Jalpaiguri: তিন দিন ধরে আটকে সাইকেলের নাট, বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল রক্ত চলাচল; অপারেশন হল জলপাইগুড়ি হাসপাতালে

Jalpaiguri: রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুকে। সেই সময় হাসপাতালে অন কল সার্জেন ছিলেন চিকিৎসক সঞ্জীব কুমার রায়। শিশুটিকে দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে তিনি সিদ্ধান্ত নেন অপারেশন করার।

Jalpaiguri: তিন দিন ধরে আটকে সাইকেলের নাট, বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল রক্ত চলাচল; অপারেশন হল জলপাইগুড়ি হাসপাতালে
অস্ত্রপচার হল জলপাইগুড়ি হাসপাতালে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 11:08 PM

জলপাইগুড়ি : দিদি আর ভাই মিলে সাইকেলের নাট দিয়ে আংটি বদল খেলছিল। আর তাতেই ঘটে গিয়েছিল বিপত্তি। খেলতে খেলতে দিদি ভাইয়ের বাঁ হাতের মধ্যমায় নাটটি ঠেলে ঢুকিয়ে দেয়। তারপর থেকে আঙুলেই আটকে থাকে নাটটি। কোনওভাবেই আর সেটিকে বের করা যাচ্ছিল না। তিনদিন ধরে আঙুলে নাটটি আটকে ছিল এ ভাবেই। যত সময় গড়াচ্ছিল, আঙুল তত ফুলে উঠছিল। বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল রক্ত চলাচল। আর সঙ্গে যন্ত্রণাও হচ্ছিল প্রচুর। কাতরাচ্ছিল ছোট্ট ছেলেটি। এই পরিস্থিতিতে এলাকারই কিছু যুবক তাকে প্রথমে নিয়ে যায় এক সোনার দোকানে। ভেবেছিলেন, সেখানে গিয়ে যদি কোনওভাবে নাটটিকে কাটা যায়। কিন্তু বৃথাই যাওয়া। কোনও কাজ হয় না সেখানে।

এরপর রবিবার রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুকে। সেই সময় হাসপাতালে অন কল সার্জেন ছিলেন চিকিৎসক সঞ্জীব কুমার রায়। শিশুটিকে দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে তিনি সিদ্ধান্ত নেন অপারেশন করার। এরপর আর দেরি না করে চটজলদি টিম গঠন করে নেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে শিশুটির জটিল অপারেশন। তার আঙুল বাঁচিয়ে লোহার তৈরি মোটা নাট টুকরো টুকরো করে কেটে বের করা হয়।

জলপাইগুড়ি রংধামালি এলাকার বছর চারেকের আদিবাসী শিশু পিয়াশু ওড়াও। তার বাবা মারা গিয়েছেন। মাও সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। এই অবস্থায় ভাই বোনকে দেখাশোনা করেন তার বয়স্ক ঠাকুমা। তাই হাসপাতালে কে নিয়ে আসবে শিশুটিকে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এরপর স্থানীয় যুবকরাই উদ্যোগী হয়ে প্রথমে তাঁকে নিয়ে যায় স্বর্ণকারের কাছে, তারপর জলপাইগুড়ি হাসপাতালে।

চিকিৎসক সঞ্জীব কুমার রায় বলেন, “হাসপাতালে আনলে আমি দেখার পর দ্রুত অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেই। এরপর টিম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে নাটটি টুকরো টুকরো করে কেটে বার করা হয়। শিশুটির যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য তাকে অজ্ঞান করে নিয়েছিলাম। এখন শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।” অপরদিকে চিকিৎসকের এই প্রচেষ্টায় বেজায় খুশি শিশুটির পরিবার ও যুবকেরা। তাঁরাও চিকিৎসকের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, “প্রিয়াশুর আঙুলটা রক্ষা পেয়েছে, এটাই আমাদের কাছে খুব বড় পাওনা।”