Bagda: ‘গ্রামের নামটা ফোকাস হয়ে গেল…’, সুপ্রিম রায়ে আজ নিঃস্তব্ধ বাগদার প্রত্যন্ত মামাভাগ্নে গ্রাম! সংযোগ কোথায়?
Bagda: চন্দন মণ্ডলের কথা মনে আছে? যাঁর পোশাকি নাম সৎরঞ্জন! স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল বাগদার বাসিন্দা রঞ্জনের। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। 'সৎ রঞ্জন' রহস্যের উপর থেকে পর্দা সরালেন রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআই-এর প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা উপেন বিশ্বাস।

উত্তর ২৪ পরগনা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল! সুপ্রিম এই রায়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার প্রত্যন্ত এলাকা মামাভাগ্নে গ্রামে পিনপতন নিঃস্তব্ধতা। গ্রামের অর্ধেক বাড়িতে আজ সকাল থেকে হাঁড়ি চরে নি, গ্রামের সরু গলি ধূ ধূ করছে। অপরিচিত লোক দেখলেই চলছে মুখ আড়ালের চরম প্রয়াস। কিন্তু সুপ্রিম এই রায়ের সঙ্গে প্রত্যন্ত গ্রাম ‘মামাভাগ্নের’ কী সম্পর্ক?
চন্দন মণ্ডলের কথা মনে আছে? যাঁর পোশাকি নাম সৎরঞ্জন! স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল বাগদার বাসিন্দা রঞ্জনের। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ‘সৎ রঞ্জন’ রহস্যের উপর থেকে পর্দা সরালেন রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআই-এর প্রাক্তন শীর্ষ কর্তা উপেন বিশ্বাস। টাকার বিনিময়ে বহু মানুষের চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। সিবিআই আদালতকে জানিয়েছিল, কেবল চাকরি বিক্রিই নয়, স্কুলে পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়েও দিয়েছেন চন্দন। এই চন্দনেরই গ্রাম ‘মামাভাগ্নে’। সুপ্রিম রায়ের পর এই গ্রামের বহু জনের চাকরি গিয়েছে।
পাড়ার বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে মাস্টারি চাকরি করার কারণে গ্রামের নাম হয়েছিল মামাভাগ্নে মাস্টার পাড়া। আজ সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশকে বহাল রাখায় প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হল। আর এই খবর গ্রামে পৌঁছতেই বাগদার মামাভাগ্নে গ্রামে শুধুই নিঃস্তব্ধতা ।
নামখানায় স্কুলে ক্লার্কের চাকরি করছে মিঠুন বিশ্বাস। তাঁর মা ষষ্ঠী বিশ্বাস বললেন, ” ‘টাকা ছাড়া কী আর চাকরি হয়? চন্দনকে চাষের জমি বিক্রি করে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে ছেলের চাকরি হয়েছিল। ছেলের বউ মেয়ে রয়েছে কী হবে এখন?” মিঠুনের স্ত্রী শম্পা বললেন, “সংসারটা কীভাবে চালাব, সেটাই সমস্যা। বিয়ের পর ওর চাকরি হয়। আমার একটা মেয়ে আছে, ক্লাস ফোরে পড়ে। বাড়ির সবাই নিঃস্তব্ধ।”
গ্রামের আরেক বাসিন্দা শ্যামলী মণ্ডল জানান, তাঁর ছেলে ভীম মন্ডল গঙ্গাসাগরের পাশে চাকরি করে। তিনি বলেন, ” পড়াশোনায় ভাল, বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাই হয়তো চন্দন চাকরিটা দিয়েছিল। আমরা গরিব মানুষ, টাকা কোথায় পাব? তবুও জোগাড় করে দু’-এক লাখ টাকা দিয়েছিলাম।”
গ্রামের এক মহিলার দাবি বললেন, “আমাদের গ্রামের নামডাক ভালো। এখানে ১০০ জনের মধ্যে হয়তো ২০ জনের চাকরি হয়েছে। কিছু লোকের চাকরি হয়তো চন্দন দিয়েছে। গ্রামের অনেকের চাকরি গেল, কত মানুষের ক্ষতি হবে, বলা যায় না। বাড়ি-জমি-জায়গা বিক্রি করে টাকা দিয়েছে, সুদে টাকা ধার নিয়ে দিয়েছে। গ্রামের এতজনের চাকরি গেল, খারাপ লাগছে। গ্রামের নামটা আগে উঠে এল। দশটা লোকে জানতে পারছে… ”





