Inspirational story: বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ! পেট্রল পাম্পের আলোতে বসেই পড়াশোনা ভাই-বোনের

জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা আপন তন্ত্র। আজ থেকে ১০ বছর আগে তাঁর বাড়িতে বিল এসেছিল দেড় লাখ টাকা। কোনও মতে সংসার চালানো এই পরিবার বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় সংযোগ কেটে দেয় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা।

Inspirational story: বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ! পেট্রল পাম্পের আলোতে বসেই পড়াশোনা ভাই-বোনের
পেট্রল পাম্পের আলোয় পড়াশোনা। নিজস্ব চিত্র। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 31, 2023 | 7:15 AM

জলপাইগুড়ি: বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। তাই পেট্রল পাম্পের আলোতে পড়াশোনা করছে দুই খুদে পড়ুয়া। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বালাপাড়ায় জাতীয় সড়কের পাশে পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকার এ অতি পরিচিত দৃশ্য। প্রত্যেক দিন সন্ধ্যার পর এভাবেই পড়াশোনা করে রাজ ও রাখি। রাজ রাখির দাদা। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে সে। রাখি পড়ে প্রথম শ্রেণিতে। রাজ যখন প্রথম শ্রেণিতে ওঠে, তখন থেকেই এ ভাবেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে সে। তাকে দেখে বোন রাখিও পড়তে বসে পড়ে পেট্রল পাম্পের আলোয়।

জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা আপন তন্ত্র। আজ থেকে ১০ বছর আগে তাঁর বাড়িতে বিল এসেছিল দেড় লাখ টাকা। কোনও মতে সংসার চালানো এই পরিবার বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় সংযোগ কেটে দেয় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। এরপর মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হন আপন তন্ত্রের বাবা নীরেন তন্ত্র। এর পর কেটে গিয়েছে ১০টা বছর। বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কেরোসিন কিনতেও হিমসিম খেতে হয় ওই পরিবারকে। তাই কার্যত অন্ধকারে ডুবে থাকে পরিবারটি। কিন্তু এর মধ্যেও থেমে নেই তন্ত্র পরিবারের দুই খুদের পড়াশোনা। রাস্তার ধারে পেট্রল পাম্পের আলোতেই পড়াশোনা চালাচ্ছে তারা। রাস্তায় আলোয় বিদ্যাকসাগরের পড়াশোনার কাহিনি শুনতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু রাজ ও রাখি সেই ঘটনার জ্বলন্ত উদাহরণ।

ভোট আসে ভোট যায়। অসহায়ের সমস্যা রয়েই যায়! সম্প্রতি ওই এলাকায় পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়েছে। কিন্তু এই পরিবারের সমস্যা কোনও দলেরই নজর কাড়তে পারেনি। রাজ ও রাখির বাবা আপন তন্ত্রের দাবি, তাঁর বাবা নীরেন তন্ত্র অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় আত্মহত্যা করেছিলেন। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁদের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে কুপির আলোতেই চলছে রান্নাবান্না, খাওয়া দাওয়া। আপনের স্ত্রী সুধা তন্ত্র জানিয়েছেন, বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় তাঁর ছেলে ও মেয়ে পেট্রল পাম্পের আলোতেই পড়াশোনার চেষ্টা করছে। পাম্পের আলোতে পড়াশোনা করতে অসুবিধা হয় বলে জানিয়েছেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাজ। বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলে পড়াশোনায় সুবিধা হত বলে মনে করে সে।

এই ঘটনা নিয়ে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার বলেছেন, “এই সময় দাঁড়িয়ে এ ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। যদিও এই পরিবার আমাদের কিছু জানায়নি। জানানো হলে আমরা বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতাম। আপনাদের কাছ থেকে জানলাম খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”