Hooghly: স্কুলের ‘দিদির’ সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, বাড়িতে বকা দিতেই অভিমানে গলায় দড়ি ক্লাস নাইনের ছাত্রীর
Hooghly: বাবার সঙ্গে বিরিয়ানিও খেতেও বসেছিল ওই নাবালিকা। কিন্তু বেশি কিছু না খেয়ে উঠে যায়। বাবা খেতে বললেও কথা শোনেনি। রাত দশটা নাগাদ দেখা যায় ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ওই নাবালিকা। হতবাক পরিবারের সদস্যরা।
হুগলি: ফোন দিয়েছিল স্কুলের ‘দিদি’। খানিক আপত্তি জানিয়েছিল পরিবারের লোকজন। অভিমানে আত্মঘাতী নাবালিকা। হুগলির চুঁচুড়ার একটি স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ত ওই ছাত্রী। সূত্রের খবর, ওই নাবালিকার সঙ্গে তার স্কুলেরই আর মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। যদিও সেই মেয়েটি তার থেকে কয়েক ক্লাস উঁচুতে পড়ত। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গাঢ় হতে শুরু করে। বন্ধু বলেই পরিচয় দিত সকলের কাছে। বাড়িতেও যাতায়াত ছিল। ক্রমেই তা বাড়তে থাকে। ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, বয়সে বড় হলেও বন্ধু বলেই পরিচয় দিত মেয়েটিকে। তাঁরা ভাবতেন একইসঙ্গে পড়াশোনা করতেই বারবার বাড়িতে আসত মেয়েটি। শুরুতে কিছু সন্দেহ না হলেও ধীরে ধীরে তাঁরা বুঝতে পারেন দুই মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। অন্যরকম কিছু একটা আছে।
পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হতেই তাঁরা মেয়েটিকে তাঁদের বাড়িতে আসতে নিষেধ করে। সূত্রের খবর, যাতায়াত বন্ধ হলেও প্রায়শই ক্লাস নাইনের ছাত্রীটির বাড়ির সামনে চলে আসত মেয়েটি। স্কুটি নিয়ে এসে জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকত। গল্প করত। এরইমধ্যে শুক্রবার ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। মৃত ছাত্রীর বাবা জানাচ্ছেন, “আমি দোকানে কাজ করি। বাড়িতে বেশিরভাগ সময় থাকি না। ওর মা পিকনিকে গিয়েছিল। আমার মেয়েকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু ও যায়নি। বাড়িতে একাই ছিল। বাড়ি এসে দেখি মেয়ের হাতে একটা মোবাইল। ওকে জিজ্ঞেস করি কে দিয়েছে। কিন্তু ও কিছু বলে না। কিন্তু, আমরা বুঝতে পারি এটা ওই মেয়েটিরই কাজ। যোগাযোগ যাতে বন্ধ না হয় তাই এই ব্যবস্থা।”
এ ঘটনার পর বাবার সঙ্গে বিরিয়ানিও খেতেও বসেছিল ওই নাবালিকা। কিন্তু বেশি কিছু না খেয়ে উঠে যায়। বাবা খেতে বললেও কথা শোনেনি। রাত দশটা নাগাদ দেখা যায় ঘরে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ওই নাবালিকা। মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকে পাথার বাবা। কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, “খুব বেশি বকাবকি করিনি। একটাই মেয়ে আমার। কোনওদিন মারধরও করিনি। কেন যে এমন করল! কিছু একটা তো হয়েছে যার জন্য আমার মেয়েটা আত্মহত্যার পথ বেছে নিল। ও মেয়েটা যখন প্রথমে আমাদের বাড়ি আসত আমরা কিছু বলতাম না। পরে ওকে পুরোপুরি বাড়িতে আসতে বারণ করে দিয়েছিলাম। আমার মনে হয় ও মেয়েটাই আমার মেয়েকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। নাহলে আমার মেয়ে এরকম করার কথা নয়।” ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গোটা এলাকায়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পরিবারের লোকজনদের। দেহ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।