Cow Smuggling: গরু মজুতের ‘স্টক পয়েন্টের’ জন্য জমি দখলের অভিযোগ, ‘হুমকি’তে মুখে কুলুপ এঁটেছিল গ্রামবাসীরা
মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার জরুর গ্ৰামেও জোর করে জায়গা দখল করে গরু পাচারের জন্য ব্যবহার করা হত। অভিযোগ, জমির মালিকরা বাধা দিতে গেলে তাঁদের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হত বলে খবর। দেওয়া হত গাঁজা কেস।
মুর্শিদাবাদ: যতই এগোচ্ছে তদন্ত ততই খুলছে জট। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই গরু পাচারের (Cow Smuggling) জন্য একাধিক অবৈধ করিডরের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাতেই বারবার উঠে আসছে মুর্শিদাবাদের নাম। তদন্তে এও জানা গিয়েছে বীরভূমের (Birbhum) পশুহাট থেকে সেই গরু মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) হয়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) পাচার হয়ে যেত। সহজ কথায় গরু পাচার কাণ্ডে করিডর হিসাবে মুর্শিদাবাদকে ব্যবহার করত গরু পাচারকারীরা। স্টক করা হত বিভিন্ন জায়গায়। সন্ধ্যার পর সেখান থেকে গাড়ি করে রওনা হয়ে যেত বাংলাদেশের উদ্দেশে। রঘুনাথগঞ্জের সেকেন্দ্রাতেও গরু স্টক করা হত বলে জানা যাচ্ছে।
একাধিক জায়গায় ছিল স্টক পয়েন্ট
এরকম আরও কয়েকটি জায়গায় স্টক পয়েন্ট ছিল বলে খবর। সূত্রের খবর, সাগরদিঘির হাট থেকে গরু নিয়ে আসা হত স্টক পয়েন্টগুলিতে। বীরভূম থেকে আনা গরুগুলিকে প্রথমে এই স্টক পয়েন্ট নিয়ে আসা হত। এখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা হয়ে পাচার হত গরু। অভিযোগ, বলপূর্বক জমি দখল করে গরুর স্টক পয়েন্ট গড়ে তুলেছিল পাচারকারীরা। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার জরুর গ্ৰামেও জোর করে জায়গা দখল করে গরু পাচারের জন্য ব্যবহার করা হত। অভিযোগ, জমির মালিকরা বাধা দিতে গেলে তাঁদের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হত বলে খবর। দেওয়া হত গাঁজা কেস।
চোরাপথে সীমান্ত পার হয়ে চলে যেত বাংলাদেশে
রঘুনাথগঞ্জ থানায় একদিকে লোহাপুরের রাস্তা, অন্যদিকে মুরারয়ের রাস্তা। এদিকে লোহাপুরের রাস্তা দিয়ে জরুর গ্ৰামে যাওয়ার পথে পড়ে একটি থানা। অন্যদিকে মুরারয়ের রাস্তা দিয়ে জরুর যাওয়ার পথে পড়ে দুটি থানা। এ কারণেই গরু নিয়ে যাওয়ার জন্য মূলত লোহাপুরের রাস্তাকে বেশি ব্যবহার করত পাচারকারীরা। জরুরের মাঠেই স্টক হত গরু। এখানেই হত বাছাইয়ের কাজ। এরপর রঘুনাথগঞ্জের উমরপুর মোড় হয়ে বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত। সূত্রের খবর, ভাগীরথী নদীতে একাধিক অবৈধ পাচারের ঘাট রয়েছে। অনেক সময়েই মোরগ্রামের মধ্যে দিয়ে সাগরদিঘি-ভাগীরথী ফেরিঘাট পার করে লালগোলা-ভগবানগোলায় চলে যেত। সেখান থেকেই চোরাপথে সীমান্ত পার হয়ে চলে যেত বাংলাদেশে। তবে পাচারের জন্য ব্যবহার করা হত বিশেষ পদ্ধতি। পাঁচ টাকার নোটে লিখে রাখা হত পাচার সংক্রান্ত তথ্য।
‘ভয়ে কিছু বলতে পারতাম না’
এদিকে ইতিমধ্যেই পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। জরুরে যেখানে গরু স্টক করা হত সেখানেই জমি রয়েছে এলাকার এক বাসিন্দার। পাচারকারীদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমার জমিতে আমাকে না জানিয়ে এসব কাজ চলত। কিছু বললেই গাঁজার কেস দেব, মদের কেস দেব বলা হত। আমরা চাষি মানুষ। তাই প্রাণের ভয়ে কিছু বলতে পারতাম না। আমার প্রায় চল্লিশ শতক মতো জায়গা ছিল। ওখানেই জোর করে গরু নামাত। আমাদের জরুরেরই লোক। ওদের নাম বুদ্দিন শেখ ও আলম। ওদের ভয়েই আমরা কিছু বলতে পারতাম না। চারশো-পাঁচশো গাড়ি করে এক একদিনে গরু আসত।”