এক মনে খুঁটি পুঁতছিলেন, আচমকাই ঝলসে গেল ৩ জনের হাত-শরীরের একাংশ!

Basirhat: স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান।

এক মনে খুঁটি পুঁতছিলেন, আচমকাই ঝলসে গেল ৩ জনের হাত-শরীরের একাংশ!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 10:47 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: এগারো হাজার ভোল্টের হাইমাস লাইটের নতুন পোস্ট লাগাচ্ছিলেন বিদ্যুত্ দফতরের কর্মীরা। আচমকাই ঝলসে গেলেন তিন জন। তাঁদের প্রত্যেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। মর্মান্তিক ঘটনা বসিরহাটের হাসনাবাদ থানার আমলানি গ্রামে।

আমলানি গ্রামে ১১ হাজার ভোল্টের হাইমাস লাইটের নতুন পোষ্ট তুলছিলেন বিদ‍্যুৎ দফতরের কর্মীরা। সেই সময় অপরদিকে হাইটেনশন লাইনের এগারো হাজার ভোল্ট পাওয়ার সংযুক্ত হওয়ার ফলে তিন জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। ততক্ষণে তাঁরা প্রায় অচৈতন্য হয়ে পড়েছেন। এক জনের দাঁতে দাঁত লেগে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দারাই নানাভাবে তাঁদের সেবা করতে থাকেন। তবে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়ায় প্রাথমিকভাবে কী করা উচিত, তা নিয়ে প্রথমটায় কিছুটা ঘাবড়ে যান তাঁরা। তবে স্থানীয়রা তত্পরতার সঙ্গে দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করান।  তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। বছর আঠাশের বিশ্বজিৎ রায় ও বছর ছত্রিশের কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি বীরভূমের নলহাটি থানা এলাকায়। বছর কুড়ির নীলকান্ত পাইনের বাড়ি হাসনাবাদের তেঘরিয়া গ্রামে। তাঁদের বাড়িতেও বিদ্যুত্ দফতরের তরফে খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে পৌঁছেছেন।

তিন জনেই প্রত্যেকে বিদ্যুৎ দপ্তরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজে নিযুক্ত। ওই ল্যাম্পপোস্টে লাইন লাগানোর সময়ে ১১০০০ ভোল্টের লাইন চালু হয়ে গিয়েছিল। তা তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। কাজ করার সময়ে আচমকাই ল্যাম্পপোস্ট থেকে ছিটকে পড়েন তাঁরা। তাঁদের হাত, গায়ের একাংশ ঝলসে যায়।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “আমরা তো প্রথমে বুঝতেই পারিনি। বাচ্চা ছেলেগুলো কাজ করছিল। আচমকাই দেখি ছিটকে মাটিতে পড়ে গিয়েছে ওরা। এক-এক জনের মুখ দিয়ে গ্যাজলা বেরোচ্ছিল। হাত-পায়ের অনেকটাই ঝলসে গিয়েছে। এত ভোল্টের কারেন্ট খেয়েছে ওরা, জীবনগুলো যাতে থাকে… ”

মর্মান্তিক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “ওরা পোল তুলছিল। আচমকাই গাছের ডাল হয়তো কোনওভাবে তারে লেগে গিয়েছে। তাতেই দেখি ছিটকে পড়ে গেল তিন জন। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টা নজরে এসেছিল। তা না হলে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত।”

এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতি কথা বলেছেন। তবে বিদ্যুত্ দফতরের স্থানীয় সুপারভাইজার বলেন, “ওরা আজকে পোল তুলতেই গিয়েছিল ওখানে। কাজের সময়ে বোধহয় কোনওভাবে তার লেগে যায় হাতে। তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে চিকিত্সা চলছে। ভাল হয়ে যাবে ওরা।” এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে হাসনাবাদ বিদ্যুৎ দফতর। তবে এভাবে অস্থায়ী কর্মীদের পর্যাপ্ত প্রশক্ষিণ ছাড়াই এতটা বিপজ্জনক কাজ কীভাবে করতে পাঠালেন বিদ্যুত্ দফতরের আধিকারিকরা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশও। আরও পড়ুন: ‘ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছেন ওঁ’, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিলীপের