ করেছে। এখন দলকে শুদ্ধিকরণ করতে নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, আদৌও কী আম-জাম-কাঁঠাল গাছকে বন্ধ করা যাবে? কারণ এই দলে একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। এখন আবার ল্যাম্পপোস্টটা এখন পোস্ট হওয়ার চেষ্টা করছে। তাই এই সব ভোটাভুটি করে কোনও লাভ হবে না। ভোটের সময় দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানে তৃণমূলের লোকেরা ফের আম পাতা, বট গাছ নানা চিহ্ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আবার গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি দেখতে পাওয়া যাবে।”   

পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপিকে একহাত নিয়ে তৃণমূল ব্লক সভাপতি গোবিন্দ ধারা বলেন, “বিজেপি বুথে বুথে প্রার্থী পাচ্ছে না। তাই এ কথা বলছে। আমরা বুথে বুথে আমাদের দলের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য ভোট করাচ্ছে। স্বচ্ছ প্রার্থী দিতেই বুথে বুথে কর্মীদের নিয়ে বসে প্রার্থী বাছাই করছি। এ ক্ষেত্রে প্রবীনের কয়েকজনকে সামনে রেখে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নবীনদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।”