জাকির ‘দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ’, অধীরের ঢালাও প্রশংসায় বাড়ছে জল্পনা

অধীর চৌধুরীর জেলায় পরিবর্তনের হাওয়া আনতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। ২০১৫ সালে সেই শুভেন্দুর হাত থেকেই তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন জেলার নামজাদা বিড়ি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন।

জাকির 'দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ', অধীরের ঢালাও প্রশংসায় বাড়ছে জল্পনা
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Feb 18, 2021 | 11:53 AM

কলকাতা: জাকির হোসেনের ঢালাও প্রশংসা শোনা গেল অধীর চৌধুরীর মুখে। বুধবার রাতে বোমার আঘাতে জখম জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনকে ‘দৈত্যকূলে প্রহ্লাদ’-এর তকমা দিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ। অধীরের এই মন্তব্যে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা।

বুধবার রাতে প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী-বিধায়ক জাকির হোসেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফেসবুকে এই ঘটনায় সরব হন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।

অধীর লেখেন, ‘জাকির হোসেনের উপর আক্রমণের আমি তীব্র নিন্দা করছি। অপরাধীদের গ্রেফতার চাই, শাস্তি চাই। সে তৃণমূলের মধ্যে এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব, পরিশ্রম ও বুদ্ধির জোরে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি, মানুষের বন্ধু। সে নিজের পরিচয়ে জেতে ও বিধায়ক হয়। সততার রাজনীতি তৃণমূল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়! সে সৎ তাই হামলা হল। তৃণমূল দলের দৈত্য কূলে প্রহ্লাদ জাকির।’ এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।

অধীর চৌধুরীর জেলায় পরিবর্তনের হাওয়া আনতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঠিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারীকে। ২০১৫ সালে সেই শুভেন্দুর হাত থেকেই তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন জেলার নামজাদা বিড়ি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। পরের বছরই বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হন তিনি। পাঁচবারের কংগ্রেস বিধায়ক মহম্মদ সোহরাব (চারবার সুতি কেন্দ্র থেকে জেতেন, একবার জঙ্গিপুর থেকে)কে হারিয়ে জঙ্গিপুরে জয় ছিনিয়ে নেন জাকির।

আরও পড়ুন: পায়ে বোমার একাধিক স্প্লিন্টার, আজই এসএসকেএমে অস্ত্রোপচার মন্ত্রী জাকিরের

এরপর বদলে যায় মুর্শিদাবাদের রাজনীতির মানচিত্রটাই। এক সময় অধীর গড় বলে পরিচিত হলেও মুর্শিদাবাদে ঘাসফুলের রমরমা শুরু হয় গত চার পাঁচ বছরে। অধীরের হাত ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন এমন নেতা নেহাত কম নেই। তবে শুভেন্দু দল ছাড়ার পর সে জেলায় তৃণমূলও খানিকটা গতিরুদ্ধ। দলের অন্দরে প্রায়ই ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই অবস্থাকে সম্পূর্ণ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে কংগ্রেস। অধীর চাইবেন, এ জেলায় ফের তাঁর আধিপত্য কায়েম করতে। এবং সে ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোট একটা অত্য়ন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ফ্যাক্টর।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওয়েইসি কিংবা আব্বাস সিদ্দিকিরা সে জেলায় ঢোকার আগে এই সংখ্যালঘু ভোটকে নিজের দিকে রাখতে চাইছেন অধীর। এমনিতেই তিনি জেলার মানুষের কাছে ‘রবিনহুড’। তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এখনও পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপালে নিজের রাজনৈতিক জমি পুনরুদ্ধার তাঁর কাছে খুব একটা চ্যালেঞ্জিং নয় বলেই দাবি অধীর অনুগামীদের। এরইমধ্যে বুধবারের ঘটনার পর তৃণমূলকে ‘দৈত্যকূল’ বললেও জাকিরকে ‘ প্রহ্লাদ’ হিসাবে উল্লেখ করে অধীর সে পথেই আরও এক ধাপ এগোতে চাইলেন কি না তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।