MLA Madan Mitra’s Birthday: ‘মসীহা’ মদনের জন্মদিনে পাত পেড়ে খেলেন ৬ হাজার মানুষ, রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম প্রকাশ বিধায়কের
TMC MLA: কামারহাটি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা বেলুন ও বিধায়কের ছবি দিয়ে সাজানো হয়। এলাকার সকল মানুষকে নিমন্ত্রণ মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়। খাওয়ানো হয় বিরিয়ানি।
উত্তর ২৪ পরগনা: এই দিনটা প্রত্যকের জীবনেই এমনিতেই বিশেষ। একটু আলাদা। অনেক শুভেচ্ছা, আনন্দে ভরা। এই দিনটা জন্মদিন। আর যদি জন্মদিন হয় তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের তাহলে তো কথাই নেই! যতই হোক, তাঁর ভক্ত ও অনুগামীদেরও তো কিছু শখ আহ্লাদ রয়েছে! শুক্রবার কামারহাটির ছবিটা অন্তত এমনটাই ছিল। ৬৭ বছরে পা দিলেন মদন মিত্র। আর তাঁর জন্মদিন ধূমধাম করে পালন করলেন অনুগামীরা। মধ্যাহ্নভোজনে উপস্থিত থাকলেন ৬ হাজার মানুষ।
এদিন কামারহাটি তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোটা এলাকা বেলুন ও বিধায়কের ছবি দিয়ে সাজানো হয়। এলাকার সকল মানুষকে নিমন্ত্রণ মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়। খাওয়ানো হয় বিরিয়ানি। গোটা কামারহাটি এলাকার প্রায় ৬ হাজার মানুষ এদিন এই উদযাপনে অংশ নেন। সারাদিন চলে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। এদিন দুপুরে দেখা যায়, লাইন দিয়ে সারি বেঁধে খেতে বসেছেন এলাকাবাসী।
এদিন, কামারহাটি ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব প্রেসিডেন্ট বলেন, “মানুষের কাছে যেমন দুর্গাপুজো, কালীপুজো, আমাদের কাছে তেমনই দাদার জন্মদিন। দাদা আমাদের মসীহা। আমাদের গুরুদেব। তিনি সকলের কাছের মানুষ। তাঁর জন্মদিন তাই আমাদরে কাছে উত্সবের মতো। আমরা, এই দিনটাকে তাই এরকম আনন্দ করেই পালন করি। আজ এলাকার সকল মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছি আমরা। আজ কারোর বাড়িতে রান্না হবে না। সকলে আজ এখানেই খাওয়া দাওয়া করবেন। দাদা আমাদের গুরু। দাদাই সব। ওঁর জন্যই এত আয়োজন।”
আর যে বিধায়কের জন্মদিনে এত আয়োজন, তিনি জন্মদিনে ঠিক কী করলেন? জানা গিয়েছে, এদিন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি গানের অ্যালবাম প্রকাশ করেন তৃণমূল বিধায়ক। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির ঠাকুরদালানে সেই অ্যালবামের আনুষ্ঠানিক মুক্তিও হয়।
কিন্তু, নিজেকে ‘চিরকালীন রঙীন’ বলে পরিচয় দেওয়া তৃণমূল বিধায়ক হঠাত্ রবি ঠাকুরের গান গেয়ে অ্যালবাম প্রকাশ করতে গেলেন কেন? কিছুদিন আগে প্রশাসনিক বৈঠকে নিজের ‘রঙীন ছেলে’ মদনের খোঁজ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই একরকম মদনকে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে নির্দেশ দেন মমতা।
মমতা যখন মদনের খোঁজ করছেন তখন আচমকাই গম্ভীর গলায় মদন বলে ওঠেন, “আপনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) দেওয়া নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করছি’। সবাই ফের সামনে তাকালেন। নরম গলায় মমতাকে বলতে শোনা গেল, “তুমি অন্য কিছু গাইছ না তো, রবীন্দ্র সঙ্গীত ছাড়া?” উত্তরে মদন জানান, না তিনি আজকাল স্রেফ রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়েই আছেন। তিনি বলেন, ‘শুধুই রবীন্দ্র সঙ্গীত’। শুনে প্রসন্নতার হাসি খেলে যায় মমতার মুখে। বলেন, ‘ওকে ঠিক আছে’।
এরপরেই হাসির রেশ প্রশাসনিক বৈঠকের শেষে। কেউ একজন ভিড়ের মধ্যেই পুনরোচ্চারণ করেন বিধায়কের চিরাচরিত শব্দবন্ধ ‘ও লাভলি’। সেদিন, মদনের সঙ্গে কথা বলেই প্রশাসনিক বৈঠক সমাপ্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি মমতার বহু পুরনো সৈনিক। বিধায়ক নয়, তৃণমূল নেত্রীর সৈনিক হিসাবেই নিজের পরিচয় দিতে পছন্দ করেন মদন গোপাল মিত্র। ফেসবুক লাইভে তিনি জানান, ‘এম এম ইজ আ কালারফুল বয়। নট পাওয়ারফুল’। আজকাল কথায় কথায় গান খেলে যায় তাঁর গলায়। এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরের গানের কলি বসিয়ে দেন তৃণমূল বিধায়ক। ভোটের আগে বিরোধীদের বিঁধে গান ধরেছেন। তার পর পুজোর সময়ও একটা গোটা মিউজিক ভিডিয়ো করেছেন মদন মিত্র। কিন্তু তাঁর নেত্রীর কথায় শুধুই রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইবেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠকে জানান নিজেই। তারপর থেকে আর নেত্রীর কথা অমান্য করেননি এই ‘রঙীন’ সৈনিক। নিজের জন্মদিনেও সেই কথাটাই যেন আবার প্রমাণ করলেন মদন মিত্র।