TMC MLA: ‘বলে দিয়েছিলাম কাউন্টিং ঠিকভাবে করবে, ভোট যেন তৃণমূলের বাক্সে পড়ে’, বিধায়কের বক্তব্যে শোরগোল

TMC: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পঞ্চায়েতীরাজ শাখার জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন ছিল এদিন। সেখান থেকেই খগেশ্বর রায় বলেন, "সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন এগিয়ে যাক আমরা চাই। কিন্তু এখনও আমাদের দলের সংগঠনের অনেকে সদস্য হতে চান না। কেন সদস্য হবেন না? কিছুটা হুইপ জারি করতে হবে। আমরা আছি পিছনে।" 

TMC MLA: 'বলে দিয়েছিলাম কাউন্টিং ঠিকভাবে করবে, ভোট যেন তৃণমূলের বাক্সে পড়ে', বিধায়কের বক্তব্যে শোরগোল
তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2022 | 8:59 PM

জলপাইগুড়ি: পঞ্চায়েত ভোটের আগে সরকারি কর্মচারী সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি থেকে বিধায়ক। তাঁরা কার্যত স্বীকার করে নেন, এখনও এমন বহু সরকারি কর্মচারী রয়েছেন, যাঁরা তৃণমূলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হননি। তাঁদের যুক্ত হতেই হবে, প্রয়োজনে হুইপ জারি করতে হবে। শনিবার এমনই বার্তা দেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের পঞ্চায়েতীরাজ শাখার জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন ছিল এদিন। সেখান থেকেই খগেশ্বর রায় বলেন, “সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন এগিয়ে যাক আমরা চাই। কিন্তু এখনও আমাদের দলের সংগঠনের অনেকে সদস্য হতে চান না। কেন সদস্য হবেন না? কিছুটা হুইপ জারি করতে হবে। আমরা আছি পিছনে।”  সম্মেলনের সভামঞ্চ থেকে এমন নির্দেশ দেওয়ায় কার্যত বিতর্ক দানা বেঁধেছে বিভিন্ন মহলে। একইসঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের গুরুত্ব কতটা সেটা বোঝাতে গিয়ে খগেশ্বরের বক্তব্য শোরগোল ফেলে দেয়।

এদিন খগেশ্বর রায় বলেন, “বাম আমলে দেখতাম কো অর্ডিনশন কমিটির কর্মীরা ভোট কাউন্টিংয়ের সময় ব্যালট এদিক ওদিক করে বাম প্রার্থীদের জিতিয়ে দিত। তাই আপনারা নিশ্চয়ই চাইবেন তৃণমূল প্রার্থীরা জয়ী হোক। কয়েকদিন আগে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট হল। আমার রাজগঞ্জ বিধানসভা থেকে প্রায় ২৫ জন (ভোটকর্মী) গিয়েছিলেন। সবাই তৃণমূল সরকারি কর্মী সংগঠনের। যাওয়ার আগে ওদের বললাম, ভোটটা ঠিকভাবে কাউন্টিং করবে। যাতে তৃণমূলের বাক্সে পড়ে। ঠিকভাবে কাউন্টিং হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ জিতেছে, পঞ্চায়েত জিতেছে। তাই আপনাদের গুরুত্ব অনেক বেশি। পঞ্চায়েত অফিসের কর্মী, বিডিও অফিসের কর্মী, আপনাদের গুরুত্ব অপরিসীম।”

শুধু খগেশ্বর রায়ই নন, তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপও এদিন বক্তব্য রাখেন এই সম্মেলনে। দু’জনের বক্তব্যর সুর কার্যত এক তারে বাঁধা ছিল। দু’জনই প্রশ্ন তোলেন, সিপিএম এবং কংগ্রেস দুই দলই গত ভোটগুলিতে একটা আসনও পায়নি। তারপরও কেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্য তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হবেন না?

সূত্রের খবর, এখনও বহু সরকারি কর্মী বামেদের সঙ্গেই রয়েছেন। সেইসব সরকারি কর্মীরা যাতে তৃণমূলের সংগঠনের ছাতার তলায় আসেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেটাই লক্ষ্য তাঁদের। সেই লক্ষ্য পূরণে অন্যের ঘর ভাঙিয়ে হলেও সংগঠনকে চাঙ্গা করতে হবে, ঠারেঠোরে কার্যত সে বার্তাই এদিন দেওয়া হল তৃণমূল সরকারি কর্মচারী সমিতির জেলা সভাপতি সঞ্জয় সিংহকে।

যদিও খগেশ্বর রায়ের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন, কোঅর্ডিনেশন কমিটির নেতা নীলাম্বর মিশ্র। তাঁর বক্তব্য তৃণমূল ২০০৮ অর্থাৎ বাম আমল থেকে পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন ভোটে জিতে আসছে। যদি কারচুপি করা হত, তবে বাম আমলে তৃণমূল জিততে পারত? একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে পালা বদলের পর বাম প্রভাবিত সরকারি কর্মচারীদের দমন পীড়ন শুরু হয়েছে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ তিনি নিজে। তাঁর অভিযোগ, জেলার সবথেকে দূরের ব্লক নাগরাকাটায় বদলি পর্যন্ত করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। শুধু তিনিই নন, তাঁদের প্রচুর সদস্য এই পরিস্থিতির শিকার।

অন্যদিকে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ বলেন, “বিধায়ক শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে লোক পাঠিয়ে গণনায় কারচুপি করে তৃণমূলকে জিতিয়েছেন। এই কথা আবার ফলাও করে বলছেন। আমরা জানি এরা দমন পীড়ন চালাবে। যত আক্রমণ করবে, মানুষ তত জোট বাঁধবে।” এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ৪ জুলাই ধিক্কার মিছিল করবে রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটি।