মানুষের কথা বললেই বিচ্ছিন্নতাবাদী? পৃথক রাজ্যের দাবি অবৈধ নয়: দিলীপ

জন বার্লাকে পাশে বসিয়ে এমনটাই দাবি করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গ বা জঙ্গলমহলের মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।'

মানুষের কথা বললেই বিচ্ছিন্নতাবাদী? পৃথক রাজ্যের দাবি অবৈধ নয়: দিলীপ
জন বার্লাকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2021 | 2:27 PM

জলপাইগুড়ি: বিজেপি (BJP) সাংসদের পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। মাস দুয়েক পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলেছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা (John Barla)। শুধু জন বার্লা নয়, রাঢ়বঙ্গের জন্য একই দাবি শোনা গিয়েছিল আর এক সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র গলাতেও। দলের তরফে সেইসময় কড়া বার্তা দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে আজ উত্তরবঙ্গে গিয়ে জন বার্লাকে পাশে বসিয়ে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, ‘পৃথক রাজ্যের দাবি অবৈধ নয়।’ তাঁর বক্তব্য, মানুষের অধিকারের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবি তোলা অমূলক নয়।

দু’দিনের সফরে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। আজ, শনিবার সকালে জলপাইগুড়িতে দলীয় কার্যালয়ে জন বার্লাকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘আজ যদি উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল আলাদা রাজ্যের দাবি তোলে, তাহলে তার সম্পূর্ণ দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন এই সব অঞ্চলে কোনও উন্নয়ন হয়নি? সেই প্রশ্নই তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, এখনও উত্তরবঙ্গ বা জঙ্গলমহলের মানুষকে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের জন্য বাইরের রাজ্যে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দেশে থেকেও কেন অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে কাজের জন্য, শিক্ষার জন্য? কেন এতদিনে কোনও উন্নয়ন হয়নি।’

এই প্রশ্ন তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এই অবস্থায় যদি তারা পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে থাকেন, তাহলে তা অবৈধ নয়।’ দিলীপের দাবি, জন বার্লা একজন জনপ্রতিনিধি, তাই মানুষের কথা তুলে ধরা তাঁর কাজ। জিটিএ-র কথা স্মরণ করিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘গোর্খাল্যান্ডের দাবি জিইয়ে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সই করেছিলেন তখন কোনও দোষ হয়নি, আর আমরা মানুষের কথা তুলে ধরলেই বিচ্ছিন্নতাবাদী?’

জন-সৌমিত্রদের এই দাবিকে ন্যায়সঙ্গত বলেই আগেও উল্লেখ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। আগেও তিনি বলেছিলেন, ‘রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন না হলে মানুষের বলার অধিকার আছে। সুযোগ এসেছে বলে আজ সবাই নিজের নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা অত্যাচারিত, বঞ্চিত, শোষিত। তৃণমূল বা সিপিএম যারা এতদিন বাংলাকে শাসন করেছে, তাদের অপদার্থতার জন্য আজ বাংলার মানুষের মনে এই হতাশা এসেছে।’ তবে দলের অবস্থান ওই সাংসদদের বিরোধী ছিল। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, ‘দলে থাকতে গেলে দলের সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করতে হবে।’

নিজের অবস্থানে বরাবরই অবশ্য অনড় ছিলেন জন। তাঁর মতে, তৃণমূল আমলে কোনও উন্নয়নই হয়নি। খালি ডুয়ার্স, উত্তরকন্যা বানালে উন্নয়ন হয় না। তিনিও দাবি করেছিলেন, কেন নিজের রাজ্যে কাজ পাবেন না, কেন পরিবারের সঙ্গে তাঁরা থাকতে পারবেন না।

দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ভোটের আগে বিজেপি একবারও আলাদা রাজ্যের কথা বলেনি। বিজেপি এখন হেরো। ভোটে হেরে এরা এখন ভিখারিতে পরিণত হয়েছে। তাই এখন এ সব দাবি তুলছে। এ সব করে লাভ নেই কারণ উত্তরবঙ্গ আর দক্ষিনবঙ্গ মিলিয়েই পশ্চিমবঙ্গ।’ তাঁর দাবি, দিলীপ ঘোষ আর বেশিদিন রাজ্য সভাপতি থাকবেনা। তাই উনি এমন বলছেন। আরও পড়ুন: ‘মৃতদের মধ্যে ১৬ জনই তৃণমূলকর্মী, উদ্বিগ্ন নয় তৃণমূল’