Jalpaiguri: আমাকে মেরে ফেলবে’, জানালা দিয়ে ছোড়া চিরকুটই ‘বাঁচাল’ গৃহবধূকে
Jalpaiguri: মারধর করে আটকে রাখা হয়েছিল ঘরে, খেতেও দেওয়া হয়নি, শেষে প্রতিবেশীকে চিরকুট ছুঁড়ে বন্দিদশা থেকে মুক্তি গৃহবধূর।
জলপাইগুড়ি: ‘আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে। যত তাড়াতাড়ি পারেন আমার মা-কে খবর দিন।’ দুটি ফোন নাম্বার লেখা এই চিরকুট পেয়ে প্রথমে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন এক প্রতিবেশী। তবে হতভম্ভ ভাব কাটতেই তিনি ফোন করে বিস্তারিত ঘটনা জানান ওই নির্দিষ্ট নম্বরে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। এরপর মেয়ের বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের বচসা শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতিতে ঘর থেকে বের করা হয় ওই গৃহবধূকে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) তেলিপাড়ায়।
রাতেই বানারহাট থানার বিন্নাগুড়ি ফাঁড়িতে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই গৃহবধূ। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি তাঁর স্বামী তাঁকে জানান তাঁকে বিহারে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করতে চান। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই শাশুড়ি তাঁকে বেধড়ক মারধর করে ঘরে আটকে রাখেন। একদিন তাঁকে খেতেও দেওয়া হয়নি। কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইলও। পাঁচদিন এভাবে কাটানোর পর অবশেষে চিরকুটের মাধ্যমে নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে রক্ষা পান ওই গৃহবধূ। প্রসঙ্গত, একদিন আগেই হুগলিতে নিজের স্ত্রীর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। জলপাইগুড়ির ঘটনায় অভিযুক্ত এবার সেনাবাহিনীতে হাবিলদারের কাজ করেন বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমান তিনি কাজের সূত্রে বাইরে রয়েছেন।
সূত্রের খবর, বিনোদ কুমার শাহের সঙ্গে রায়গঞ্জের বাসিন্দা সুমিত্রা সরকারের ফেসবুকে পরিচয় হয়। ৫ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাঁদের একটা তিন বছরের সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর স্বামীর কাজের সূত্রে তাঁরা প্রথমে পুনেতে ছিলেন। পরবর্তীতে স্বামীর বদলি হওয়ার পর তেলিপাড়ায় চলে আসেন তাঁরা। কিন্তু, এখানে আসেতেই স্বামী ও শাশুড়ি মিলিতভাবে সুমিত্রার উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। এমনকী শ্বশুরেরও মদত ছিল বলে পুলিশে জানানো অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন সুমিত্রা। যদিও এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিনোদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই ওই গৃহবধুর স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ ধারায় মামলা রজু করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে শাশুড়িকে।
স্থানীয় সাঁকোয়াঝোরা-১ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সীমা দাস জানান, “গতকালকে আমি মেয়েটির লেখা চিরকুটের বিষয়ে জানতে পারি। আজকে সকালে ওর বাড়ির লোকেরা এলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি চিরকুটে লেখা বিষয়টি সত্য। এরপর পুলিশ এর উপস্থিতিতে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়।”