Death certificate: তৃণমূল নেতার একটা ফোন, টাকার বিনিময়ে চিকিৎসক দিয়ে দেন ‘ডেথ সার্টিফিকেট’
Nadia: সম্প্রতি এক ১৪ বছর বয়সী নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল।
নদিয়া: ‘১০০ টাকা দিলেই হয়ে যাবে’। এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের উক্তি। কিন্তু কী কাজ হবে? অভিযোগ, মাত্র ১০০ কী ২০০ টাকা। তাহলেই মিলবে ডেথ সার্টিফিকেট। অভিযোগ, তৃণমূল নেতার একটা ফোনেই চিকিৎসক দিয়ে দেবেন মৃত্যুর শংসাপত্র। বিগত কয়েক বছর ধরেই প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে চলছে এমন কাজ। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলছেন সাধারণ মানুষ। ঘটনাস্থল নদিয়ার শান্তিপুর। মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকা দিলেই মেলে মৃত্যুর শংসাপত্র। সম্প্রতি এক ১৪ বছর বয়সী নাবালিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল।
সূত্রের খবর, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুর তিনটে নাগাদ শান্তিপুর ব্লকের হরিপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নৃসিংহপুর উত্তর কলোনি এলাকার বাসিন্দা রবি দাসের ১৪ বছর বয়সী নাবালিকা মেয়ে শর্মিষ্ঠা দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকরা নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করলেও পুলিশকে কোনওরকম তথ্য না দিয়েই ছেড়ে দেয় হাসপাতাল থেকে। এরপর মৃত নাবালিকার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে। অভিযোগ, নৃসিংহপুর কালনা ঘাটের ঠিক পাশে একটি শ্মশানে পর্যাপ্ত নথি ছাড়াই দাহ করা হয় ওই নাবালিকার দেহ। স্থানীয় পঞ্চায়েতের নিয়োগ করা সিকিউরিটির অনুপস্থিতিতে ওই নাবালিকাকে দাহ করা হয় বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। যদিও শ্মশনের তত্ত্বাবধানে থাকা ব্যক্তি বলেন, ” প্রতিবারই খাতায় লিখে রাখি কাকে দাহ করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত থেকে দায়িত্ব দিয়েছে দেখার জন্য। পরশুদিন যে দেহ দাহ হয়েছে আমার কাছে নিয়ে আসেনি। কারণ আমি তখন অনুপস্থিত ছিলাম সেখানে।”
সূত্রের খবর, দেহ দাহ করার পর ওই নাবালিকার পরিবার নৃসিংহপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় ডিগ্রিধারী এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বাসুদেব বণিকের কাছে যান ডেথ সার্টিফিকেট বের করার জন্য। এই ঘটনায় চিকিৎসক বাসুদেব বণিককে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার আমাকে ফোন করেছিলেন ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য। টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট দিয়েছি। আমি নিরুপায়। পঞ্চায়েত সদস্য যা বলেন তাই আমায় করতে হয়।” অপরদিকে, পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মজুমদার বলেন, “আমিই বলেছিলাম পরিবারকে ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে মৃত্যুর শংসাপত্র বের করে আনার জন্য। এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য রয়েছে।” যদিও, নথি দেখতে চাওয়া হলে তিনি দেখাতে পারেননি।
যদিও, বিরোধীদের অভিযোগ এই প্রথম নয় এরকম কয়েকশো বার তৃণমূল নেতারা ফোন করলেই তিনি সার্টিফিকেট দিয়ে দেন। তার জন্য কোনও বৈধ কাগজপত্র লাগে না। বিজেপি নেতা বলেন, “স্তম্ভিত। একজন চিকিৎসক তাঁর কর্তব্য ভুলতে বসেছে। এই বাংলাতেই এই সব সম্ভব।”
এই ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান শোভা সরকারকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “ঘটনা আমার জানা নেই। বিষয়টা আমি তদন্ত করে দেখছি। প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”