Suicide in Dhupguri : জমি মাফিয়াদের চাপেই আত্মহত্যা? ধূপগুড়িতে ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন

Suicide in Dhupguri : সুইসাইড নোটে লেখা চারজনের মধ্যে বিজেপির টাউন মণ্ডল সম্পাদক স্নেহাশিস বক্সি, টাউন ব্লক সম্পাদক টুবন সরকারের ভাই রতন সরকারের নাম রয়েছে। যা নিয়ে বাড়ছে চাপানউতর।

Suicide in Dhupguri : জমি মাফিয়াদের চাপেই আত্মহত্যা? ধূপগুড়িতে ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে উঠছে প্রশ্ন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 09, 2023 | 10:28 PM

ধূপগুড়ি : সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। নির্বাচনী আবহে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি তপ্ত হচ্ছে উত্তরবঙ্গের মাটিও। পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে জোর টক্কর চলছে তৃণমূল-বিজেপির (TMC-BJP) মধ্যে। কিন্তু, দক্ষিণবঙ্গের (South Bengal) পর এবার কী উত্তরবঙ্গেও জমি মাফিয়াদের দাপট বাড়ছে? ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যুতে সেই অভিযোগেই তোলপাড় জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ধূপগুড়ি শহর। ধূপগুড়ির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন জাগ্রত বিশ্বাস। সূত্রের খবর, সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ী তাঁর কিছু জমি বিক্রি করেছিলেন। অভিযোগ, জমি বিক্রির টাকার ভাগ চায় জমি মাফিয়ারা। টাকা আদায়ে ব্যবসায়ীর উপর আসতে থাকে লাগাতার চাপ। 

সূত্রের খবর, গত রবিবার সিনেমা হল মোড়ের কাছে একটি দোকানে তাঁকে ডাকে জমি মাফিয়ারা। সেখানে ওই জাগ্রতবাবুকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, এরপরই বাড়ি ফিরে কীটনাশক খান ওই ব্যবসায়ী। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনা প্রসঙ্গে মৃত ব্যবসায়ীর মেয়ে পায়েল বিশ্বাসের অভিযোগ, “জমি মাফিয়ারাই মাঝেমধ্যে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয়ে বাবাকে হুমকি দিত। বাবার সুইসাইড নোট ছাড়াও তাঁর কল রেকর্ডিং সহ হুমকি দেওয়ার সমস্ত তথ্য ও প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। টাকার জন্যে ক্রমাগত হুমকির জেরে বাবার বাড়ি থেকে বের হওয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে তুলে নিয়ে মারধর এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ-অপমান মানুষটা আর সইতে পারল না। ওনার সামনে আমার মাকে যে ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে সেটাও মেনে নিতে পারেনি বাবা। লজ্জায়, অপমানে ও চাপে পড়েই আমার বাবা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।”

মৃত ব্যবসায়ীর লেখা দুটি সুইসাইড নোট (যদিও TV-9 বাংলা এই সুইসাইড নোটের সত্যতা যাচাই করেনি) রয়েছে বলে দাবি তাঁর পরিবারের। সেখানেই অভিযোগের তীর স্থানীয় তৃণমূল, বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে। সুইসাইড নোটে লেখা চারজনের মধ্যে বিজেপির টাউন মণ্ডল সম্পাদক স্নেহাশিস বক্সি, টাউন ব্লক সম্পাদক টুবন সরকারের ভাই রতন সরকারের নাম রয়েছে। যা নিয়ে বাড়ছে চাপানউতর। একইসঙ্গে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ উঠেছে মৃতের এক আত্মীয় রতন বিশ্বাস ও ভাইপো জিতং বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও। এই সুইসাইড নোট সামনে আসার পরেই শহরে জমি মাফিয়াদের ব্যাপক দাপট নিয়ে নতুন চাপানউতর শুরু হয়ে নাগরিক মহলে। চাপানউতর বেড়েছে রাজনৈতিক মহলেও। কখনও সরকারি জমি দখল করে বিক্রি, কখনও আবার ব্যক্তিগত জমি রাতারাতি দখল। দাবি একটাই, হয় মাফিয়াদের কাছে অর্ধেক দামে জমি বিক্রি করতে হবে নয়তো বিক্রির টাকার ভাগ দিতে হবে। ধূপগুড়ির বাসিন্দারা বলছেন এখানে এটাই জমি মাফিয়াদের অঘোষিত ফতোয়া। ধূপগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈকত দত্তেরও অভিযোগও এমনটাই। অভিোযোগ, তাঁর জমিও হাত করে নিয়েছে মাফিয়ারা। তিনি বলেন, “কিছু লোক আমার জমি চারিদিক বেড়া দিয়ে দিয়েছে। আমার নিজের জমির দলিলপত্র সব আছে। কিন্তু, সরকারি দফতর থেকেও কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। জমি মাফিয়ারাই এই কাজ করছে।”  এদিকে ব্যবসায়ীর মৃত্যুর পর বুধবার পর্যন্ত সুইসাইড নোটে নাম থাকা তিনজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। এদিকে অস্বস্তি বাড়লেও এলাকার তৃণমূল নেতাদের দাবি, দলের কেউ কোনও অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। একই সুর বিজেপির গলাতেও। এলাকার বিজেপি নেতাদের দাবি, অভিযোগ উঠলেই হবে না, দলের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত কি না তা তদন্ত করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।