Jalpaiguri: ‘৩০ বছরেরও বেশি বিজেপি করেছি, দল মর্যাদা না দিলে ফল পাবে’, বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতার বক্তব্যে শোরগোল

West Bengal: রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শ্রী দয়াল হলে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সমস্ত বিধানসভা থেকে বাছাই করা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন বিজেপি কর্মীরা।

Jalpaiguri: '৩০ বছরেরও বেশি বিজেপি করেছি, দল মর্যাদা না দিলে ফল পাবে', বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতার বক্তব্যে শোরগোল
বিজেপির কর্মিসভা (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2022 | 1:57 PM

জলপাইগুড়ি: পুরসভার ভোটে আশানুরূপ ফল করেনি বিজেপি। তাই পঞ্চায়েত ভোটে জমি শক্ত করতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। কিন্তু এরই মধ্যে বিপত্তি। ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের হারিয়ে দেওয়ার হুমকি বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের গলায়।

রবিবার বিকেলে জলপাইগুড়ি শ্রী দয়াল হলে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সমস্ত বিধানসভা থেকে বাছাই করা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন বিজেপি কর্মীরা। সেই বৈঠকে জেলা সভাপতিকে তুলোধুনা করেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। কেউ বলেন, ‘জেলা সভাপতি বদল না হলে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীদের হারিয়ে দেওয়া হবে।’ কেউ-কেউ তো আবার মারধরের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘জেলা সভাপতির ঠ্যাং ভেঙে দেব’ একই সঙ্গে জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীর অপসারণও দাবি করা হয়।

শুধু তাই নয় দলের জেলা সভাপতির অপসারণ দাবি করে ‘সমান্তরাল বিজেপি’ দল চালাবেন বলেও দাবি করেন উপেক্ষিত বিজেপি কর্মী ও নেতারা। জেলা সভাপতি তাঁদের দলীয় কর্মসূচি করতে বাধা দিলে সভাপতির বিরুদ্ধে সুনামি হবে। আর যত দিন না বর্তমান জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামিকে রাজ্য নেতৃত্ব সরিয়ে দিচ্ছে, ততদিন নিজেরাই দলের বিভিন্ন কর্মসূচি বিজেপির ব্যানারে পালন করবেন বলে সাফ জানিয়ে দেন তাঁরা।

এ দিনের, বৈঠকে দলের জেলা, ব্লক, মণ্ডল কমিটির নেতারা একে-একে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বাক্য বোমা ফাটালেন। এই বিষয়ে বিজেপির ময়নাগুড়ি ব্লক নেতা অনুপ পাল জানান, ‘১৯৮৯ সাল থেকে আজও বিজেপি করছি। অনেক বছর আগে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বর্তমান জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী নতুন দল আমরা বিজেপি গঠন করেছিলেন। আমি ও আমার নেতৃত্ব বিধায়ক কৌশিক রায়কে জিতিয়েও আজ দলে উপেক্ষিত।এই দল আমাদের রাখুক বা না রাখুক বিজেপিতে থেকেই সংগঠন করব। আমি রবিবার জেলা কার্যকরি কমিটির বৈঠকে ডাক পাইনি।’

অপরদিকে, দলের জেলা কমিটির বর্ষীয়ান নেতা সুখদেব সরকার বলেন, ‘কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র। জেলার ধান্দাবাজ কিছু নেতার সঙ্গে এই ধৃতরাষ্ট্র নেতৃত্ব আটঘাট বেঁধে আঁতাত করেছে। কবে এদের কোমর সোজা হবে জানি না। জেলা বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে এই ধান্দাবাজেরা অশান্ত পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে।’

ধূপগুড়ি টাউন মণ্ডলের নেতা গৌতম সরকার বলেন, ‘পুর এলাকার সবকটি ওয়ার্ডে বুথে-বুথে প্রচার করে লিড দিলাম। এবার পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের হারিয়ে দেব। আসছে ধূপগুড়ি পৌরসভা সেখানেও বিজেপি হারবে। আমি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বিজেপি করছি। ১৮ দিন জেল খেটেছি, বিজেপির জন্য। অথচ আমরাই বাদ। দল যদি ভাল না বাসে, মর্যাদা দিতে না পারে, তাহলে দল তার ফল পাবে। জেলা সভাপতি এলাকায় এলে ঠ্যাং ভেঙে দেব।’

এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির বর্তমান কার্যকরি সদস্য তথা বিক্ষুদ্ধ নেতাদের মুখ অলোক চক্রবর্তী জানান, ‘আমরা জেলা সভাপতির অপসারণ চেয়েছি। বিজেপিতে থেকেই দলের নয়, জেলা সভাপতির বিরোধিতা করা হবে। কিন্তু বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারি সমস্ত কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে পালন করবো।’

ঘটনায় বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী টেলিফোনে বলেন, ‘যাঁরা সভা করে বলেন পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের কাছে আর কী আশা করা যায়? এদের সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না। এদের করা মন্তব্যের ওপর আমি কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।’