‘মিষ্টিম্যাজিক’! সিপিএমের ‘বেহাত’ হওয়া কার্যালয় ফিরিয়ে দিলেন ঘাসফুলের বিধায়ক

বুধবার, সিপিএমের 'বেহাত' হওয়া দলীয় কার্যালয় ফিরিয়ে দিলেন বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। বামদলীয় সূত্রে খবর,  দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের কার্যালয়টি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। গত ৪মে সেই কার্যালয় দখল নিয়ে নেয় তৃণমূল। 

'মিষ্টিম্যাজিক'! সিপিএমের 'বেহাত' হওয়া কার্যালয় ফিরিয়ে দিলেন ঘাসফুলের বিধায়ক
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 23, 2021 | 10:10 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: শুধুমাত্র ‘মিষ্টিমুখ’! লাল মিষ্টি খাইয়ে সিপিএমের কর্মী সমর্থকদের হাতেই তাঁদের দলীয় কার্যালয় ফিরিয়ে দিলেন ঘাসফুলের বিধায়করা। বসিরহাটে উঠে এল দুই রাজনৈতিক দলের এমনই সৌহার্দ্য়ের ছবি। বঙ্গ ভোট আবহে বা তার পরেও দলীয় কার্যালয় দখল নিয়ে যখন একের পর এক রাজনৈতিক হিংসার ছবি দেখেছে বাংলা, তখন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী ছবি দেখা গেল বসিরহাটে।

বুধবার, সিপিএমের ‘বেহাত’ হওয়া দলীয় কার্যালয় ফিরিয়ে দিলেন বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। বামদলীয় সূত্রে খবর,  দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের কার্যালয়টি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। গত ৪মে সেই কার্যালয় দখল নিয়ে নেয় তৃণমূল।  বসিরহাটের এই কার্যালয়টি ফিরে পেতে একাধিক পদক্ষেপ করে স্থানীয় বাম নেতৃত্ব। কিন্তু ফল হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের পর কার্যালয়টি ফিরে পাওয়ার আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছিলেন তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল ব্লক নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানিয়েও তখন কোনও ফল হয়নি। তৃণমূলের দখলদারির দেড় মাস পর ব্লক সভাপতির উদ্যোগে উদ্ধার হয় বামেদের কার্যালয়টি। বুধবার, সিপিএম নেতা পলাশ সরকার ও রাজু আহমেদের হাতে দলীয় কার্যালয়ের চাবি তুলে দেন বসিরহাটের তৃণমূল ব্লক সভাপতি শাহনুর মণ্ডল ও বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর, দুই দলের নেতৃত্ব একে অপরকে  ‘লালমিষ্টি’ খাওয়ান।

সিপিএম নেতা রাজু আহমেদ বলেন, “১৯৮৫ সালে সিপিএম নেতৃত্ব বসিরহাট মহকুমার বসিরহাট ১নং ব্লকের পিফা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে জমি কিনে  কৃষক সভার এই কার্যালয় তৈরি হয়। তারপর থেকেই এখানেই দলীয় কাজ চলত। ভোটের পর কার্যালয়টি হাতছাড়া হয়। কিন্তু, ফের আজ শাসক শিবিরই আমাদের কার্যালয়টি ফিরিয়ে দিলেন। রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধ থাকতেই পারে। তবে, সৌজন্যের সম্পর্ক থাকতেই পারে।”

তৃণমূল নেতা শাহানুর মণ্ডল বলেন, “আমাদের তরফে হয়ত কিছু ভুল ছিল। তবে সেসব আমরা মিটিয়ে নিয়েছি। সৌজন্যতাই আসল। রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। আমরা খবর পাওয়ার পরেই সিদ্ধান্ত নিই ওঁদের কার্যালয়টি ফিরিয়ে দেওয়ার। সেই মোতাবেক আজ কার্যালয়ের চাবি আমরা হস্তান্তর করলাম।”

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে চুঁচুড়ায় দেখা গিয়েছিল শাসক দলের বিধায়কের সৌজন্যতার ছবি। প্রাণনাশের হুমকি পাওয়া বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে শাসক-বিরোধী লড়াই পৌঁছেছে আদালতের দোরগোড়ায়।  ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে, শাসক-বিরোধী শিবিরের এই সৌজন্যতা ব্যতিক্রম সৃষ্টি করেছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন: ‘ঘুষখোর!’ বিজেপিতে যোগ দিতেই ‘পোস্টার বিতর্কে’ তৃণমূলের কাউন্সিলর