Asansol: ‘তোলাবাজি আটকে দেওয়াতেই বিক্ষোভ’, বিস্ফোরক জামুড়িয়ার কারখানা কর্তৃপক্ষ

Asansol: ঘটনাকে ঘিরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল জামুড়িয়ার শিল্পতালুক। কিন্তু দিনের শেষে বোমা ফাটালেন জামুড়িয়া সুপার ফ্যাক্টরি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

Asansol: 'তোলাবাজি আটকে দেওয়াতেই বিক্ষোভ', বিস্ফোরক জামুড়িয়ার কারখানা কর্তৃপক্ষ
আসানসোলে বিক্ষোভ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 16, 2022 | 8:11 AM

আসানসোল: দিনভর আন্দোলন জামুড়িয়ায়। কারখানার নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বিক্ষোভকারীদের। ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়ি থেকে শুরু করে বেপরোয়া লাঠি নিয়ে হামলা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের লাঠিচার্জ। পাল্টা পথ অবরোধ আন্দোলনকারীদের। ঘটনাকে ঘিরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছিল জামুড়িয়ার শিল্পতালুক। কিন্তু দিনের শেষে বোমা ফাটালেন জামুড়িয়া সুপার ফ্যাক্টরি কারখানা কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, তোলাবাজি চলছিল প্রতিমাসে। প্রতিমাসে দিতে হচ্ছিল তিন লক্ষ করে টাকা। সেই টাকা বন্ধ করে দিতেই স্থানীয়দের একাংশ কারখানার সামনে বিক্ষোভ ধর্না অবস্থানে বসেছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীদের ইটপাটকেল ছুড়ছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীরা নিজেদের বাঁচাতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া দেন বিক্ষোভকারীদের। তারপরেই কারখানার কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদের হামলা চালিয়েছে আন্দোলনকারীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, তোলাবাজি চলছিল। তোলা বন্ধ করতেই আন্দোলন লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জামুড়িয়া সুপার ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষের হুঁশিয়ারি শিল্পবান্ধব পরিবেশ না পেলে কারখানা নিয়ে চলে যাবেন ভিন রাজ্যে।

যদিও কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিং। তাঁর দাবি, কারখানার বাউন্ডারি তৈরির আগে স্থানীয়দের চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ততদিন পর্যন্ত কম্পেনশেসন দেওয়া হচ্ছিল। সেই টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা স্থানীয় জমিহারাদের টাকা। তোলাবাজি নয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ মিথ্যা কথা বলছেন বলে অভিযোগ।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই জামুড়িয়ায় সুপার ফ্যাক্টরি গেটে চাকরির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে কারখানার নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষের জড়ায় গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ কারখানা তৈরির জন্য তাঁরা জমি দিয়েছিলেন বিনিময় চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এখন কারখানার বাউন্ডারি তুলে দেওয়া হয়েছে।

গ্রামবাদীদের জমি বাউন্ডারির ভেতরে ঢুকে গেছে। কর্তৃপক্ষ চাকরি দিচ্ছেন না। গত চার মাস ধরে কম্পেনশেসন দিচ্ছিল তাও দিচ্ছে না। জামুরিয়ার বাহাদুরপুর, আকলপুর,হিজলগোড়া গ্রামের বাসিন্দারা জমি হারা হয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ঝান্ডা ও ব্যানার নিয়ে তার অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিলেন কারখানার সামনে। গত কয়েকদিন ধরেই তাঁরা বসছেন।

অভিযোগ, কারখানার নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে দেয়। পাল্টা গ্রামবাসীরাও ইট পাটকেল ছোড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে জামুড়িয়া থানার বিশাল বাহিনী এলাকায় পৌঁছয়। বিক্ষোভ উঠে গেলেও চাপা উত্তেজনা থাকে। এরপর পুলিশের লাঠিচার্জের বিরুদ্ধে আকলপুরে পথ অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। জামুড়িয়ার তৃণমূল বিধায়ক হরেরাম সিং আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ান। তাঁদেরকে নিয়ে বৈঠক করেন। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ঠিক হয় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে আগামী ২৬ তারিখ। ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।

এদিন দিনের শেষে কারখানার এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বোমা ফাটান। অভিযোগ করেন, “প্রতি মাসে তিন লক্ষ টাকা করে তোলা দিতে হচ্ছিল একাংশকে। সেই টাকা বন্ধ করে দেওয়ার পরেই আন্দোলনের নামে অশান্তি ছড়ানো হচ্ছে কারখানার সামনে। কাজের পরিবেশ থাকছে না। নিরাপত্তার অভাববোধ করছি। এরকম চলতে থাকলে কারখানা গুটিয়ে নিয়ে চলে যাব ভিন রাজ্যে।”

বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “শিল্প কালচারটাই শেষ হয়ে গেছে। কোনও ইন্ডাস্ট্রি এলে এখানে কাজ করতে পারছে না। এই সব কারখানাগুলিকে তৃণমূলকে তোলা দিতে হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা দিতে হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক গ্রামের মানুষকেও চাকরি দিতে হবে। গ্রামে মানুষের জমি যাচ্ছে। দূষণের শিকার হচ্ছে। তখন চাকরি দিতে হবে গ্রামের মানুষকেই।”