Crime in Dhupguri: গর্ভপাতের কথা ফাঁস হতেই বেপাত্তা ফার্মেসির মালিক! TV9 বাংলার খবরের জেরে টনক নড়ল প্রশাসনের

TV9 Bangla Impact: ওই ওষুধের দোকানের উপরে যে ভাবে শয্যাগুলি পাতা রয়েছে, দেখে মনে হবে ছোটখাটো কোনও ক্লিনিক। কী কারণে ওষুধের দোকানে এই ব্যবস্থা তা নিয়ে অবশ্য দোকান মালিক স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

Crime in Dhupguri: গর্ভপাতের কথা ফাঁস হতেই বেপাত্তা ফার্মেসির মালিক! TV9 বাংলার খবরের জেরে টনক নড়ল প্রশাসনের
এই দোকান ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 12, 2021 | 6:35 PM

জলপাইগুড়ি:  গর্ভপাতের রমরমা কারবারের কথা TV9 বাংলায় ফাঁস হতেই বেপাত্তা অভিযুক্ত ফার্মেসির মালিক। এদিকে, খবর সম্প্রচারের পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনাস্থল সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে রবিবার সকালেই সেখানে অভিযান চালান ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলা আধিকারিকেরা।

কিন্তু ততক্ষণে এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন দোকানের মালিক। ফলে তদন্ত করতে গিয়েও দোকানে ঢুকতে পারেননি আধিকারিকেরা। বারবার ফোনে দোকানের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনও লাভ হয়নি। এমনকি, তাঁকে স্বাস্থ্য দফতরে ডেকেও পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেখানেও আসেননি।

অন্যদিকে, আজ ভোরেই নাকি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন অভিযুক্ত। দোকানের সামনেই অর্ধদগ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে রক্তমাখা কাপড়, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বিছানার চাদর। কিন্তু এলাকাবাসীর বক্তব্য, এতকিছু প্রকাশ্যে আসার পরেও কেন ওই ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে তদন্ত চালাচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর? তাহলে কি সরষের মধ্যেই ভূত, সরকারি চিকিৎসক কিংবা নার্সকে আড়াল করার চেষ্টা চলছে না তো?

যদিও, জেলা স্বাস্থ্য় আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এইধরনের অপরাধকে কোনওরকম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। পাশাপাশি এই ‘দুষ্কর্মের’ জাল কতদূর বিস্তৃত তাও খতিয়ে দেখা হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।

বিষয়টি নজরে আসে বেশ কিছুদিন আগে। অভিযোগ, খালি চোখে মনে হবে ওষুধের দোকান। কিন্তু তারই আড়ালে ভয়ঙ্কর কারবার চালানো হয় সেখানে। ধূপগুড়ি শহর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে গিলান্ডি মোড় পূর্ব মাগুরমারি এলাকার এই ঘটনা। যদিও দোকানের মালিক জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা।

বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল, পূর্ব মাগুরমারির ওই ওষুধের দোকানের উপরে একটি ঘরে কয়েকটি শয্যা পাতা রয়েছে। কেন এই শয্যা পাতা তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। এলাকাবাসীর দাবি, এখানে গর্ভপাত করানো হয়। টাকা দিলেই অবৈধ ভাবে চলে অ্যাবরশন-পর্ব। স্থানীয়দের দাবি, ইতিমধ্যে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে তাঁরা বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এরপরও সামান্য তদন্তটুকু করেনি প্রশাসন।

যখন ভ্রূণহত্যা রুখতে সরকার বিভিন্ন জায়গায় একাধিক প্রচার চালাচ্ছে, পোস্টারিং করছে বিভিন্ন দেওয়ালে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে জেলাজুড়ে রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। কিন্তু কোনও হেলদোল ছিল না জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের। এই ঘটনায় এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের নামও ভেসে উঠেছে।

ওই ওষুধের দোকানের উপরে যে ভাবে শয্যাগুলি পাতা রয়েছে, দেখে মনে হবে ছোটখাটো কোনও ক্লিনিক। কী কারণে ওষুধের দোকানে এই ব্যবস্থা তা নিয়ে অবশ্য দোকান মালিক স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে মালিক অমর রায় জানান,  এ ধরনের কোনও কার্যকলাপ এখানে হয় না। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। এর আগে একজন সরকারি চিকিৎসক এখানে আসতেন। করোনার পর থেকে আর তিনি আসেন না। তা হলে এই বেডগুলো কেন? কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি অমর রায়।

স্থানীয় শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ রায়। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, আগে এ ধরনের অভিযোগ শোনা যেত। মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ ছিল। সম্প্রতি আবার সেই অভিযোগই উঠছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা তাপস রায়ের কথায়, বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরপরই বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়।

যদিও জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে দু’জন আধিকারিক নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। যেখানে একটি নির্দিষ্ট ওষুধের দোকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এটা আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাঠালে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এরপরেই সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। দ্রুত ওষুধের দোকানে অভিযানে আসেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।

আরও পড়ুন: Weather Update: আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও নামবে পারদ, বঙ্গদুয়ারে দাঁড়িয়ে শীত