Potato Price Hike : দামের ছ্যাঁকায় ‘আলু সেদ্ধ’ বাঙালি, কোথায় দোষ? জানুন

Potato Price Hike : প্রতি বছর হুগলি জেলায় আলু উৎপাদন হয় প্রায় ২৮ লক্ষ মেট্রিক টন। ১২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু এ রাজ্যে বিক্রি হয়। বাকি আলু ভিন রাজ্যে রফতানি হয়। বৃষ্টির জন্য এবছর হুগলি জেলায় ২৫-৩০ শতাংশ আলু উৎপাদন কম হয়েছে।

Potato Price Hike : দামের ছ্যাঁকায় 'আলু সেদ্ধ' বাঙালি, কোথায় দোষ? জানুন
বেড়েই চলেছে আলুর দাম
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 16, 2022 | 7:42 PM

সিঙ্গুর : তারকেশ্বর লোকাল। ভেন্ডার কামরা। ট্রেনের আওয়াজ ছাপিয়ে দুই ভেন্ডারের আলোচনা কানে ভেসে আসছে। একজন বলছেন, বাজারে গিয়ে আলুতে হাত দেওয়া যায় না। দাম ছ্যাঁকা দেয় (Potato price hike)। অন্যজনের বক্তব্য, হুগলিতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে অন্য জায়গায় কী অবস্থা ? দু’জনেই একসঙ্গে বলে উঠলেন, দাম এত বাড়ছে কেন? তাঁদের চোখে-মুখে বিস্ময়। দাম বাড়ার কারণ তাঁরা বুঝতে পারছেন না। সত্যিই তো। আচমকা আলুর দাম এত বাড়ল কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করল টিভি নাইন বাংলা।

একমাস আগে আলুর যা দাম ছিল, এখন তার চেয়ে কিলো প্রতি ১০-১২ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বাজারে ৫০ কেজি জ্যোতি আলুর দাম ১২০০ টাকা। ৫০ কেজি চন্দ্রমুখী আলুর দাম ১৩৫০ টাকা। ক্রেতারা বলছেন, জ্যোতি আলু ২৫-৩০ টাকা কিলো দরে কিনতে হচ্ছে। আর চন্দ্রমুখী আলুতে তো হাত দেওয়াই যায় না। চন্দ্রমুখী আলু ৪০-৫০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, মাঠ থেকে বিক্রির সময় তাঁরা ৫০ কেজি আলুর জন্য পেয়েছিলেন ৭০০ টাকা। তাঁদের বক্তব্য, তাঁদের কাছ থেকে আলু কিনে হিমঘরে নিয়ে যাওয়া, সেখানে রাখার জন্য আরও ২৫০ টাকার মতো খরচ হয়। সবমিলিয়ে ৯৫০ টাকা পড়ে। সেটাই এখন বাজারে বস্তা পিছু বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়।

রাজ্যের প্রধানত হুগলি, হাওড়া ও বর্ধমানে আলু চাষ হয়। প্রতি বছর হুগলি জেলায় আলু উৎপাদন হয় প্রায় ২৮ লক্ষ মেট্রিক টন। ১২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু এ রাজ্যে বিক্রি হয়। বাকি আলু ভিন রাজ্যে রফতানি হয়। বৃষ্টির জন্য এবছর হুগলি জেলায় ২৫-৩০ শতাংশ আলু উৎপাদন কম হয়েছে।

কিন্তু, ২৫-৩০ শতাংশ আলু কম উৎপাদনের জন্য কি দাম এতটা বাড়তে পারে? কৃষক এবং বিক্রেতারা বলছেন, এতটা দাম বাড়ার কারণ নেই। তাহলে দাম বাড়ছে কেন? ফড়েদের যুক্তি, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অতি বৃষ্টিতে ফলন নষ্ট হয়েছে। শীতে আলুর ভাল ফলন হয়নি। তার উপর এখন বেশিরভাগ হিমঘর বন্ধ রয়েছে। তাই, আলুর জোগান কম। উত্তর প্রদেশে, পঞ্জাব থেকে আলু আনতে হচ্ছে। পরিবহণ খরচ বাড়ায় দাম বাড়ছে আলুর।

সত্যিই কি তাই? অভিযোগ, হিমঘর মালিকদের একাংশ এবং ফড়েরা যোগসাজশ করে একসময় বাজারে অনেক আলু ছাড়ে। এর ফলে দাম কমে আলুর। তখন তারা রটিয়ে দেয়, আলুর দাম আরও কমতে পারে। দাম কমার আশঙ্কায় কৃষকরা হিমঘরে রাখা আলু বিক্রি করে দেন। আলুর বন্ড কিনে নেন ফড়েরা। তারপরই বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করা হয়। দাম বাড়ানো হয় আলুর। এই পরিস্থিতি তিন-চার মাস থাকে বলে অভিযোগ।

ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, আরও বাড়তে পারে আলুর দাম। তাঁদের আবেদন, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ করুক সরকার। কারণ যাই হোক, আলুর দাম বৃদ্ধিতে টান পড়েছে মধ্যবিত্তের পকেটে।

অনেকসময় মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তাদের বলতে শোনা যায়, আজ তেমন কিছু রান্না করতে হবে না। আলু সেদ্ধ ভাত খেয়ে নেব। এবার বোধহয়, সেটা বলার আগেও দু’বার ভাবতে হবে মধ্যবিত্ত বাঙালিকে।