Medical Student stuck Ukraine:চারিদিকে শুধু বোমা-গুলি, বাঙ্কারে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচাচ্ছেন জলপাইগুড়ির পড়ুয়ারা
Jalpaiguri: আশীষ পড়াশোনায় ছোটবেলা থেকেই ভালো। আর তাই গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় থেকেও বছর চারেক আগে ইউক্রেনে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পায়।

জলপাইগুড়ি: বেজে গিয়েছে যুদ্ধের দামামা। শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ইতিমধ্যে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে আটকে রয়েছে বাংলা থেকে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া অনেক পড়ুয়া। খবর আসছে, দুর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। কারোর খাবার শেষের পথে, কারোর নেই কাছে নেই টাকা-কড়ি। এই অবস্থায় সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের মানুষজন। এর মধ্যে আরও এক মর্মান্তিক খবর এল জলপাইগুড়ি থেকে। এক পড়ুয়া ইউক্রেন গিয়েছিলেন সহপাঠীদের সঙ্গে। এখন পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে মাটির নীচে বাঙ্কারে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কে ওই বাঙ্কারে লুকিয়ে রয়েছে পড়ুয়া।
ধূপগুড়ির ছাত্র আশীষ বিশ্বাস। সহপাঠীদের সঙ্গে সে দেশে পড়তে গিয়ছেন তিনি। এখন যুদ্ধ চলছে ওইখানে তাই একমাত্র ছেলের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা ভেবে রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন আশীষের মা-বাবা ও বোন। চিন্তায় রয়েছেন গ্রামবাসীরাও। বাবন বিশ্বাস ও রেখা বিশ্বাস। তাঁদেরই ছেলে আশীষ। বিশ্বাস দম্পতির এক মেয়েও রয়েছে। বাবন বাবুর ছোট্ট একটি গালামালের দোকান রয়েছে পার্শ্ববর্তী কাজীপাড়া বাজারে। মা রেখা বিশ্বাস বাড়ির কাজ সামলান।
পরিবার সূত্রে খবর, আশীষ পড়াশোনায় ছোটবেলা থেকেই ভালো। আর তাই গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় থেকেও বছর চারেক আগে ইউক্রেনে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পায় ভিএন কারাজিন খারকিভ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। তারপর থেকেই ইউক্রেনে রয়েছে সে। করোনার কারণে লকডাউনে বাড়িতে এসেছিল। দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফের ইউক্রেনে পাড়ি দেয় আশীষ। তবে বিদেশে থাকলেও ফোনে নিয়মিত কথা বলতো মা-বাবার সঙ্গে। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে । যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে অনেকেই আটকে পড়েছেন। আর ইউক্রেনের যুদ্ধের খবর দেখে চিন্তিত মা রেখা বিশ্বাস।
ইতিমধ্যেই আশিস বিশ্বাস ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন সেখান থেকে। আবেদন জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাতে তাদেরকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। কারণ রীতিমতো মাটির নীচে বাঙ্কারে লুকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। চারদিকে এখন শুধু মিসাইল বোমা পড়ার শব্দ।
শুক্রবার সকালে দেখা গেল রেখা দেবী বাড়ির কালী মন্দির পরিষ্কার করছেন এবং দেবীর কাছে প্রার্থনা করছেন। রেখা দেবি কাঁদতে-কাঁদতে জানালেন, “আমার এখন একটাই প্রার্থনা ছেলে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরে আসুক। এক বছরের বেশি সময় হলো ইউক্রেনে আছে ও। ছেলের সঙ্গে সারারাত ফোনে কথা হয়েছে । সকালেও ফোনে কথা হয়েছে । বললো ব্যবস্থা হচ্ছে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবে।” আশীষের বাবা বাবন বিশ্বাস বলেন, “ছেলে ইউক্রেনে তাই অবশ্যই চিন্তায় আছি। যদিও ছেলে জানিয়েছে যেখানে আছে সেখানে নিরাপদেই আছে। তবুও আমরা চাই ও দ্রুত সুস্থ ভাবে বাড়ি ফিরে আসুক।”





