Blood Bank in Nadia: TV9 বাংলার খবরের জের! সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের কালোবাজারি ফাঁস, ৭ দিনের মধ্যে তদন্তের নির্দেশ স্বাস্থ্য ভবনের

TV9 Impact: শক্তিনগর হাসপাতালে রক্ত না পেয়ে, অগত্যা নদিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে রক্ত সংগ্রহ করে মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচায় রোগীর পরিবার। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Blood Bank in Nadia: TV9 বাংলার খবরের জের! সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের কালোবাজারি ফাঁস, ৭ দিনের মধ্যে তদন্তের নির্দেশ স্বাস্থ্য ভবনের
নদিয়া শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 12, 2021 | 7:23 PM

নদিয়া: TV9 বাংলার খবরের জের! শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত নিয়ে কালোবাজারির ঘটনায় অবশেষে তদন্তের নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য ভবন। রক্তের কালোবাজারি (BlackMarketing) নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করে, সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। জয়েন্ট ডিরেক্টর (ব্লাড সেফটি)-র পাঠানো সেই চিঠিতে জুড়ে দেওয়া হয়েছে TV9 বাংলায় দেখানো ভিডিও ক্লিপিংসও।

রক্তদান মহৎ দান। আর সেই রক্ত নিয়েই রমরমিয়ে চলছে কালোবাজারি। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ওঠে নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। কী কী অভিযোগ? জেলা হাসপাতালে চড়া দামে ‘বিক্রি’ হচ্ছে রক্ত।

নদিয়া জেলা জুড়েই বছরভর চলে রক্তদান শিবির। তারপরও সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের আকাল। নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ঘুঘুর বাসা। ব্লাড ব্যাঙ্কেরই এক শ্রেণির কর্মী ও দালালদের গোপন আঁতাতে চলছে রক্ত নিয়ে বেআইনি কারবার। বেশি টাকার বিনিময়ে রমরমিয়ে রক্ত বিক্রি হচ্ছে। অথচ সাধারণ মানুষ প্রয়োজনের সময় রক্ত পান না। এমনকী রক্তদানের কার্ড দেখিয়েও মিলছে না রক্ত। অভিযোগ উঠছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে।

কোন গ্রুপের রক্তের কত দাম?

পজিটিভ গ্রুপের ১ ইউনিট রক্ত ১ হাজার টাকায় বিক্রি নেগেটিভ গ্রুপের ১ ইউনিট রক্ত ২ হাজার টাকায় বিক্রি যেমন ধরুন, বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম ৩ ইউনিট রক্তের আবেদন করছে। নার্সিংহোমে যাচ্ছে ১ ইউনিট রক্ত। বাকি ২ ইউনিট রক্ত চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে।

ভুক্তভোগী এক রোগীর পরিজনের কথায়, “রক্ত চেয়েও রক্ত মিলছে না। এদিকে বাইরে একটু বেশি টাকা দিলেই রক্ত পাওয়া যাচ্ছে। তাই ব্লাড ব্যাঙ্কে ভরসা না করে বাইরে থেকেই কিনছি। যাঁদের থেকে কিনছি তাঁরাও হাসপাতালের লোক। কী করব আমরা নিরুপায়! আমার বাড়ির লোককে তো বাঁচাতে হবে।” শক্তিনগর হাসপাতালে রক্ত না পেয়ে, অগত্যা নদিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে রক্ত সংগ্রহ করে মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচায় রোগীর পরিবার। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে রোগীর পরিবার। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মী। অবশেষে, রবিবার এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই মালদহেতে এমনই হাসপাতালে ‘কেঁচো খুঁড়তে কেউটে’ বেরিয়েছিল। মালদহে এক বেসরকারি হাসপাতালে খবর করতে গিয়ে মার খেতে হয় টিভি৯ বাংলার সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে। জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হয় এক প্রসূতি। সে জন্ম দেয় এক কন্যা সন্তানের। কিন্তু কুড়ি-একুশদিন কেটে গেলেও তাঁর পরিবার ও স্বামী তাঁকে না নিতে আসায় হাসপাতালের আয়ারা তাঁকে বলেন যে কন্যা সন্তানের জন্মের জন্যই স্বামী তাঁকে ছেলে চলে গিয়েছেন।

এরপর তাঁর বাড়ি পৌঁছন TV 9 বাংলার অপর এক প্রতিনিধি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বদলে যায় ওই প্রসূতির বয়ান। তিনি জানান যে, হাসপাতালের আয়ারা তাঁকে এই কথাগুলি শিখিয়ে দিয়েছিল। মহিলার বয়ান অনুযায়ী, তারা প্রথমে মালদায় সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলেন গাড়িটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই নার্সিংহোমে ভর্তি করতে কারণ এখানকার পরিষেবা ভালো।

কিন্তু দিনাজপুরের দুস্থ আদিবাসী প্রসূতিকে কেন নিয়ে আসা হল মালদার ওই বেসরকারি হাসপাতালে? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই ঝুলি থেকে বেরিয়ে আসে বিড়াল। ফাঁস হয় নার্সিংহোমের কুকীর্তি। অভিযোগ,  হাসপাতালের ‘মাথা’ উজ্জ্বল দাসের পরামর্শেই অ্যাম্বুলেন্স চালকরা গরীব-অসহায় পরিবারদের সরকারি হাসপাতাল বলে ভুল বুঝিয়ে এই বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে আসে। তারপর পরিবারগুলির হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় আকাশ ছোঁয়া বিল। শুধু তাই নয়, সরকারি হাসপাতালের স্ট্যাম্প নকল করে, সেই স্ট্যাম্প বিলে ছাপ মেরে তুলে দেওয়া হয় পরিবারগুলির হাতে। আর এই কাজের জন্য অ্যাম্বুলেন্স চালকরা মোটা টাকা পেয়ে থাকেন উজ্জ্বল দাসের থেকে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: Crime in Dhupguri: গর্ভপাতের কথা ফাঁস হতেই বেপাত্তা ফার্মেসির মালিক! TV9 বাংলার খবরের জেরে টনক নড়ল প্রশাসনের