‘আমার দিদার বডিটা কেউ নিয়ে যাক!’ ১৮ ঘণ্টা ধরে ঘরে পড়ে করোনা সংক্রমিতের দেহ, বাড়িতে আরও দু’জন পজিটিভ
(COVID-19) অরিজিতের অভিযোগ, রাত থেকে নৈহাটি, ভাটপাড়া, কাঁচড়াপাড়া বিভিন্ন পুরসভায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। সকলেই বলেছে জেটিয়া তাদের জো়নের আওতায় নয়।
হালিশহর: ১৮ ঘণ্টা পার করে গেল, তবু বাড়িতেই শোওয়ানো কোভিড রোগীর শবদেহ। রবিবার রাত থেকে পাগলের মত এখানে ওখানে ফোন করছেন বাড়ির লোক। প্রতিবেশীরাও এগিয়ে এসেছে। কিন্তু থানা, পুরসভা, ব্লক অফিস — কোথাও মেলেনি সুরাহা। হালিশহরের জেটিয়ার ঘটনা।
জেটিয়ার সেনপাড়া এলাকায় বাড়ি সত্তরোর্ধ্ব আরতি পালেন। গত ৫ মে তাঁর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এর পর হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি বেড। অগত্যা বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। রবিবার সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। এর পর থেকে নাজেহাল অবস্থা বাড়ির লোকের।
স্থানীয় বাসিন্দা অরিজিৎ সেন বলেন, “আমাদের পাড়ার বাসিন্দা আরতি পাল। ওনার ৫ তারিখ করোনা পজিটিভ আসে। জওহরলাল নেহরু হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করা হয়েছিল। এরপর স্থানীয় কোভিড হাসপাতালে ওনাকে ভর্তি করাতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তারা রেফার করে দেয়। কোথাও কোনও হাসপাতালে জায়গা মেলেনি। এর পর বাড়িতেই এনে রাখা হয়। রবিবার বাড়ির লোকেরা দেখেন উনি মারা গিয়েছেন। তাঁরা পাড়ায় বিষয়টি জানান। সেই অনুযায়ী পুলিশকে বলি। স্থানীয় প্রশাসন, পঞ্চায়েতেও বলা হয়েছে। পুলিশ বলছে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করলে ওরা দায়িত্ব নিয়ে দাহ করাবে।”
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ উন্নয়নের রাশ নিজের হাতে নিলেন মমতা
অরিজিতের অভিযোগ, রাত থেকে নৈহাটি, ভাটপাড়া, কাঁচড়াপাড়া বিভিন্ন পুরসভায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। সকলেই বলেছে জেটিয়া তাদের জো়নের আওতায় নয়। তাই এই দেহ তারা নিতে পারবে না। হালিশহর পুরসভা থেকে কোনও সহযোগিতা মেলেনি। কাজ করছে না কোনও কনট্রোল রুমের নম্বরও।
আরতিদেবীর নাতি মনোজিৎ পালের কথায়, “আমার বাড়িতে আরও দু’জন পজিটিভ রোগী রয়েছেন। একদম অসহায় লাগছে। আমার মা পজিটিভ, বউও সম্ভবত পজিটিভ। বাবাও অসুস্থ। থানা বলছে বিডিও অফিসে জানাতে। অথচ বিডিও অফিস কোনও সাহায্য করছে না। গাড়ি পাচ্ছি না একটাও। দেহ কী ভাবে সৎকার হবে সেটাই বুঝতে পারছি না।”