Rice Mill Closed: ‘কৃষকের চাল বিক্রি হত খোলা বাজারে, নাম দেখাত আমার’, বিস্ফোরক অভিযোগ চালকল মালিকের
হরগৌরি রাইস মিলের মালিকের অভিযোগ, চাষীদের কাছ থেকে কেনা ধান খাদ্য দফতরের পারচেজ অফিসার বিক্রি করে দেন। কিন্তু খাতায় কলমে দেখানো হয়, চালকলকে ধান দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পারার পর আরামবাগ থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন চালকলের মালিক। এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
গোঘাট: খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের প্রতারণায় চালকল বন্ধ হওয়ার অভিযোগ উঠল। প্রতারণার জেরে আর্থিক অনটনে পড়ে চালকল। এর জেরেই ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় ৬০ বছরের পুরনো রাইস মিল। এমনই অভিযোগ উঠল হুগলি জেলার গোঘাটে। সেখানকার হরগৌরি চালকলের মালিক এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। চালকল বন্ধ হওযায় যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। রাইস মিল বন্ধ হওয়ায় ৪০-৪৫ জন কাজ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই রাইস মিলের মালিক নিজের অসহায়তর কথা জানিয়েছেন টিভি৯ বাংলার প্রতিনিধিকে। এ নিয়ে হরগৌরি রাইস মিলের মালিকের অভিযোগ, চাষীদের কাছ থেকে কেনা ধান খাদ্য দফতরের পারচেজ অফিসার বিক্রি করে দেন। কিন্তু খাতায় কলমে দেখানো হয়, চালকলকে ধান দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পারার পর আরামবাগ থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন চালকলের মালিক। এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে হরগৌরি চালকলের মালিক আশিস কুমার মণ্ডল বলেছেন, “এটা পুরোপুরি প্রতারণা। যিনি পারচেজ অফিসার, তিনি ধান নিয়ে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। আমার নামে ইস্যু দেখিয়ে দিয়েছে। পুলিশ চার্জশিটে লিখেওছে বিষয়টি। আমাকে সিবিআই-এর ভয় দেখিয়ে সই করিয়ে নিয়েছে।” খাদ্য দফতরকে বিষয়টি জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। অভিযোগ ২০১৭ সালে খানাকুলের ঘোষপুর-রামপ্রসাদ সিপিসি ক্যাম্প থেকে কৃষকদের থেকে ধান কেনে খাদ্য দফতর। কিন্তু সেই ধান খাদ্য দফতর হরগৌরি রাইস মিলে পাঠায়নি বলে অভিযোগ। কিন্তু কম্পিউটারে লোড করে দেওয়া হয় প্রায় ১৫০০ মেট্রিক টন সরকারি ধান ওই রাইস মিলে দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকেই রাইস মিল কর্তৃপক্ষের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ভয় দেখিয়ে রিসিভ কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমনকি বিগত দিনে প্রায় ২৫০ মেট্রিক টন খাদ্য দফতরের দেওয়া চালের টাকাও আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর এই বিষয়টি নিয়েই আদালতের শরণাপন্ন হন রাইস মিল মালিক কর্তৃপক্ষ। এই সবের জেরেই আর্থিক অনটনে পড়ে চালকলটি। এবং তা বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও এই নিয়ে মহকুমা কন্ট্রোলার অভিজিৎ মাইতি বলেছেন, “খাদ্য দফতরের ধান রাখার কোনও গোডাউন নেই। যেদিন ধান কেনা হয় সেদিনই রাইস মিলে চলে যায়। ২০১৭ সালে তিনি আমি ছিলাম না। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে আমি কিছু বলব না।” এখন প্রশ্ন উঠছে, খানাকুলের রামপ্রসাদ সিএসপি ক্যাম্পের পারচেস অফিসার ধান আত্মসাৎ করে বিক্রি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেওয়ায় অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোলার তার নামে খানাকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাহলে এ নিয়ে কেন তদন্ত করা হল না? কেন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও উঠছে। আরামবাগ মহকুমা জুড়ে প্রায় ১২০টি রাইস মিল আছে। বেশ কয়েকটি রাইস মিলও আর্থিক অনটনে ধুকছে। তবে অন্য রাইস মিলের মালিকরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি ক্যামেরার সামনে।