করোনার উপসর্গ ছিল, মৃত্যুর পর ধারে কাছে গেল না স্বজন-পড়শিরা! দেহ সৎকারে এগিয়ে এল একদল দামাল ছেলে
করোনা (COVID-19) হয়েছে, এই সন্দেহে পরিবারের পাশে আতঙ্কে কেউ দাঁড়াল না।
জলপাইগুড়ি: করোনার (COVID-19) উপসর্গ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন এক যুবক। রবিবার মারা যান তিনি। অভিযোগ, এরপরই স্বজন-পড়শিরা মুখ ফেরান ওই যুবকের সৎকারে। পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই ভয়ে ভয়ে ঘুরে মুখ ঢেকেছেন। অবশেষে এলাকা কয়েকজন ছেলে এগিয়ে আসে। সমস্ত ব্যবস্থা করে দেহ দাহ করে তাঁরাই।
জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের খাগড়াবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানকার বাসিন্দা ছিলেন অলোক চন্দ। তিনি ইসলামপুরে একটি হোটেলে কাজ করতেন। সম্প্রতি সেখানেই জ্বর, কাশি-সহ করোনার অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। বাড়িতে খবর দেওয়া হলে তাঁকে গাড়ি ভাড়া করে ময়নাগুড়ি নিয়ে আসা হয়।
এদিকে বাড়িতে আসার পর গত রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। অভিযোগ, মৃত্যুর পরই এলাকায় করোনা আতঙ্ক ছড়ায়। ফলে আত্মীয়স্বজন থেকে পড়শি, কেউ এগিয়ে আসেনি মৃতদেহ সৎকার করতে। খবর যায় পুলিশের কাছে। কিন্তু তারাও আসতে দেরী করে। এদিকে ক্ষোভ বাড়তে থাকে এলাকায়। করোনা রোগীর দেহ ফেলে রাখা হয়েছে বলে স্থানীয়রা পথ অবরোধও করেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। পাশাপাশি এগিয়ে আসে কয়েকজন দামাল ছেলে। তারাই পুলিশের সহযোগিতায় দেহ নিয়ে যায় গ্রামের নদীর ধারে। সেখানেই ওই যুবকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এগিয়ে আসা ওই দলের এক সদস্য অমিত রায়ের কথায়, “এটা মর্মান্তিক পরিণতি। করোনা হয়েছে এই সন্দেহে এই পরিবারের পাশে আতঙ্কে কেউ দাঁড়াল না। খবর পেয়ে আমরা আসি। আমরা অলোকের মৃতদেহ সৎকার করি।”
আরও পড়ুন: ‘রাত ২টোর সময় হাসপাতাল থেকে বলল অক্সিজেন নেই, জোগাড় করে আনুন’, কপালে হাত অসহায় স্বামীর
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “এই ধরনের কোনও খবর ব্লক প্রশাসন থেকে আমাকে দেওয়া হয়নি। যদি জানানো হত তবে তার সমস্ত ব্যবস্থা প্রশাসন থেকে করা হত। করোনা উপসর্গ নিয়ে যদি কেউ মারা যান, তবে কোভিড বিধি অনুযায়ী তাঁর দেহের সৎকার করা হতে পারে।”