Malda: ত্রাণের ৭৬ লাখ টাকা গায়েব! ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি আদালতের
Corruption Case: তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গের মতো জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা হতেই গা ঢাকা দেন তিনি। বহু খুঁজেও প্রধানকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশের তরফে আদালতকে জানানো হয়। তার পরেই আদালত ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে।
মালদহ: বন্যা ত্রাণের (Flood Relief) টাকা আত্মসাতের অভিযোগে থানায় এফআইআর (FIR) দায়ের হলেও শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রধানকে (Panchayat Pradhan) ধরতে পারেনি পুলিশ (Police)। দু’মাস পরেও তাঁর খোঁজ না মেলায় সোনামনি সাহা নামে ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে ধরতে হুলিয়া জারি করল পুলিশ। সোমবার আদালতের নির্দেশ মেনেই একাজ হয় বলে জানা গিয়েছে।
মালদহ ও মুর্শিদাবাদে বন্যা ত্রাণে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিএজি (CAG) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সোমবার আদালতের ওই নির্দেশ মেনে ফেরার তৃণমূল প্রধানের বাড়িতে নোটিস ঝুলিয়ে দিয়ে এল পুলিশ। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে মালদার বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
২০১৭ সালে বন্যা ত্রাণের টাকা লুঠের অভিযোগ ওঠে ওই প্রধানের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে গড়িমসি হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তার পর আদালত সক্রিয় হতেই দু’মাস আগে পঞ্চায়েত প্রধান সোনামনি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর করে প্রশাসন। সামনে আসে ত্রাণের ৭৬ লক্ষ টাকা তছরুপ হওয়ার বিষয়টি।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গের মতো জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা হতেই গা ঢাকা দেন তিনি। বহু খুঁজেও প্রধানকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশের তরফে আদালতকে জানানো হয়। তার পরেই আদালত ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছে। একমাসের মধ্যে তিনি আত্মসমর্পণ না করলে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
হুলিয়া জারির পাশাপাশি ফেরার ওই প্রধানের বাড়ির সামনে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হতেই শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে জোর তরজা শুরু হয়েছে। তবে শুধু প্রধান নন। বন্যা ত্রাণের টাকা লুঠের অভিযোগে হরিশচন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সভাপতি কোয়েল দাসও অধরা। খোঁজ না মেলায় তাঁর বিরুদ্ধেও প্রধানের মতোই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
২০১৭ সালে মালদহের এক মহকুমা-জুড়ে ভয়াবহ বন্যায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩৩০০ টাকা ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয় সরকারের তরফে। বরুইয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হন ৭,৩৯৪ জন। কিন্তু তালিকায় নাম থাকলেও তাঁরা টাকা পাননি বলে দুর্গতদের অনেকেই প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান। তদন্তে জানা যায়, তালিকায় দুর্গতদের নাম থাকলেও তাঁদের নামের পাশে অন্য ব্য়াঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে টাকা তোলা হয়েছে।
এদিকে প্রশাসন এনিয়ে পদক্ষেপ করছে না, এই অভিযোগে আদালতে মামলা করেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। তারপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
এদিন হরিশচন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, “প্রধানকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে আমরা আদালতে জানাই। তার পরেই আদালত ফেরার প্রধানের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করার নির্দেশ দেয়। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তেমন হলে তাঁর বিষয়টিও আমরা আদালতকে জানাব”।
মালদা-মুর্শিদাবাদে বন্যা ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে CAG তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চে নির্দেশ দেয়, রাজ্য সরকার ত্রাণে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করবে। তদন্তের উপরে নজর রাখবে কেন্দ্র। রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে সব ধরনের সাহায্য করতে হবে।