Child Death: এবার বুঝি দেওরের কাছে গুরুত্ব কমে যাবে, ভয় পেয়েছিলেন বৌদি… সেই রাগেই ট্যাঙ্কে ফেললেন একরত্তিকে?
Howrah: শামিমের ছোট্ট সংসারে ভালই ছিলেন বৌদি ও মেয়ে। এরইমধ্যে গত ১ অগস্ট শামিমের স্ত্রী শামার কোল আলো করে এক পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।
হাওড়া: মা বুকের কাছে জড়িয়ে শুয়েছিলেন পাঁচ দিনের শিশুপুত্রকে। সকালে চোখ খুলতেই দেখেন, কোল ফাঁকা। একদিন পর জলের ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় সদ্যোজাতর পচে ফুলে ওঠা দেহ। ভয়াবহ নৃশংসতার সে ছবি শনিবারই দেখেছে টিকিয়াপাড়ার শ্রীনাথ পোড়েল লেনের বাসিন্দারা। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে ওই শিশুর জ্যেঠিমার দিকে। শামা পরভিন নামে ওই মহিলাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। উত্তরে বেশ কিছু ‘কিন্তু’ উঠে আসে। এরপরই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। রবিবার আদালতে তুলে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা শুরু করতেই উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, শামা জেরার মুখে জানিয়েছেন, দেওরের ঘরে ছেলে জন্মানোর পরই তাঁর মধ্যে আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছিল। এরপরই এই ঘটনা ঘটান। যদিও দেওরের সঙ্গে বৌদির সম্পর্ক নিয়েও ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। আপাতত হাওড়া থানার পুলিশের হেফাজতেই রয়েছেন ধৃত। কাকতালীয়ভাবে যে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে তার মায়ের নামও শামা পারভিন, অভিযুক্ত জ্যেঠিমার নামও শামা পারভিন।
কিন্তু জ্যেঠিমার এমন কি নিরাপত্তাহীনতা কাজ করল, যে এমন একটা ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠল? সূত্রের খবর, ধৃত শামা পারভিনকে জেরা করে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, বছরখানেক আগে শামার স্বামী মারা যান। তাঁদের একটি ছোট্ট মেয়ে আছে। স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়েকে নিয়ে টিকিয়াপাড়ার ২০ নম্বর শ্রীনাথ পোড়েল লেনে দেওর শামিম উদ্দিনের ফ্ল্যাটেই এসে ওঠেন তিনি।
শামিমের ছোট্ট সংসারে ভালই ছিলেন বৌদি ও মেয়ে। এরইমধ্যে গত ১ অগস্ট শামিমের স্ত্রী শামার কোল আলো করে এক পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। পুলিশি জেরায়, অভিযুক্ত শামা জানিয়েছেন, দেওরের ঘরে ছেলের জন্ম হতেই তাঁর মনে ভয় কাজ করছিল। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন, এবার বোধহয় দেওরের আশ্রয় হারাতে হবে তাঁদের। ভয় ছিল, তাঁর মেয়ের তুলনায় এবার দেওরের কাছে গুরুত্ব পাবে সন্তান। এমনও নাকি শামা পুলিশকে জানান, ভয় পেয়েছিলেন মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাবেন, কী খাবেন। এরপরই নাকি শামা ঠিক করেন, ছোট্ট পাঁচদিনের শিশুকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবেন।
যদিও পুলিশ এ তত্ত্বের পাশাপাশি আরও একটি বিষয়ও খতিয়ে দেখছে। প্রশ্ন উঠছে, দেওরের সঙ্গে কি কোনওরকম বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন অভিযুক্ত? নিছক আর্থিক, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার কারণেই সন্তানের মা হয়েও এক মহিলা এমন নৃশংস ঘটনা ঘটালেন? নাকি এ ঘটনার শিকড় আরও গভীরে? তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেও শিশুটিকে খুন করা হতে পারে। যদিও সবটাই এখনও তদন্তসাপেক্ষ। রবিবারই হাওড়া আদালত ধৃতকে পাঁচদিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে। আরও জেরা ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই খুনের আসল কারণ স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।