TMC MLA Tapas Saha: কেউ ৭ তো কেউ ২৬ লক্ষ! চাকরির জন্য তৃণমূল বিধায়ককে টাকা দিয়ে ফেঁসেছেন! মুখ খুলছেন প্রতারিতরা
TMC MLA Tapas Saha: নদিয়ার নাজিরপুর, তেহট্ট, শ্যামনগরের প্রতারিতরা এবার একে একে বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। TV9 বাংলার হাতে তাঁদের বয়ান।

তেহট্ট: নিয়োগ দুর্নীতিতে ইতিমধ্যেই তাপসের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। নদিয়ার নাজিরপুর, তেহট্ট, শ্যামনগরের প্রতারিতরা এবার একে একে বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। TV9 বাংলার হাতে তাঁদের বয়ান। প্রতারিতদের তালিকায় রয়েছেন খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তাঁরই দলের পঞ্চায়েত সদস্য।
কেস ১ শ্যামনগরের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে ইউসুফ মিলিটারি নামেই এলাকাবাসীরা চেনেন। যে মামলার প্রেক্ষিতে তাপস সাহার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে, সেই মামলার আবেদনকারী এই ইউসুফই। ফতেপুর বাসিন্দা তিনি। একসময়ে কাজ করতেন সেনাবাহিনীতে। ২০২১ সালে কীভাবে তাঁর কাছ থেকে তাপস সাহা ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছেন গুনে গুনে, তা বললেন নিজের মুখেই।
ইউসুফের কথায়, “একদম সত্যি কথা বলছি। দলীয় স্তরে আমি কোনও সহযোগিতা পাইনি। রাজ্য পুলিশের সাহায্যও পাইনি। দুর্নীতি দমন শাখার কর্তারা ডেকেছিলেন আমাকে। বলেছিলেন, আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখছি। এক দেড় বছর হওয়ার পর আর কিছুই এগোয়নি। তারপর হাইকোর্টের আশ্রয় নিই।” তিনি বলেন, “আমাকে বলেছিল, তোর ছেলের চাকরিটা হয়ে যাবে। আবার অনেকেই বলছিলেন, তিনি চাকরি দিতে পারেন। আমি টাকা দিয়ে অন্যায় করেছি জানি, আসলে কে না চায় সন্তান কাজ করুক। তাই দিয়েছিলাম।”
বুধবার TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তাপস সাহা দাবি করেছিলেন রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা প্রমাণ করতে পারেনি, তিনি কারোর কাছ থেকে পাঁচ নয়া পয়সা নিয়েছেন। সিবিআই-ও পারবে না। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক তথ্য।
কেস ২ প্রতারিতদের তালিকায় কাজল সাহা। পেশায় গৃহশিক্ষক। বিধায়কের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, প্রথমে গ্রুপ ডি, পরে প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ২ লক্ষ টাকা তাঁর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। দু’দফায় মোট ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। জমি বন্দক রেখে সেই টাকা দিয়েছিলেন তিনি। তাপস সাহা বলেন, “আমি প্রথমে ডি গ্রুপ চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম। প্রথমে ৫০ হাজার টাকা নেন। দল করতাম একসঙ্গে। কিছুদিন পরে বলল, ডি গ্রুপে নয় প্রাথমিকে চাকরি হবে তোর। টাকা বেশি লাগবে। বলেছিল ৭ লক্ষ লাগবে। অ্যাডভান্সও বেশি লাগবে। ৫০ হাজার আগে দেওয়াই ছিল। পরে আরও দেড় লক্ষ, মোট ২ লক্ষ দিলাম। পরে বলল বিএড করতে হবে, তার জন্য আরও ২০ হাজার। মোট ২ লক্ষ ২০ হাজার দিই। দোষ আমারও। ভুল করেছি। একটা সিস্টেমই হয়ে গিয়েছিল, টাকা না দিলে চাকরি হবে না।”
এবার আসা যাক নাজিরপুরের বাসিন্দা অমৃত ব্যাপারীর কথায়। তিনি একসময়ে তৃণমূল বিধায়কের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রেশন ডিলার, পুলিশ, শিক্ষকের চাকরির জন্য ২৬ লক্ষ টাকা তুলে বিধায়ককে দিয়েছিলেন তিনি। ফোনে সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধি।
ফোনেই তিনি বললেন, “তাপস সাহাকে তিনি ২৬ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন। আমার কাছ থেকে চাকরির জন্য নয়, ডিলারশিপের জন্য টাকা নিয়েছিলেন।” এবার মিডলম্যানদের একাধিক বয়ান সামনে আসতে শুরু করেছে। যাঁরা চাকরিপ্রার্থী ও নেতাদের মাঝে সেতুবন্ধনের কাজ করছে।
আপাতত সিবিআই-কে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা বিধায়কের কি ‘ক্যারেক্টর সার্টিফিকেট’ দেন, এখন সেটার দেখার।





