Arjun Singh: ‘… কাউন্টডাউন শুরু’, অর্জুনের দলবদলের জল্পনায় কি তবে পূর্ণচ্ছেদ?

Arjun Singh: যে পোস্টারে মমতা-অভিষেকের সঙ্গেই অর্জুনকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এই পোস্টার দিল কারা? তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Arjun Singh: '... কাউন্টডাউন শুরু', অর্জুনের দলবদলের জল্পনায় কি তবে পূর্ণচ্ছেদ?
অর্জুন সিং। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 22, 2022 | 1:39 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: “এক জায়গায় কাউন্টডাউন শুরু, আরেক জায়গায় কাউন্টডাউন শেষ। কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই জানতে পারবেন।” দলবদলের জল্পনার মাঝেই বললেন অর্জুন সিং। রবিবার দলবদলের জল্পনার মধ্যে ফের ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেছেন অর্জুন সিং। এবার টুইটে লিখেছেন, “যাঁরা আমার উত্তরণের প্রতিটি ধাপ দেখেছেন, তাঁদের কখনও নিজের ভিতরটাও দেখা উচিত, নিজেকেও খোঁজা উচিত।” অর্জুনের এই নতুন টুইট ঘিরেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন, কাদের দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্জুন? শনিবার ব্যারাকপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অর্জুন সিংকে তৃণমূলে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার পড়ে। যে পোস্টারে মমতা-অভিষেকের সঙ্গেই অর্জুনকে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এই পোস্টার দিল কারা? তা এখনও স্পষ্ট নয়।

স্বাভাবিকভাবেই অর্জুনের দলবদলের জল্পনা আরও জোরাল হতে থাকে। তারইমধ্যে সাংবাদিক বৈঠক করেন অর্জুন সিং। তিনি বলেন, “সময় অনেক চলে গেছে। রাজনীতি এমন একটা জায়গা, রাজনীতিতে সব কিছু সম্ভব। মানুষকে নিয়ে আমি রাজনীতি করি। ব্যারাকপুরের মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে।”

গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় বেসুরো হয়েছেন অর্জুন সিং। করেছেন একের পর এক ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট। দিন যত এগিয়েছে, দল বদলের জল্পনা বেড়েছে ততই। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন  সিং। ব্যারাকপুরের সাংসদ হন তিনি।  সে সময় তাঁর বহু অনুগামী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। একুশের ভোট পরবর্তী হিংসায় তাঁদের অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে সরব হয়েছিলেন খোদ অর্জুন সিংই। তাহলে এবার তাঁদের কী হবে? এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় অর্জুন সিংকে। বর্ষীয়ান নেতার অত্যন্ত কৌশলী মন্তব্য, “যাঁদের পরিবারের সঙ্গ এমন ঘটনা ঘটেছে, তাঁদের প্রতি সমবেদনা। রাজনীতিতে হিংসা কাম্য নয়। অনেক লোক মারা গিয়েছে, তাঁদের পাশে থাকার দরকার ছিল। যে কোনও কারণে মৃত্যু কাম্য নয়। তাঁদের পরিবার এখনও লড়াই করছে। এখনও হয়তো আমরা তাঁদের পাশে যেতে পারিনি। তাঁদের সাহায্য করতে পারিনি।” তাহলে কি তৃণমূলে গিয়ে সেই লড়াই জারি থাকবে? প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান অর্জুন সিং।

অর্জুন সিং বলেন, “যাঁরা আমার পাশে থেকেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। ব্যারাকপুরের মানুষ সব সময় আমার পাশে থেকেছেন। ঘর ওয়াপসি হলে তাঁরা সকলেই জানতে পারবেন।” এরপরই অর্জুন সিং বলেন, “বিজেপিতে থাকব কিনা, সেটা সময়ই বলবে।” বিজেপির সঙ্গে দূরত্বটা ঠিক শুরু হয়েছে একুশের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই। সেসময় ভাটপাড়া-জগদ্দলে আক্রান্ত একাধিক কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে অর্জুন সিংকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন। কেন নীচু স্তরের কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয় না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। তারপর গত কয়েক মাসে অর্জুন যেন আরও অনেকটা বেশি করে ‘বেসুরো’ ।

সম্প্রতি পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর স্নায়ুযুদ্ধ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে অর্জুনের স্ট্র্যাটেজি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কয়েক দিন ধরেই অর্জুনকে ‘বিদ্রোহী’। সংবাদমাধ্যমের সামনেও তাঁকে আক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে, দল কাজে লাগাচ্ছে না তাঁকে। শেষে হিন্দিতে লেখা অর্জুনের ফেসবুক পোস্ট। যার আক্ষরিক অর্থ, “সমুদ্রের নিজস্ব শক্তি থাকে। কিন্তু, মাঝিও কি ক্লান্ত হয়?” অর্জুন স্পষ্ট করেছেন, তাঁর ‘কাউন্টডাউন এক জায়গায় শেষ’। বাকিটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।