কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে সব থেকে ভয় শিশুদের! আগাম সতর্কতায় রাজ্যে তৈরি হচ্ছে ‘পিকু’

ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির কোভিড (Covid-19) হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে পিকু ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ড তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনও।

কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে সব থেকে ভয় শিশুদের! আগাম সতর্কতায় রাজ্যে তৈরি হচ্ছে 'পিকু'
Follow Us:
| Updated on: Jun 03, 2021 | 11:40 PM

জলপাইগুড়ি: করোনার (COVID-19) দ্বিতীয় ঢেউয়ের গ্রাফ নিম্নমুখী। কিন্তু এর মধ্যেই দানা বাঁধতে শুরু করেছে তৃতীয় ঢেউয়ের জল্পনা। আর সেই ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে উত্তরবঙ্গজুড়ে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু। বিভিন্ন হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক পিকু (PICU) ওয়ার্ড। যার পুরো নাম পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট।

আরও পড়ুন: বাঁধ ভেঙে ভাসিয়েছে গ্রাম, সেই ভাঙা বাঁধেই ঘর বেঁধেছেন তুষখালির সুবলারা

কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে করোনায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। তৃতীয় ঢেউয়ে আরও বাড়তে পারে সেই প্রবণতা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গবেষণায় সে তথ্য উঠে এসেছে। চিকিৎসকমহলও সে ইঙ্গিতই দিয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ৩-৬ বছর বয়সী শিশুদের আক্রান্তের হার ২.০১%। ১৭ বছর পর্যন্ত কিশোরদের আক্রান্তের হার প্রায় ২১%। পরিস্থিতি সামলাতে আগেভাগেই উত্তরের সমস্ত জেলায় সরকারি হাসপাতালগুলিতে পিকু-তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

পিকু (PICU) আসলে কী?

পিকু-র (PICU) পুরো নাম পেডিয়েট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। পূর্ণবয়স্কদের জন্য যেমন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (ICU), শিশুদের জন্য তেমনই এই অত্যাধুনিক ইউনিট। এখানে শিশুদের জন্য যাবতীয় উন্নতমানের চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকবে।

ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির কোভিড হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে পিকু ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ড তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনও। সম্প্রতি এ নিয়ে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে, হাসপাতাল সুপার পার্থপ্রতিম মণ্ডল-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।

আরও পড়ুন: সবে খাবারটা মুখে তুলতে যাবে, বাইরে থেকে চিৎকার ‘পুলিশ এসেছে বিয়ে বাড়িতে’

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উত্তরবঙ্গের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি চিকিৎসক সুশান্ত রায় জানান, “আমরা আশা করছি আগামী ১৫ জুনের পর করোনা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হবে। তখন আমরা হয়ত একটু শ্বাস নিতে পারব। বর্তমানে জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালের পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। রোগীর সংখ্যা কমেছে। তবে তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে। আর তা এলে এবার শিশুরা আক্রান্ত হবে এটা ধরে নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি।”

সুশান্ত রায়ের বক্তব্য, “উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলা হাসপাতালে পেডিয়েট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতরের গাইড লাইন অনুযায়ী এই ধরনের ইউনিট সাধারণত মেডিক্যাল কলেজগুলিতেই থাকে। শিশু সুরক্ষার ব্যাপারে কোনও আপস না করে জেলায় জেলায় পিকু তৈরির প্রস্তাবকে মান্যতা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আসতে একটু সময় লাগে। তাই আমরা আশা করছি আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই পিকু তৈরির কাজ শুরু করতে পারব।”

বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চতুর্থ তলাতেও তৈরি করা হবে শিশুদের জন্য পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। থাকবে ২০টি বেড। এছাড়াও এই সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শিশুদের জন্য কোভিড ওয়ার্ডও থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে।