Singur news: বাবার বাইক কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই, পাহাড়কে ভালবেসে পায়ে পায়েই লাদাখ জয় সিঙ্গুরের মিলনের

Ladakh: যদি বলা হয় কলকাতা থেকে লাদাখ হেঁটে যেতে পুরো পথ? পারবেন? মিলন কিন্তু সেই অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন। পায়ে পায়ে পৌঁছে গিয়েছেন লাদাখে।

Singur news: বাবার বাইক কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই, পাহাড়কে ভালবেসে পায়ে পায়েই লাদাখ জয় সিঙ্গুরের মিলনের
লাদাখে মিলন মাঝি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 17, 2022 | 10:33 PM

হুগলি : সিঙ্গুর। জায়গার নামটা শুনলেই, প্রথমেই মাথায় আসে টাটার কারখানা, জমি বাঁচানোর লড়াই, আন্দোলন। ইতিহাসের সেই পাতা সরিয়ে আবারও একবার আলোচনায় সিঙ্গুর। নাহ, এবার আর আন্দোলন নয় কোনও। এবারের কাহিনী সিঙ্গুরের এক যুবককে নিয়ে। মিলন মাঝি। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়র। সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামে বাড়ি। স্রেফ পাহাড়কে ভালবেসে সবার মন জিতে নিয়েছেন মিলন। শুধু রাজ্য নয়, দেশের নানা প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছার বন্যা বইছে তাঁর জন্য। হবে নাই বা কেন? লাদাখে চলে গিয়েছেন তিনি। ভাবছেন, এ আর এমন কী? সে তো অনেকেই যায়। কিন্তু যদি বলা হয় হেঁটে যেতে পুরো পথ? পারবেন? মিলন কিন্তু সেই অসাধ্য সাধন করে ফেলেছেন। পায়ে পায়ে পৌঁছে গিয়েছেন লাদাখে।

যাত্রা শুরু হয় ২২ ফেব্রুয়ারি। ঘড়িতে তখন রাত প্রায় সাড়ে ৯ টা। হাওড়া ব্রিজ থেকে হাঁটা শুরু করেন মিলন। গন্তব্য? লাদাখ। সাধারণ বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মিলন। ছেলের এমন ভাবনার কথা বাড়িতে জানলে যদি বাধা দেয়? তাই তখন পরিবারের কাউকে কিছু জানাননি মিলন। কাজে যোগ দেওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সেই সময়। বাড়ি থেকে বেরোনোর একদিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোষ্ট করে মিলন সবাইকে জানন, তিনি লাদাখ যাচ্ছেন। পায়ে হেঁটে। তারপর বাকিটা ইতিহাস। অনেক কষ্ট সহ‍্য করতে হয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি। শেষে ৮৩ দিনের মাথায় স্বপ্ন পূরণ। গত ১৫ মে লাদাখের খারদুং লা-য় পৌঁছান তিনি। তখন দুপুর ২টো ৫ মিনিট। প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে লাদাখের ১৮,৩৮০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত খারদুং লা জয় করার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন মিলন। পাহাড়ে উঠে জাতীয় পতাকা পুঁতে দেয় বিজয় ধ্বজা হিসাবে।

মিলনের বাবা অনিল মাঝিও ছেলের এই স্বপ্নপূরণের পর ভীষণ খুশি। সিঙ্গুরের কামারকুন্ডুতে হুগলি গ্ৰামীন পুলিশ দফতরের সামনে একটি চায়ের দোকান চালান তিনি। ছেলে তাঁর কাছে একটি বাইক চেয়েছিল। কিন্তু আর্থিক দুরাবস্থার কারণে, তিনি তা দিতে পারেননি। কিন্তু ছেলে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করার আশা ছাড়েনি। বাইক নেই তো কী! দুই পা তো রয়েছে। তাই পায়ে হেঁটেই খারদুং লা জয়। অনিল বাবু জানান, “মিলন মেকানিক‍্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে রানিগঞ্জে কাজ করত। লকডাউনে কাজ চলে যায়। তার পর থেকে বাড়িতেই ছিল। যেদিন ছেলে লাদাখের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরোয়, বলেছিল চাকরি করতে যাচ্ছি। পরে সোশ‍্যাল মিডিয়ায় জানতে পারি ও লাদাখ যাচ্ছে। তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। ছেলের জন্য চিন্তায় ঘুম আসত না। কারণ রাস্তায় একা হেঁটে যাচ্ছে, যে কোনও সময় বড় সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। যদিও প্রতিদিন ছেলের সাথে ফোনে কথা হত।”