পিছন থেকে অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ঘাড়ে, টুটি চিপে ধরেই নিয়ে যায় অন্ধকারে. তারপর…

Sundorbon: ভয়াবহ ঘটনার বিবরণ দিতে দিতে তখনও কেঁপে উঠছিলেন অন্নর সঙ্গীরা।

পিছন থেকে অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ঘাড়ে, টুটি চিপে ধরেই নিয়ে যায় অন্ধকারে. তারপর...
বাঁ দিকে- বাঘের লোম
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 20, 2021 | 1:36 PM

উত্তর ২৪ পরগনা:  তাঁরা জীবন বাজি রেখেই যান। পেটের টানে ‘ডেরায়’ ঢোকেন মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েই! তবুও ঢোকেন! অতঃপর আরও একবার মাছ ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে  বাঘের হানায় মৃত্যু হল এক মত্স্যজীবীর। মৃতের নাম অন্ন দাস (৫০)।

বসিরহাটের সন্দেশখালি থেকে একদল মৎস্যজীবী সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে সন্দেশখালির আতাপুর ঘাট থেকে মাছ ধরতে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। ফিরে আসার সময় শুক্রবার ভোর রাতে বাঘের আক্রমণে পড়েন ওই মৎস্যজীবী দলটি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, আচমকাই পিছন থেকে একটা বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে নৌকার ওপর। বছর পঞ্চাশের অন্ন বসেছিলেন নৌকার পিছন দিকেই। ঘাড়ে থাবা বসিয়ে অন্নকে টেনে নিয়ে জঙ্গলের দিকে এগোতে থাকে বাঘটি।

ভয়াবহ ঘটনার বিবরণ দিতে দিতে তখনও কেঁপে উঠছিলেন অন্নর সঙ্গীরা। বাঘটি যখন জঙ্গলের দিকে সাঁতরে যাচ্ছে, তখন হাতের সামনে থাকা লাঠি, বড়শি নিয়েই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তাঁরা। এলোপাথাড়ি লাঠি চালাতে থাকেন। বাঘে-মানুষে বেশ কিছুক্ষণ লড়াই চলে। বেশ কিছুক্ষণ পর হাল ছাড়ে বাঘ! অন্নকে ফেলেই জঙ্গলে চলে যায়।

কিন্তু ততক্ষণে অন্নের শরীর নিথর। দেহ উদ্ধার করে সঙ্গীরা গ্রামে ফেরেন। অন্নের এক সঙ্গীর কথায়, “পেটের টানে যাই আমরা। ফিরব কিনা কোনও ঠিক থাকে না। কাউকে না কাউকে তো প্রত্যেকবারই হারাই। কবে আমারও দিন আসে!”

প্রশ্ন উঠছে, এই মৎস্যজীবীরা আদৌ জঙ্গলের বিধি মেনেছিলেন কিনা? বাফার জোন থেকে কোর জোনে ঢুকেছিলেন কিনা? তদন্ত করে দেখছে বসিরহাট বন দফতর। মৎস্যজীবীর মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

লকডাউনে এমনিতেই সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষের অবস্থা খারাপ। তারপর গোদের ওপর বিষফোঁড়াল হয়েছিল ইয়াস! উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের এখন অন্ন সংস্থানই দায় হয়ে উঠেছে। তাই জীবন বাজি রেখেই তাঁরা পাড়ি দেন মাছ-কাঁকড়া ধরতে! প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

প্রশাসনের তরফে বলা হয়, মত্স্যজীবীদের বারবার সতর্ক করা হয়। তবে অনেকক্ষেত্রেই তাঁরা বিধি মানেন না। হতে পারে সেটা পেটের টানেই। কিন্তু এভাবে তাঁদের জীবন বিপন্ন হয়, সেটা ওঁদের বুঝতে হবে। প্রশাসনের তরফ থেকেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই মত্স্যজীবীরাও বিধি মেনেছিলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। আরও পড়ুন: আশির ওপর বয়স, বাড়িতে একাই থাকতেন, বৃদ্ধের বাড়িতে রোজ ঢুকতেন তিন মহিলা! ওঁত পেতে প্রতিবেশীরা দেখলেন আসল দৃশ্য