Jharkhand MLAs: বিধায়কের গাড়িতে এত টাকা কী করছিল? নেতার ভাইয়ের সাফাই ‘আদিবাসীদের জন্য উপহার’
Jharkhand: বিধায়কের ভাইয়ের দাবি অনুযায়ী, ওই বিশাল অঙ্কের নগদ অর্থ 'আদিবাসীদের জন্য উপহার' কেনার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। প্রতি বছর তাঁর ভাই নাকি কলকাতার বড়বাজার এলাকা থেকে আদিবাসীদের জন্য শাড়ি কেনেন।
কলকাতা ও রাঁচি: গাড়ির মধ্যে ভর্তি টাকার গাদা। নোটের বান্ডিল। হাওড়ার পাঁচলা থানা এলাকা থেকে শনিবার সন্ধেয় ওই গাড়িটি আটকানো হয়েছিল। গাড়িতে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। গাড়ির সামনে এমএলএ স্টিকারও লাগানো ছিল। ওই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গাড়িতে ঝাড়খণ্ডের যে তিন বিধায়ক ছিলেন, তাঁরা হলেন ইরফান আনসারি, রাজেশ কাশ্যপ এবং নমন বিক্সাল কোঙ্গারি। আনসারি জামতারার বিধায়ক। রাজেশ কাশ্যপ খিজরির বিধায়ক এবং কোঙ্গারি কোলেবিরার বিধায়ক। হাওড়া জেলার পাঁচলা থানা এলাকায় রানিহাটিতে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর গাড়িটি আটকানো হয়।
ইরফান আনসারির ভাই ইমরান অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর ভাইকে ফাঁসানোর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কী কারণে ওই বিপুল পরিমাণে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বিধায়কের ভাইয়ের দাবি অনুযায়ী, ওই বিশাল অঙ্কের নগদ অর্থ ‘আদিবাসীদের জন্য উপহার’ কেনার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। প্রতি বছর তাঁর ভাই নাকি কলকাতার বড়বাজার এলাকা থেকে আদিবাসীদের জন্য শাড়ি কেনেন। বলেন, “প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিনি ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতার বড় বাজারে এসেছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “বাজেয়াপ্ত করা ওই নগদ অর্থ কোটির অঙ্কে নয়। আমি সকাল থেকে এসেছি এবং তাঁদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু থানা থেকে কোনওভাবেই সাহায্য করা হচ্ছে না।”
এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোড়া কেনা-বেচার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কংগ্রেস তরফ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেসের জোট সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেসের বক্তব্য বিধায়কদের মাধ্যমে সরকার ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ড কংগ্রেসের প্রধান রাজেশ ঠাকুর সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, “সবাই দেখেছে কীভাবে কী হয়েছে। ১৫ দিন ধরে নাটক চলার পর এবং শেষ পর্যন্ত মহারাষ্ট্র সরকারকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল… এর থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ঝাড়খণ্ড সরকারকে টালমাটাল করার ষড়যন্ত্র চলছে। আগামী দিনে বিষয়গুলি আরও পরিষ্কার হবে।” এদিকে, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও টুইটারে লিখেছেন, “ঝাড়খণ্ডে বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’ আজ রাতে হাওড়ায় বেরিয়ে এসেছে।”
যদিও বিষয়টি নিয়ে বিজেপি পাল্টা চাপ তৈরির চেষ্টা করছে কংগ্রেসের উপর। বিজেপির ঝাড়খণ্ডের সভাপতি দীপক প্রকাশ এই বিষয়ে কংগ্রেসের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন এবং বলেছেন, “কংগ্রেস বিধায়কদের ব্যাখ্যা করা উচিত যে তাঁরা এত বিপুল পরিমাণ নগদ কোথায় পেয়েছেন।” অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, সিবিআই, ইডি এবং আয়কর দফতরের উচিত তিন কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে পাওয়া বিপুল পরিমাণ নগদ বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত করা।
পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও ঘটনার তদন্তের দাবি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী শশী পাঁজা দাবি করেছেন, বিধায়করা নগদ টাকা কোথা থেকে পেয়েছেন, তার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হোক। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে একটি টুইটও করা হয়েছে।