Snake: চা-বস্তিতে অজগরের সঙ্গে সেলফি, তুমুল উচ্ছ্বাস, খেতে হল কামড়ও… সচেতনতার অভাবকেই দুষছেন সর্প বিশেজ্ঞরা
Jalpaiguri: অভিযোগ, বীরসা ওরাওঁ নামে এক শ্রমিক সাপটিকে চেপে ধরেন। এরপরই অজগর সাপ কামড়ে দেয় বীরসাকে। সঙ্গে সঙ্গে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
জলপাইগুড়ি (বানারহাট): রাতের চা বাগানের শ্রমিক বস্তিতে হঠাৎই ঢুকে পড়ে অজগর সাপ। এরপর সেই সাপকে ধরে রীতিমতো হুল্লোড় চলে শ্রমিক বস্তিতে। সেলফি থেকে গ্রুফি, বাদ যায়নি কিছুই। এরইমধ্যে একজন আবার সাপের কামড়ে আহতও হন। সর্প বিশেষজ্ঞ দের মতে, এভাবে যদি কোনও প্রাণীর উপর মানুষ অত্যাচার করে, তা হলে সেই প্রাণীও যে পাল্টা হিংস্র হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা সাপকে ধরে এভাবে ছবি তোলার হিড়িক, গলার কাছে চেপে ধরে মাতামাতি যে কোনও প্রাণীকে আক্রমনাত্মক করে তুলবে, সেটাই স্বাভাবিক। শুক্রবার রাতে ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে ঘটনাটি ঘটে। সর্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বন্যপ্রাণ নিয়ে মানুষের সচেতনতা যে কতটা কম, এই ধরনের ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
এদিন রাতে চা বাগানের বড় লাইনের প্রাথমিক স্কুলের সামনে একটি অজগর সাপকে দেখতে পান এলাকার লোকজন। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিশাল সাপটিকে দেখতে পেয়ে হইহই পড়ে যায় চা-বস্তিতে। বাড়ির ছেলে থেকে বুড়ো সকলেই রাস্তায় নেমে আসেন। শিশু কোলে নিয়ে ছুটে আসেন বাড়ির মেয়ে-বউরা। এরইমধ্যে কয়েকজনকে দেখা যায় কোনওরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই সাপটিকে উদ্ধার করতে।
অভিযোগ, বীরসা ওরাওঁ নামে এক শ্রমিক সাপটিকে চেপে ধরেন। এরপরই অজগর সাপ কামড়ে দেয় বীরসাকে। সঙ্গে সঙ্গে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এরপর লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের সাতরাম ওরাওঁ নামে আরেক শ্রমিক ওই অজগর সাপটিকে বস্তাবন্দি করেন। কিছু পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন বন্যপ্রাণ শাখার বিন্নাগুড়ি স্কোয়াডের কর্মীরা। পরে চা শ্রমিকরা তাঁদের হাতে সাপটিকে তুলে দেন। লক্ষ্মীপাড়া চা-বাগানের শ্রমিক কল্যাণ আধিকারিক সুদীপ্ত দাস বলেন, বছরখানেক আগেও লোকালয়ে চলে আসে একটি অজগর সাপ। সেটিকে উদ্ধার করে বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তিনিই জানান, এদিনের অজগরটি লম্বায় প্রায় ১৩ ফুট ছিল।
সর্প বিশেষজ্ঞ মিন্টু চৌধুরী বলেন,” মানুষকে বন্যপ্রাণী সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। না হলে যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আমরা অনেক সময় দেখি হাতিকেও মানুষ বিরক্ত করার চেষ্টা করে। এটা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে বনদফতরকে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় আরও বেশি করে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে হবে।”