Ayan Sil: যোগ্যদের থেকেও ৫ লাখ, না দিলে প্যানেল থেকে নাম বাদ! অয়নের ‘নয়া কীর্তি’

Ayan Sil: হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা চয়নিকা আঢ্য। তিনি জাতীয় স্তরের যোগাসন খেলোয়াড়। তাঁর অভিযোগ, পুরসভায় চাকরি পেয়েও টাকা দিতে না পারায় চাকরি হারিয়েছেন তিনি।

Ayan Sil: যোগ্যদের থেকেও ৫ লাখ, না দিলে প্যানেল থেকে নাম বাদ! অয়নের ‘নয়া কীর্তি’
চয়নিকা আঢ্য, অভিযোগকারী (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 30, 2023 | 1:43 PM

হুগলি: নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) গ্রেফতার অয়ন শীলের (Ayan Sil) সল্টলেকের বাড়ি থেকে গাদা গাদা ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে। নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে অয়নের যোগ খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তারপর থেকেই কীর্তিমান অয়নের বিষয়ে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। দেখা যাচ্ছে, তিনি শুধু প্রোমোটারই নন, আরও অনেক গুণই রয়েছে। সিনেমা, সিরিয়াল, হোটেল ব্যবসা কী ছিল না। এর মধ্যেই আবার অয়ন শীলের নয়া ‘কীর্তি’ এল প্রকাশ্যে। অভিযোগ, যাঁরা নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের থেকেও নাকি লক্ষ-লক্ষ টাকা দাবি করেছেন। না দেওয়ায় প্যানেল থেকেও নাম বাদ দিতেও পিছু পা হয়নি।

হুগলির চুঁচুড়ার বাসিন্দা চয়নিকা আঢ্য। তিনি জাতীয় স্তরের যোগাসন খেলোয়াড়। তাঁর অভিযোগ, পুরসভায় চাকরি পেয়েও টাকা দিতে না পারায় চাকরি হারিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন চয়নিকা। তিনি খেলোয়াড় কোটায় চাকরি পেয়ে ইন্টারভিউতে ডাক পান। সেখানেও পাশ করেন। এরপর ১১ নভেম্বর ২০১৯ সালে জয়েনিং লেটারও দেওয়া হয় পুরসভার তরফে।

চয়নিকা জানিয়েছেন, একদিন এক পুলিশ কর্মী তাঁর বাড়িতে যান। তিনি গিয়ে চয়নিকাকে অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করতে বলেন। এরপর চয়নিকা তাঁর বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাঁদের জানান যে, চাকরির জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে।

উত্তরে চয়নিকা অয়নকে প্রশ্ন করেন, তিনি তো অয়ন শীলের ক্যান্ডিডেট নন তাহলে কেন টাকা দেবেন? আর অত টাকা তাঁর কাছেও নেই। সেদিন ফিরে আসার পর অয়ন শীলের লোক তাঁর সঙ্গে আবার যোগাযোগ করে এবং সল্টলেকের অফিসে যেতে বলে। সল্টলেকের অফিসে বাবাকে নিয়ে গিয়েও ছিলেন চয়নিকা। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন। পরে জানতে পারেন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে অয়ন শীলের বিরুদ্ধে।

চয়নিকার বক্তব্য, সেই সময় বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা চলছিল তাঁর। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা,চাকরির খুব প্রয়োজন। তাই হাল না ছেড়ে টিটাগড় পুরসভায় গিয়ে কথা বলেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে। হবে না-হবে না করেও তাঁকে জয়েন করানো হয়। বেতনের জন্য স্থানীয় বেসরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে এটিএম কার্ড সব বানিয়ে দেওয়া হয়। ছয় দিন কাজও করেন পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে। কিন্তু এরপর তাঁকে বের করে দেওয়া হয় পুরসভা থেকে।

চয়নিকা বলেন,”নিয়োগ তালিকায় আমার ২২০ নম্বরে নাম ছিল। রাতারাতি সেই তালিকা পরিবর্তন করে যারা ছিল না তাঁদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যাঁরা টাকা দিতে পেরেছিল তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।” প্রাক্তন পুরপ্রধান (টিটাগড় পুরসভা) প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “ওর লিস্টে নাম ছিল। ও কাজে আসেনি। যেহেতু ও আসেনি তাই চাকরি হয়নি। মিথ্যে অভিযোগ।”

ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের সংস্থা পানিহাটি সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল। তাঁর অফিস থেকে ইডি বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে ইতিমধ্যে। বর্তমানে হুগলির প্রাক্তন তৃণমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রমোটার অয়ন শীল ইডি হেফাজতে রয়েছেন।