Teaching Job: ‘টাকা না দিয়ে চাকরি পেয়েছি, মামলা নিয়ে কোনও চাপ আসেনি’, বললেন মেরাজ

টাকা না দিলে এ রাজ্যে চাকরি মেলে না! শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Teaching Job: 'টাকা না দিয়ে চাকরি পেয়েছি, মামলা নিয়ে কোনও চাপ আসেনি', বললেন মেরাজ
মেরাজ শেখ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2022 | 10:31 PM

মালদা: টাকা না দিলে এ রাজ্যে চাকরি মেলে না! শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মালদার কাজিগ্রামের নওদাবাজারের বাসিন্দা মেরাজ শেখকে প্রাথমিক শিক্ষকের পদ থেকে বরখাস্ত করার প্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানি শেষে মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেন তিনি। এমনকি ছ’মাসের মাথায় মেরাজকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। হাইকোর্টের নির্দেশে খুশি মেরাজ ও তাঁর পরিবার। তবে তিনি যে টাকা সেকথাও জানিয়ে দিলেন। বুধবার তিনি বলেছেন, “আমি টাকা না দিয়েই চাকরি পেয়েছিলাম। আমার অনেক বন্ধুরাও টাকা না দিয়েই চাকরি পেয়েছিলেন।”

২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের ৬৭ নম্বর পুঁথিয়া প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের চাকরি পান মেরাজ শেখ। কিন্তু মাস চারেক চাকরি করার পর তাঁকে বরখাস্ত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের যুক্তি ছিল, স্নাতক স্তরে ওই শিক্ষকের কম নম্বর ছিল। সার্ভিস বুক তৈরি করার সময় বিষয়টি নজরে পড়ে। সে কারণেই মেরাজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন মেরাজ। আদালতের কাছে করা আবেদনে তিনি জানান, ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন’-এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সংরক্ষিত পদে চাকরি পেতে হলে স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় প্রার্থীকে ন্যূনতম ৪৫ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। জেনারেল প্রার্থীর থাকতে হবে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর। মেরাজ স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৪৬.১৩ শতাংশ। কিন্তু ওবিসি ক্যাটাগরিতে ৪৫ শতাংশ পেলেই হবে। মেরাজ ওবিসি ক্যাটাগরির। তাই অনৈতিক ভাবেই তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে আদালতে আবেদন করেন মেরাজের আইনজীবী। মঙ্গলবার সেই মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, মেরাজকে ফের শিক্ষক পদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।

শুধু তাই নয়, ওই নির্দেশনামা ঘোষণার সময় রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সরকারকে একপ্রস্থ কটাক্ষও করেন তিনি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ এমন এক রাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে টাকা না দিলে চাকরি মেলে না।’’ পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মানিক ভট্টাচার্যকে টাকা দেয়নি তাই হয়তো মামলাকারীর চাকরি বাতিল হয়েছে।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মিরাজের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘নম্বর কম রয়েছে, চাকরি দেওয়ার সময় কেন নজরে পড়েনি? সার্ভিস বুক তৈরির সময় নজরে পড়ল?’’

হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি ফেরত পাওয়ার পর মেরাজ বলেন, মামলা করা কিংবা তোলার জন্য কোনও চাপ আসেনি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন, “কেউ ভুল করলে আমাদের লড়তে হবে।”