Mamata Banerjee:’যতক্ষণ না আসছে… আমি বসলাম’, মঞ্চে ‘নজিরবিহীনভাবে’ চুপটি করে বসেই রইলেন মমতা

Mamata Banerjee: হিঙ্গলগঞ্জের সভায় রেগে বক্তৃতা বন্ধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Mamata Banerjee:'যতক্ষণ না আসছে... আমি বসলাম', মঞ্চে 'নজিরবিহীনভাবে' চুপটি করে বসেই রইলেন মমতা
হিঙ্গলগঞ্জের সভায় মমতা (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 29, 2022 | 2:10 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: মঞ্চে আধিকারিকদের ভর্ৎসনা নতুন নয়। বেশ কয়েক বছর আগে বীরভূমে এক সরকারি মঞ্চে আদিবাসী শিল্পীদের পরিচয়পত্র দেওয়া নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে তখন উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র । আদিবাসী শিল্পীদের পরিচয় পত্র এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড দিতে তৎক্ষণাৎ তৎপর হয় প্রশাসন। তাছাড়া প্রায়শই আমলা-মন্ত্রীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ধমকও দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মঙ্গলবারে হিঙ্গলগঞ্জে একগুচ্ছ প্রকল্প উদ্বোধনের সময় মুখ্যমন্ত্রীকে যে ‘রণমূর্তিতে’ দেখা গেল, তা নজিরবিহীন।

কথা ছিল শীতবস্ত্র বিতরণ করার। সেই মতো পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিও ছিল তাঁর। নিজে কিনে পাঠিয়েছিলেন ১৫ হাজার শীতবস্ত্র। কিন্তু হিঙ্গলগঞ্জে সভায় পৌঁছলই না তা। সভা চলাকালীনই মঞ্চ থেকে শীতবস্ত্র প্রদানের কথা ঘোষণা করার পর খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারলেন, শীতবস্ত্র আদৌ এসে পৌঁছয়নি সভাস্থলে। কথা দিয়েও রাখতে পারলেন না তিনি। আর তাতেই চরম ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সভা মাঝপথে থামিয়েই স্টেজে বসে পড়লেন তিনি। সরকারি আধিকারিকদের বললেন, “যতক্ষণ না শীতবস্ত্র আসছে, আপনারাও বসুন আমিও বসলাম।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিডিও-জেলাশাসকদের এমন বার্তা নজিরবিহীন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিরা।

এ দিন আর পাঁচটা সভার মতোই হিঙ্গলগঞ্জের সভায় স্টেজে উঠে বক্তৃতা রাখতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যের একাধিক প্রকল্প, প্রতিশ্রুতির আশ্বাস দিচ্ছিলেন। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এরপর শীতবস্ত্র প্রদানের কথা বলেন। সভা শুরু মিনিট দশেকের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি নিজে শীতবস্ত্র কিনে এনেছি। পাঁচ হাজার সোয়েটার, পাঁচ হাজার কম্বল আর পাঁচ হাজার চাদর। এগুলো যেন মানুষ ঠিক মতো পান।” কথা গুলো যখন বলছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী দৃশ্যত আশা করেছিলেন. স্টেজেই সেগুলি দেখতে পাবেন। তা না দেখতে পেয়ে পিছন ঘুরে তিনি সরকারি আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন, “এগুলো কোথায় রেখেছেন? কাকে দিয়েছেন? ১৫ হাজার কোথায় রেখেছেন?”

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে আসব বলে আমি কম্বল, চাদর, সোয়েটারগুলো কিনে এনেছি। এসে দেখছি ভোঁপা…।” বলতে বলতেই সরকারি আধিকারিকদের আবারও বলেন, “আমি তো বলেছি, আমরা সরাসরি দেব, কারোর মারফত দেব না, শোনা হয়নি কেন? আমি বিডিও অফিসে রাখার জন্য তো পাঠায়নি।” এরপর মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনা, “যদি বিডিও, আইসি, ডিএম রা ঠিক মতো কাজ না করে, আমি পদক্ষেপ করব।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি ১৫ হাজার দিয়ে দিতে পারতাম না, অন্তত আমার এখান থেকে তো কিছু দেওয়া হত। এটা আমি পুজো উপলক্ষে এনেছিলাম। এটা যতক্ষণ না আসছে আপনারা বসুন, আমিও বসলাম…” বসেই স্টেজেই চেয়ারে বসে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। এক টানা ১৭ মিনিট বসে থাকেন স্টেজে। পরে অবশ্য বিডিও অফিস থেকে শীতবস্ত্র আনার ব্যবস্থা করা হয়।

যদিও এদিন সবাইকে শীতবস্ত্র দিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগামিকাল সরকারি আধিকারিকার দাঁড়িয়ে থেকে শীতবস্ত্র তুলে দেবেন বাকিদের। যদি ১৫ হাজারের বদলে ২০ হাজার শীতবস্ত্র লাগে, তাও দিতে রাজি বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।