Chinsurah: বুকে গুলি লেগেছে, অ্যাম্বুলেন্সে উঠতে উঠতে বলে গেল ‘বদলা নেব’, চেনেন এই টোটনকে?
Chinsurah: চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, এদিনের গুলি চালানোর ঘটনা ব্যক্তিগত শত্রুতার থেকে ঘটেছে। জখম ব্যক্তির অবস্থা এখন স্থিতিশীল। ঘটনায় জড়িতদের ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা গিয়েছে এবং তদন্ত চালানো হচ্ছে।
চুঁচুড়া : আদালতে পেশ করার কথা ছিল অভিযুক্ত টোটন বিশ্বাসকে। তার আগে নিয়ে আসা হয়েছিল চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে। মেডিক্যাল করিয়ে ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে বেরনোর সময় দুষ্কৃতীরা গুলি করে তাকে। গুলিবিদ্ধ হয় টোটন বিশ্বাস। পুলিশ সূত্রে খবর, গুলি লাগে বুকের বাঁ দিকের পাঁজরের নীচে। ঘটনার পর চুঁচুড়া হাসপাতালে চিকিৎসা হয় তার। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সে তোলার সময় টোটন নামে ওই যুবক বাবু পালের নাম নেয়। সেই অবস্থাতেই সে জানিয়ে যায়, “বাবু পাল ছেলে পাঠিয়ে গুলি করিয়েছে। আমি এর বদলা নেব। চিন্তা করার দরকার নেই।” শরীরি ভাষায় প্রতিহিংসার আগুন। জানা গিয়েছে, অতীতে টোটন বিশ্বাস এবং বাবু পাল একসঙ্গে কাজ করত। তবে এখন দুইজনের পথ আলাদা। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, এদিনের গুলি চালানোর ঘটনা ব্যক্তিগত শত্রুতার থেকে ঘটেছে। জখম ব্যক্তির অবস্থা এখন স্থিতিশীল। ঘটনায় জড়িতদের ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা গিয়েছে এবং তদন্ত চালানো হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই কার্যত থমথমে রূপ নিয়েছে ইমামবাড়া হাসপাতাল চত্বর। গুলি চালানোর ঘটনার পর গোটা হাসপাতাল চত্বর ঘিরে ফেলা হয় পুলিশি প্রহরায়। কে এই টোটন বিশ্বাস? কেন তাকে গুলি করল দুষ্কৃতীরা? জানা গিয়েছে চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা টোটন বিশ্বাস। এলাকায় কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত সে। পুলিশের খাতাও নামও রয়েছে। একাধিক মামলা রয়েছে টোটনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রয়েছে, তোলাবাজি, খুনের অভিযোগও। ২০২১ সালে মাদক মামলায় টোটনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই সময় থেকে সংশোধনাগারেই রয়েছে টোটন বিশ্বাস। টোটনকে যখন শেষবার গ্রেফতার করা হয়েছিল (মাদক মামলায়) তখন পুলিশ কমিশনার ছিলেন হুয়ায়ূন কবীর। কারবাইন, অস্ত্র এবং নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল তার থেকে।
রবীন্দ্রনগরের যে এলাকায় টোটনের বাড়ি, সেখানেও অভিযানে গিয়েও তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। এলাকায় চারিদিকে সিসিটিভি ক্যামেরা। টোটনের বাড়িতেও লাগানো ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। কিন্তু কেন এত নজরদারি বাড়ির চত্বরে? কীসের ভয় পেত এই টোটন? জানা গিয়েছে, টোটন বিশ্বাসের এক দাদা ছিল। তারক বিশ্বাস। ২০১৭ সালে তাকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগ ছিল, বিশাল দাস নামে এক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পর থেকেই টোটন বিশ্বাস নিজের নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকে নজর দিয়েছিল। এমনকী নজর রাখার জন্য বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসা হয়েছিল। তার কাজ ছিল টোটনকে পাহারা দেওয়া।
এদিকে শনিবার দুপুরের ওই ঘটনার পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, হাসপাতাল চত্বরে একটি ব্যাগের ভিতর থেকে দুটি ওয়ান শাটার এবং একটি ভাজালি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহ, গুলি চালানোর এই ঘটনায় ৪-৫ জন দুষ্কৃতী জড়িত থাকতে পারে। এদিকে ঘটনার পর রীতিমতো আতঙ্কিত হাসপাতালের কর্মী থেকে শুরু করে ভর্তি থাকা রোগীরা। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার পার্থ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, নিরাপত্তার বিষয়ে খুব সমস্যা । সমাজে সমাজবিরোধীরা থাকবেই, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।