‘ভ্যাকসিন না দিয়ে আমাদের গুলি করে মেরে দিক’, লম্বা লাইনে উধাও সামাজিক দূরত্ব
বাড়িতে গিয়ে ভোট নেওয়া হয় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। তাহলে ভ্যাকসিনের জন্য বিপদ কাঁধে কেন রাস্তায় তাঁরা? প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
আরামবাগ: রাজ্যে আংশিক লকডাউন চলছে। একাধিক কোভিড বিধি জারি হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে, যার মধ্যে অন্যতম সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব। অথচ ভ্যাকসিনের লাইনে সে সবের কোনও বালাই নেই। মধ্য রাত থেকে ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহু মানুষ, কোথা্ও কোথাও লাইন পড়েছে ২ কিলোমিটার। আর সেই লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ বলছেন, ভ্যাকসিন না দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলা হোক। ভোট দিয়েও কেন পরিষেবা পাচ্ছেন না? তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এমনই ছবি দেখা গেল গোঘাট, কামারপুকুর-সহ হুগলির একাধিক জায়গায়।
কোভিডের দ্বিতীয় ভ্যাকসিন নিতে এসে গভীর রাত থেকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বহু মানুষ। ঠিক কতজনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট তথ্য নেই। গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়িয়ে সবাই। রয়েছেন ৬৫-৭০ বছরের বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাও। কেউ এসেছেন রাত ১২ টায়, কেউ রাত ২টোয়। তাই ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে আদতে আরও বড় বিপদ ডেকে আনার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
গোঘাটে তরুণ সরকার নামে এক বাসিন্দা লাইনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘রাত ১২ টায় এসেছি, সেই থেকে দাঁড়িয়ে আছি। কোনও সিস্টেম নেই। কাকে আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তার কোনও ঠিক নেই।’ তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের কর্মীরা নিজেদের চেনা লোকজনকে ভিতর থেকে ঢুকিয়ে আগে ভ্যাকসিন দিয়ে দিচ্ছেন। অথচ যারা লম্বা ও দীর্ঘ লাইনে আছেন তাঁরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ফিরে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ‘ভ্যাকসিন জোগাড় করতে না পারলে কি গলায় দড়ি দেব?’ আদালতের নির্দেশে ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয়মন্ত্রী
বয়স্করাও যেভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তাতে তাঁদের কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। এক ব্যক্তি বলেন, ‘ভোটের সময় তো বয়স্কদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তাহলে ভ্যাকসিনের সময় কেন এই সব বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের এভাবে বিপদের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে? এর জন্য সরকারই দায়ী।’ তাঁর দাবি বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে এখান থেকেই তাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে যাবেন।
গোঘাট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে ও আরামবাগ মেদিনীপুর সাত নম্বর রাজ্য সড়কের উপর দীর্ঘ দু’কিলোমিটার লাইন পড়ে যায়। আবার কামারপুকুরেও একই চিত্র। কিভাবে সমাধান হবে তা কেউ জানেন না।