Malda TMC Inner Clash: ‘যতই বড় নেতার ঘনিষ্ঠ হোক, টিকিট পাবে না’, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘আমরা ওরা’য় জর্জরিত মালদহের ঘাসফুল
Malda News: তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, "গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কিছু ধান্দাবাজ লোক ঢুকে গেছে এর হাত ধরে, ওর হাত ধরে। এত বড় দল বোঝা যাচ্ছে না। আমিও চিনি না সে তৃণমূল, সে ঝান্ডা নিয়ে ঘুরছে।"
মালদহ: দলের অন্দরেই ‘আমরা ওরা’। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকশিবিরে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে দলের কোন্দল। প্রকাশ্য মঞ্চ থেকেও একে অপরকে গালমন্দ করতে দেখা যাচ্ছে। যার জেরে বিভিন্ন ব্লক থেকে দল ছাড়ার খবরও আসছে। গত সপ্তাহেই বৈষ্ণবনগর বিধানসভায় ১২ জন নেতা-সহ শতাধিক তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। সূত্রের খবর, হরিশচন্দ্রপুরেও ৭২ জন তৃণমূল কর্মী দল ছাড়েন। দল ছাড়ার তালিকায় ব্লকস্তরের আট জন পরিচিত নেতার নামও রয়েছে। রতুয়ায় সংখ্যালঘু এলাকাতেও ভাঙনের খবর। আট পঞ্চায়েত এলাকায় দল ছেড়েছেন ২০০-র বেশি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে সূত্রের দাবি। কিন্তু কেন পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমন ছবি মালদহ জেলার বিভিন্ন জায়গায়?
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, জেলায় যে নেতারা মাথায় বসে, তাঁদের মধ্যেই সংঘাত প্রকট হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর দুলাল সরকার বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কিছু ধান্দাবাজ লোক ঢুকে গিয়েছে এর-ওর হাত ধরে। এত বড় দল বোঝা যাচ্ছে না। আমিও চিনি না কে তৃণমূল, কে ঝান্ডা নিয়ে ঘুরছে।”
জেলা কো অর্ডিনেটর প্রকাশ্যে বলছেন, দলে ‘ধান্দাবাজ’ ঢুকে পড়েছে। এখন তাঁদের নিয়ে কী করবে দল? দুলাল সরকারের কথায়, “যারা দুর্নীতি করেছে, যাদের নামে অভিযোগ আছে, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দলও সার্ভে করছে। যতই তারা বড় নেতার ঘনিষ্ঠ হোক, টিকিট পাবে না। এরকম লোকজনই দল ছেড়ে… আসলে এরা ধান্দাবাজ।”
দু’দিন আগে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সির অপসারণের ডাক দিয়েছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির স্বামী শেখ হেসামুদ্দিন। তিনিও ব্লকস্তরের নেতা। তা নিয়ে কম হইচই হয়নি। তবু দলীয় কাজিয়া থামছেই না। এ নিয়ে তৃণমূলের টাউন সভাপতি বর্ষীয়ান নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “বিরোধীরা তৃণমূলের মধ্যেও ষড়যন্ত্র করে দু’জন চারজনকে রেখেছে। গায়ে লাগানো তৃণমূলের ছাপ, কিন্তু বিজেপির হয়ে কথা বলছেন।” যদিও গোষ্ঠী কাজিয়াকে খুব একটা আমল দিতে নারাজ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মৌসম বেনজির নূর।
তৃণমূল নেত্রী মৌসম নূর বলেন, “ভোটের আগে কিছু লোক আসে, কিছু লোক যায়। এটা নিয়ে না ভেবে বৃহত্তর চিত্রটা দেখতে হবে। জনগণ তৃণমূলের সঙ্গে আছেন, নেত্রীর সঙ্গে আছেন। আর গোষ্ঠী কোন্দল কোন্ দলে নেই? সব দলেই আছে। কিন্তু সেসব এড়িয়ে গিয়েও দল ভাল ফল করেছে। আগামী দিনেও করবে।”
তবে তৃণমূলের এই দলাদলিকে হাতিয়ার করতে ছাড়ছে না বিজেপি। তাদের দাবি, মালদহ জেলার এক বিধায়ক, এক প্রাক্তন বিধায়ক, চার কাউন্সিলর বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বিজেপির দাবি, পদ্মশিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জেলার অন্তত ২০ জন গ্রাম প্রধান। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর কথায়, “নব্য তৃণমূল, পুরনো তৃণমূল, এ লবি ও লবি সেসব দ্বন্দ্ব তো আছেই। রাজ্যব্যাপী যদি দেখেন তৃণমূলের সব দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে এগিয়ে আসছে।”