Jalpaiguri School: ক্লাস শুরুর আগে ইউনিফর্ম পরেই ঝাঁটা হাতে সাফাই, জলপাইগুড়ি সরকারি স্কুলের করুণ পরিণতি

Jalpaiguri School: অতিথি শিক্ষিকা এতোয়া তুরি ও রামজি ছেত্রী জানান, স্কুলের দরজা খোলা থেকে শুরু করে অফিসের কাজ, মিড ডে মিলের হিসাব নিকেশ সমস্ত কিছু সামলাতে হয়।

Jalpaiguri School: ক্লাস শুরুর আগে ইউনিফর্ম পরেই ঝাঁটা হাতে সাফাই, জলপাইগুড়ি সরকারি স্কুলের করুণ পরিণতি
জলপাইগুড়ি চা বাগানের স্কুলের করুণ পরিণতি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 08, 2022 | 12:21 PM

জলপাইগুড়ি: রোজ স্কুলে এসে আগে হাতে ঝাঁটা তুলে নেয় খুদেগুলো। একজন জল ঢালে, অপর জন ঝাঁটা হাতে সাফাই করে স্কুল চত্বর। তারপর হাত-মুখ ধুয়ে পঠনপাঠন। স্কুলের এটাই রেওয়াজ। চা বাগান শিশুদের একমাত্র ভরসা ডুডুমারি বস্তি হিন্দি জুনিয়ার হাই স্কুল। সেই স্কুলে নেই কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই, নেই কোন গ্রুপ ডি কর্মীও। সে কারণে নানান সমস্যায় ভুগছে স্কুলটি।

গ্রুপ-ডি কর্মী না থাকায় স্কুলপড়ুয়াদের স্কুলে এসে সাফাই কাজ করতে হয় স্কুলে। যে শিশুদের হাতে বই থাকার কথা, সেই শিশুরাই স্কুলে এসে পাঠদানের আগে স্কুল সাফাই করে ঝাড়ু হাতে। এমনি ছবি ধরা পড়ল ক্যামেরায়। স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় দিন দিন ছাত্র সংখ্যা কমতে বসেছে।

শুক্রবারও স্কুলে গিয়ে দেখা গেল একই ছবি। ছোট ছোট বাচ্চারা ইউনিফর্ম পরেই হাতে ঝাড়ু নিয়ে বারান্দা সাফ করছে। স্কুলের শিক্ষক ক্লাসের তালা খুলতে ব্যস্ত। সরকারি স্কুলের এমন করুণ পরিণতি দেখে স্থানীয় বাসিন্দারাও হতবাক। স্কুলে গিয়ে জানা গেল, বানারহাট ব্লকের চা বাগান এলাকায় অবস্থিত এই ডুডুমারি বস্তি হিন্দি জুনিয়ার হাই স্কুলের রোজকার রুটিন।

বর্তমানে এই স্কুলে দু’জন অতিথি শিক্ষক রয়েছেন। আপাতত তাঁরাই ক্লাস নিচ্ছেন। স্কুল প্রতিষ্ঠা লগ্ন ২০১১ সাল থেকে টানা এগারো বছর একাই স্কুল চালিয়ে স্থায়ী শিক্ষিকা মিনু রাই উসিসি পোর্টালের সুবাদে বদলি নিয়ে নিজের এলাকায় চলে যায়। এরপর থেকেই স্কুলের সমস্ত দায়িত্ব ভার অতিথি শিক্ষিকের হাতেই।

প্রথমে একজন অতিথি শিক্ষিকা দিয়ে পঠন-পাঠন চলছিল পরে আরও একজনকে অন্য স্কুল থেকে এনে রাখা হয়েছে। তবে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই। শিক্ষক না থাকায় স্কুলে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সংখ্যা যেমন কমছে, তেমনি স্কুলছুট সংখ্যাটাও বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী গ্যান্দ্রাপাড়া, দেবপাড়া রাংগাতি বস্তি চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা এই স্কুলে পড়তে আসে। কিন্তু মাত্র দু’জন অতিথি শিক্ষিকাকে দিয়ে স্কুল চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

অতিথি শিক্ষিকা এতোয়া তুরি ও রামজি ছেত্রী জানান, স্কুলের দরজা খোলা থেকে শুরু করে অফিসের কাজ, মিড ডে মিলের হিসাব নিকেশ সমস্ত কিছু সামলাতে হয়। এরপর বাচ্চাদের ক্লাস নেওয়া। সবটা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বর্ষাতে স্কুলের বারান্দাতেই পোষ্য গরু-ছাগল বেঁধে রাখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাতে বারান্দা আরও নোংরা হয়। ফলে স্কুল খুলে আগে বারান্দা জল দিয়ে ধুয়ে সাফ করতে হয়। অতিথি শিক্ষিকাদের দাবি, যদি একজন স্থায়ী শিক্ষক আসতেন, তাহলে তাঁদের অফিসিয়াল কাজের চাপ কিছুটা কমত। তাতে স্কুল পড়ুয়াদের সংখ্যাও আরও বাড়ত বলে আশাবাদী তাঁরা।

এ বিষয়ে ৪ নং সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত স্কুল পরিদর্শক রাজদীপ সরকার বলেন, “স্কুলের সমস্যার কথা আমরা জানি, বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। শুধু গ্রুপ ডি স্টাফের সমস্যা নয়, সেখানে ক্লার্কের সমস্যা রয়েছে। আমরা সমস্তটাই জানিয়েছি জেলাকে। যেহেতু নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে না, তাই সমস্যা হচ্ছে কিছুটা। তবে আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।”